তাজবীদ


উত্তর: প্রতিটি হরফকে তার নিজ নিজ মাখরাজ থেকে সিফাতসহ উচ্চারণ করে পড়াকে তাজবীদ বলে।
কোরআন মজীদের শব্দাবলী হচ্ছে, ইলমে তাজবীদের আলোচ্য বিষয়।
প্রশ্ন: ইলমে তাজবীদ শিক্ষা করা কি? এবং এর ফায়দা কি?

উত্তর: ইলমে তাজবীদ শিক্ষা করা ফরজে কিফায়া। কোরআন মজীদ তিলাওয়াতে ভুল-ভ্রান্তি হওয়া থেকে যুবানকে রক্ষা করা হচ্ছে, তার ফায়দা।

তাজবিদ শব্দের অর্থ বিন্যাস করা, সাজানো ।


তাজবীদ শব্দের শাব্দিক অর্থ উন্নত করণ, উৎকর্ষ সাধন। পরিভাষায় বিশুদ্ধরূপে কুরআন পাঠের নীতিমালাকে তাজবীদ বলা হয়। যথা : কোথায় কত আলিফ টান হবে, কোথা গুন্না হবে, কোথায় গুন্নাহ হবে না, র লাম কোথায় মোটা হবে কোথায় চিকন হবে ইত্যাদি বিষয়ক আলোচনা সম্বলিত নীতিমালাই হলো তাজবীদ। আরো বিস্তারিত জানার জন্য অভিজ্ঞ কোনো কারী সাহেবের দ্বারস্থ হোন।

