ক্যাপিটলে হামলাচেষ্টা : আলোচনায় -ন্যাশন অব ইসলাম

 


 

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল ভবনে হামলাচেষ্টায় সন্দেহভাজন ব্যক্তি ‘ন্যাশন অব ইসলাম’ (এনওআই) নামে একটি বিতর্কিত ধর্মীয় গোষ্ঠীর অনুসারী ছিলেন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শুক্রবারের ঘটনার পর আলোচনায় উঠে এসেছে তাদের নাম। তবে এটি কিন্তু নতুন কোনও গোষ্ঠী বা সংগঠন নয়।

উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুসারে, ১৯৩০ সালে যুক্তরাষ্ট্রে ‘ন্যাশন অব ইসলাম’ নামে একটি ধর্মীয় সংগঠন গড়ে তোলেন ওয়ালেস ফার্দ মুহাম্মদ নামে এক ব্যক্তি। শিকাগো-ভিত্তিক সংগঠনটি নিজেদের ইসলাম ধর্মের একটি শাখা দাবি করলেও মূলধারার ইসলামের সঙ্গে এর ধর্মীয় বিশ্বাসে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।

এনওআই একটি কৃষ্ণাঙ্গ জাতীয়তাবাদী সংগঠন। এটি প্রধানত আফ্রিকান আমেরিকান ও আফ্রিকান প্রবাসীদের দলে টানার চেষ্টা করে।

ন্যাশন অব ইসলাম অনুসারীদের বিশ্বাস, সৃষ্টিকর্তা একসময় কৃষ্ণাঙ্গ ব্যক্তির রূপ ধারণ করেছিলেন। তবে তিনি মারা যান এবং বেশ কয়েকজন নশ্বর উত্তরাধিকারী রেখে যান।

US-3.jpg

সংগঠনটি তার অনুসারীদের শেখায়, প্রথম ‘ঈশ্বর’ প্রাচীনতম মানুষ হিসেবে কৃষ্ণাঙ্গদের সৃষ্টি করেন, যাদের ভাষা ছিল আরবি। এদের ভেতর প্রবল ঐশ্বরিক ক্ষমতা ছিল। পরে ইয়াকুব নামে এক বিজ্ঞানী শ্বেতাঙ্গ জাতি তৈরি করেন, যাদের ভেতর ঐশ্বরিক ক্ষমতার অভাব রয়েছে। এই শ্বেতাঙ্গরা ছিল হিংস্র প্রকৃতির, তাই তারা কৃষ্ণাঙ্গদের উৎখাত করে দাসে পরিণত করে।

এনওআই নিজেদের শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদের বিরোধী মনে করে। তারা একসময় উত্তর আমেরিকায় কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য পৃথক রাজ্য গড়ারও দাবি জানিয়েছিল।

এনওআই অনুসারীদের বিশ্বাস, বর্তমান ‘ঈশ্বর’ শিগগিরই একটি স্পেসশিপে চড়ে পৃথিবীতে ফিরে আসবেন এবং শ্বেতাঙ্গদের নির্মূল করে আবারও কৃষ্ণাঙ্গযুগের অভ্যুদয় ঘটাবেন। তবে তারা পরকালে বিশ্বাস করেন না।

ওয়ালেস ফার্দ মুহাম্মদ ডেট্রয়েটে ন্যাশন অব ইসলাম প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৩৪ সালে তিনি নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার পর সংগঠনটির নেতৃত্বে আসেন এলিজা মুহাম্মদ। তিনি এনওআই’র পরিধি বাড়ান এবং প্রচার করতে থাকেন, ফার্দ মুহাম্মদ ছিলেন সর্বশেষ ঈশ্বর।

১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে ন্যাশন অব ইসলামের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে। সেসময় এটি কিংবদন্তি বক্সার মুহাম্মদ আলী এবং কৃষ্ণাঙ্গ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের বিখ্যাত নেতা ম্যালকম এক্স-এর মতো অনেক হাইপ্রোফাইল ব্যক্তিদের ওপর প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হয়।

US-3.jpg

তবে সংগঠনটিকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই এর ধ্বংসসাধনের চেষ্টা শুরু করে। ১৯৫৭ সালে এলিজা মুহাম্মদের মৃত্যুর পর তার ছেলে ওয়ারিথ দীন মুহাম্মদ ন্যাশন অব ইসলামের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। তিনি সংগঠনটিকে সুন্নি ইসলামের পথে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন এবং এর নতুন নাম দেন ‘ওয়ার্ল্ড কমিউনিটি অব ইসলাম ইন ওয়েস্ট’।

তবে এলিজা মুহাম্মদের শিক্ষার ভিত্তিতে সংগঠনটির একটি অংশ লুইস ফাররাখানের নেতৃত্বে ১৯৭৭ সালে ‘ন্যাশন অব ইসলাম’ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেন।

ভিত্তি যুক্তরাষ্ট্রে হলেও বিতর্কিত এই ধর্মমতের অনুসারীরা ছড়িয়ে পড়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ২০০৭ সালের দিকে এর অনুসারী আনুমানিক ৫০ হাজার ছিল বলে ধরা হয়। শ্বেতাঙ্গ বাদে অন্য যেকোনও বর্ণের মানুষ ন্যাশন অব ইসলামের সদস্য হতে পারেন।

সমালোচকেরা সংগঠনটিকে কৃষ্ণাঙ্গ আধিপত্যবাদী বিশ্বাসের ভিত্তিতে বর্ণবিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়ার দায়ে অভিযুক্ত করেছেন। আর মুসলিম বিশ্লেষকদের মতে, সংগঠনটি ইসলামের নাম ব্যবহার করে ইসলাম ধর্মের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এমন সব মতবাদ ছড়াচ্ছে।

সাততেতৈয়া

শরিয়ত,তরিকত,হাকিকত ও মারফত কাকে বলে? বিস্তারিত?

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-বড় পীর এর জীবনী

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

তাজবীদ

জামে মসজিদ নীতিমালা