প্রশ্ন: গুন্নাহ কাকে বলে?
উত্তর: কুরআন মজিদ সহিহ-শুদ্ধভাবে তিলাওয়াতের একটি নিয়ম হলো গুন্নাহ। নাক ব্যবহার করে উচ্চারণ করাকে গুন্নাহ বলে।
প্রশ্ন: গুন্নাহর হরফ কয়টি?
উত্তর: গুন্নাহর হরফ দুটি।
প্রশ্ন: গুন্নাহ করা কী?
উত্তর: গুন্নাহ করা ওয়াজিব।
প্রশ্ন: সূরা ফিলের আয়াতসংখ্যা কয়টি?
উত্তর: সূরা ফিলের আয়াতসংখ্যা ৫টি।
প্রশ্ন: সূরা কাফিরুন অবতীর্ণ হয় কোথায়?
উত্তর: সূরা কাফিরুন অবতীর্ণ হয় মক্কায়।
প্রশ্ন: কুরআন মজিদের ভাষা কী?
উত্তর: কুরআন মজিদের ভাষা আরবি।
প্রশ্ন: সর্বশেষ নবি ও রাসুল কে?
উত্তর: মহানবি (সা.) হলেন সর্বশেষ নবি ও রাসুল।
প্রশ্ন: কালাম অর্থ কী?
উত্তর: কালাম অর্থ বাণী।
প্রশ্ন: মাখরাজ কাকে বলে?
উত্তর: আরবি শব্দ উচ্চারণের সময় মুখের একেক জায়গা থেকে একেকটি হরফ উচ্চারিত হয়। আরবি হরফ উচ্চারণের স্থানকে মাখরাজ বলে।
প্রশ্ন: ওয়াকফে তাম কী?
উত্তর: আয়াতের শেষে যে ওয়াকফের জন্য পূর্ণ বিরতি দিতে হয়, তাকে ওয়াকফে তাম বলা হয়। এটি আয়াতের শেষে ব্যবহূত হয়।
প্রশ্ন: ওয়াকফে লাজিম কাকে বলা হয়?
উত্তর: কুরআনের আয়াতে যে ওয়াকফের জন্য আবশ্যিক বিরতি দিতে হয়, তাকে ওয়াকফে লাজিম বলা হয়। এ ক্ষেত্রে না থামলে অর্থ বিকৃতি ঘটার আশঙ্কা থাকে।
প্রশ্ন: ওয়াকফে মুতলাক কী?
উত্তর: কুরআন তিলাওয়াতের সময় যে ওয়াকফের জন্য বিরতি দেওয়া উত্তম, তাকে ওয়াকফে মুতলাক বলা হয়।
প্রশ্ন: কুরআন মজিদ কার কালাম?
উত্তর: কুরআন মজিদ আল্লাহ তায়ালার কালাম।
প্রশ্ন: সঠিক ও শুদ্ধভাবে কুরআন মজিদ তিলাওয়াত না করতে পারলে কী হয়?
উত্তর: সঠিক ও শুদ্ধভাবে কুরআন মজিদ তিলাওয়াত না করতে পারলে পাপ হয়।
প্রশ্ন: আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদ কার কাছে নাজিল করেন?
উত্তর: আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদ মহানবি (সা.)-এর কাছে নাজিল করেন।
প্রশ্ন: কোনটি আমাদের সঠিক উচ্চারণে শিখতে হবে?
উত্তর: সঠিক উচ্চারণে আমাদের কুরআন মজিদ তিলাওয়াত করা শিখতে হবে।
প্রশ্ন: কোনটি আগে কুরআন মজিদে দেওয়া ছিল না?
উত্তর: বিরামচিহ্নগুলো আগে কুরআন মজিদে দেওয়া ছিল না।
প্রশ্ন: যিনি প্রথম বিরামচিহ্নগুলো ব্যবহার করেন, তার নাম কী?
উত্তর: যিনি প্রথম বিরামচিহ্নগুলো ব্যবহার করেন, তার নাম আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মদ ইবনে তাইফুর।
প্রশ্ন: আয়াতের শেষে কোন চিহ্ন থাকে?
উত্তর: আয়াতের শেষে ওয়াকফ তাম চিহ্ন থাকে।
প্রশ্ন: ওয়াকফ মুতলাক চিহ্নিত স্থানে কী উত্তম?
উত্তর: ওয়াকফ মুতলাক চিহ্নিত স্থানে বিরতি উত্তম।
প্রশ্ন: তাজবিদ কাকে বলে?
উত্তর: কুরআন মজিদ শুদ্ধভাবে তিলাওয়াতের নিয়মকে তাজবিদ বলে। অর্থাত্ কুরআন মজিদের আয়াতসমূহ এবং আয়াতের শব্দ ও বর্ণের সঠিক উচ্চারণ করার পদ্ধতিই হলো তাজবিদ।
প্রশ্ন: ওয়াকফ বলতে কী বোঝ?
উত্তর: কুরআন মজিদ শুদ্ধ তিলাওয়াতের জন্য আয়াতের মধ্যে কয়েক প্রকারের বিরামচিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে। এ চিহ্নগুলোর দ্বারা কোথায় থামতে হবে, কোন জায়গায় কিছুটা শ্বাস নেওয়া যাবে, তা নির্দেশ করা হয়েছে। এ বিরামচিহ্নকে ওয়াকফ বলা হয়।
প্রশ্ন: মাখরাজ কয়টি?
উত্তর: আরবি হরফ উচ্চারণের স্থানকে মাখরাজ বলে। যেমনজিবের অগ্রভাগ সামনের নিচের দুই দাঁতের অগ্রভাগে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়; মাখরাজ ১৭টি।
প্রশ্ন: কণ্ঠনালির হরফ কয়টি?
উত্তর: কুরআন মজিদ আল্লাহর কালাম। আমরা সালাতসহ বিভিন্ন ইবাদতে কুরআন তিলাওয়াত করি। কুরআনের হরফগুলো উচ্চারণের বিশেষ রীতি রয়েছে। যেমন কতিপয় হরফ কণ্ঠনালি থেকে উচ্চারিত হয়। কণ্ঠনালির হরফ ছয়টি।
প্রশ্ন: কুরআন মজিদ কার বাণী?
উত্তর: কুরআন মজিদ আল্লাহ তায়ালার বাণী।
প্রশ্ন: মহান আল্লাহ কুরআন মজিদ নাজিল করেছেন কেন?
উত্তর: মহান আল্লাহ মানুষকে সুন্দর ও সঠিক পথ দেখানোর জন্য কুরআন মজিদ নাজিল করেছেন।
প্রশ্ন: তাজবিদ অর্থ কী?
উত্তর: তাজবিদ আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ বিন্যাস করা, সাজানো ও সুন্দর করা।
প্রশ্ন: কুরআন মজিদ আরবি ভাষায় নাজিল হয়েছে কেন?
উত্তর:
 মহানবি (সা.)-এর কওমের বা জাতির ভাষা ছিল আরবি। তাই কুরআন মজিদ আরবি ভাষায় নাজিল হয়েছে।
প্রশ্ন:
 মাখরাজ বলতে কী বোঝায়?
উত্তর:
 মাখরাজ শব্দের অর্থ বের হওয়ার জায়গা। আরবি ভাষায় শব্দ উচ্চারণ করার সময় আমাদের মুখের একেক জায়গা থেকে একেকটি হরফ উচ্চারিত হয়। উচ্চারিত হওয়ার এমন সব স্থানকে মাখরাজ বলে।
প্রশ্ন:
 ওয়াকফ অর্থ কী?
উত্তর:
 ওয়াকফ আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ থামা, বিরতি দেওয়া।
প্রশ্ন:
 ওয়াকফ জানতে হবে কেন?
উত্তর:
 কুরআন মজিদ তিলাওয়াতের সময় যথাস্থানে না থামলে বাক্যের অর্থের বিকৃতি ঘটে। আবার কোথাও কোথাও অর্থ একেবারে উল্টে যায়। তাই সহিহ-শুদ্ধভাবে তিলাওয়াতের জন্য ওয়াকফ জানতে হবে।
প্রশ্ন:
 ‘আমি কুরআন মজিদ নাজিল করেছি আর এর হেফাজতকারীও আমি।’উক্তিটি কে করেছেন?
উত্তর:
 উক্তিটি করেছেন মহান আল্লাহ তায়ালা।
প্রশ্ন:
 কুরআন মজিদের আয়াতের মধ্যে কয়েক প্রকারের বিরামচিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে কেন?
উত্তর: কুরআন মজিদের আয়াতের মধ্যে কয়েক প্রকারের বিরামচিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে শুদ্ধ তিলাওয়াতের জন্য।
প্রশ্ন:
 গুন্নাহর গুরুত্ব অপরিসীম কেন?
উত্তর: কুরআন মজিদ তিলাওয়াতের ক্ষেত্রে শুদ্ধ উচ্চারণের জন্য গুন্নাহর গুরুত্ব অপরিসীম।

মদ কাকে বলে ও মদের বিস্তারিত আলোচনা


প্রশ্ন:- মদ অর্থ কি ?
উত্তর:- মদ অর্থ আওয়াজ কে টানিয়া পড়া।
প্রশ্ন:- মদ এর হরফ কয়টি ও কি কি?
উত্তর:-মদ এর হরফ ৩টি। যথা:-  واي
প্রশ্ন:-মদ কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর:- মদ মোট ১০ প্রকার:- (১) মদ্দে তাবায়ী (২) মদ্দে মুত্তাসিল (৩) মদ্দে মুনফাসিল (৪) মদ্দে আরেজী (৫) মদ্দে লীন (৬) মদ্দে বদল
(৭) মদ্দে লাযিম কালমী মুসাক্কাল (৮) মদ্দে লাযিম কালমী মুখাফফাফ (৯) মদ্দে লাযিম হরফী মুসাক্কাল (১০) মদ্দে লাযিম হরফী মুখাফফাফ।
প্রশ্ন:- মদ্দে তাবায়ী কাকে বলে?
ওয়াও সাকিন ডানে পেশ, ইয়া সাকিন ডানে যের, আলিফ খালি ডানে যবর আসিলে এক আলিফ টানিয়া পড়িত হয়।
ইহাকে মদ্দে তাবায়ী বা মদ্দে আছলী বলে।
যথা:- نوحيها
প্রশ্ন:- মদ্দে মুত্তাসিল কাকে বলে?
উত্তর:- একই শব্দে মদের হরফের পর “হামযা” আসিলে চার আলিফ টানিয়া পড়িত হয়। ইহাকে মদ্দে মুত্তাসিল বলে।
যথা:- سوء- جاء
প্রশ্ন:- মদ্দে মুনফাসিল কাকে বলে?
উত্তর:- মদের হরফের পরে অন্য শব্দের প্রথমে ” হামযা” আসিলে ৩ বা ৪ আলিফ টানিয়া পড়িতে হয়। ইহাকে মদ্দে মুনফাসিল বলে।
যথা:- بما انزل-انا امنا
প্রশ্ন:- মদ্দে আরেজী কাকে বলে?
উত্তর:- মদের হরফের পরে ওয়াক্বফ করিলে এবং পরবর্তী হরফটি অস্থায়ী সাকিন হইলে ৩ আলিফ টানিয়া পড়িত হয়। ইহাকে মদ্দে আরেজী বলে।
যথা:- تعلمون حساب
প্রশ্ন:- মদ্দে লীন কাকে বলে?
ওয়াও সাকিন অথবা ইয়া সাকিন এর পূর্বে যবর হইলে এবং পরবর্তী হরফে ওয়াক্বফ করিলে ১ আলিফ টানিয়া পড়িতে হয়। ইহাকে মদ্দে লীন বলে।
যথা:- خوف -سير
প্রশ্ন:- মদ্দে বদল কাকে বলে?
মদের হরফের পূর্বে “হামযা” আসিলে ১ আলিফ টানিয়া পড়িতে হয়।ইহাকে মদ্দে বদল বলে।
যথা:- امنوا ايمانا اوتي

প্রশ্ন:- মদ্দে লাযিম কাকে বলে?

উত্তর:- মদের হরফের পর আসলী সাকিন আসিলে যে মদ হয়,  ইহাকে মদ্দে লাযিম বলে।
যথা:- الءان دابه
প্রশ্ন:- মদ্দে লাযিম কালমী মুসাক্কাল কাকে বলে?
উত্তর:- একই শব্দে মদের হরফের পরে তাশদীদ যুক্ত হরফ আসিলে ৪ আলিফ টানিয়া পড়িতে হয়। ইহাকে মদ্দে লাযিম কালমী মুসাক্কাল বলে।
যথা:- ولالضالين دابة
প্রশ্ন:- মদ্দে লাযিম কালমী মুখাফফাফ কাকে বলে?
উত্তর:- একই শব্দে মদের হরফের পর যজম যুক্ত হরফ আসিলে ৪ আলিফ টানিয়া পড়িতে হয়, ইহাকে মদ্দে লাযিম কালমী মুখাফফাফ বলে।
যথা: الءان
প্রশ্ন:- মদ্দে লাযিম হরফী মুসাক্কাল কাকে বলে?
উত্তর:- কোন শব্দ বা কালিমা ব্যতীত শুধু হরফের মধ্যে মদের হরফের পর তাশদীদ যুক্ত সাকিন আসিলে ৪ আলিফ টানিয়া পড়িত হয়।
ইহাকে মদ্দে লাযিম হরফী মুসাক্কাল বলে।
যথা:- الم طسم
প্রশ্ন:- মদ্দে লাযিম হরফী মুখাফফাফ কাকে বলে?
উত্তর:- কোন শব্দ বা কালিমা ব্যতীত শুধু হরফের মধ্যে মদের হরফের পর যজম যুক্ত সাকিন আসিলে ৪ আলিফ টানিয়া পড়িতে হয়।
ইহাকে মদ্দে লাযিম হরফী মুখাফফাফ বলে।
যথা:-  عسق ق ن

নুন সাকিন ও তানভীন পড়ার নিয়ম


প্রশ্ন:- নুন সাকিন কাকে বলে?
উত্তর:- জযমযুক্ত নুনকে সাকিন বলে।
যথা-اَنْ اِنْ -اُنْ
প্রশ্ন:- তানভীন কাকে বলে?
উত্তর দুই যবর, দুই যের,  দুই পেশকে তানভীন বলে।
যথা:-بً بٍ بٌ
প্রশ্ন:- নুন সাকিন ও তানভীন কয় নিয়মে পড়িতে হয়?
উত্তর:- চার নিয়মে পড়িতে হয়। যেমন:- (১) ইযহার (২) ইক্বলাব (৩) ইদগাম (৪) ইখফা।
প্রশ্ন:- ইযহার অর্থ কি? ইহার হরফ কয়টি ও কি কি?
উত্তর:- ইযহার অর্থ স্পষ্ট করিয়া পড়া। ইযহারের হরফ ৬টি।
যথা-: ء ه ع ح غ خ
প্রশ্ন:- ইযহার কখন করিতে হয়?
উত্তর:- নুন সাকিন বা তানভীনের পর ইযহারের ৬টি হরফ হইতে কোন একটি হরফ আসিলে, উক্ত নুন সাকিন বা তানভীনকে গুন্নাহ ছাড়া স্পষ্ট করিয়া পড়া।
যথা:- اَنْعمت عليمٌ خببر
প্রশ্ন:- ইক্বলাব অর্থ কি? ইহার হরফ কয়টি ও কি কি?
উত্তর:- ইক্বলাব অর্থ পরিবর্তন করিয়া পড়া। ইক্বলাবের হরফ একটি যথা:- ب
প্রশ্ন:- ইক্বলাব কখন করিতে হয়?
উত্তর:- নুন সাকিন বা তানভীনের পরে ب হরফ টি আসিলে উক্ত নুন সাকিন বা তানভীনকে ছোট মীম দ্বারা পরিবর্তন করে গুন্নাহ ও ইখফার সাথে পড়িতে হয়।
যথা:- من بعد سميع بصير

প্রশ্ন:- ইদগাম অর্থ কি? ইহার হরফ কয়টি ও কি কি?

উত্তর:- ইদগাম অর্থ মিলাইয়া পড়া। ইদগামের হরফ ৬টি। যথা:- ي ر م ل و ن
প্রশ্ন:- ইদগাম কখন করিতে হয়?
উত্তর:- নুন সাকিন বা তানভীনের পরে ইদগামের ৬টি হরফ হইতে কোন একটি হরফ আসিলে উক্ত নুন সাকিন বা তানভীনকে মিলাইয়া পড়িতে হয়।
যথা:- منْ يفعل منْ ربك
প্রশ্ন:- ইদগাম কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর:- ইদগাম দুই প্রকার- (১) ইদগামে বা-গুন্নাহ (২) ইদগামে বে-গুন্নাহ।
প্রশ্ন:- ইদগামে বা-গুন্নাহ অর্থ কি? ইহার হরফ কয়টি ও কি কি?
ইদগামে বা- গুন্নাহ অর্থ গুন্নার সহিত মিলাইয়া পড়া। ইদাগামে বা- গুন্নার হরফ ৪টি। যথা:- ي و م ن
প্রশ্ন:- ইদগামে বা-গুন্নাহ কখন করিতে হয়?
নুন সাকিন বা তানভীনের পরে ইদগামে বা-গুন্নার ৪টি হরফ হইতে কোন একটি হরফ আসিলে উক্ত নুন সাকিন বা তানভীনকে গুন্নার সহিত মিলাইয়া পড়িতে হয়।
যথা:- منْ يفعل قومٌ مسرفون
প্রশ্ন:- ইদগামে বে-গুন্নাহ অর্থ কি? ইহার হরফ কয়টি ও কি কি?
উত্তর:- ইদগামে বে-গুন্নাহ অর্থ গুন্নাহ ছাড়া মিলাইয়া পড়া। ইদগামে বে-গুন্নার হরফ ২টি। যথা:- ر ل
প্রশ্ন:- ইদগামে বে-গুন্নাহ কখন করিতে হয়?
উত্তর:- নুন সাকিন বা তানভীনের পরে ইদগামে বে-গুন্নার ২টি হরফ হইতে কোন একটি হরফ আসিলে উক্ত নুন সাকিন বা তানভীনকে গুন্নাহ ছাড়া মিলাইয়া পড়িতে হয়।
যথা:- رزقاًلكم منْ ربك
প্রশ্ন:- ইখফা অর্থ কি? ইহার হরফ কয়টি ও কি কি?
উত্তর:- ইখফা অর্থ নাকের বাশিতে আওয়াজকে লুকাইয়া পড়া। ইখফার হরফ ১৫ টি।
যথা:-ت ث ج د ذ ز س ش ص ض ط ظ ف ق ك
প্রশ্ন:- ইখফা কখন করিতে হয়?
উত্তর:- নুন সাকিন বা তানভীনের পরে ইখফার ১৫টি হরফ হইতে কোন একটি হরফ আসিলে,
উক্ত নুন সাকিন বা তানভীনকে গুন্নার সহিত নাকের বাশিতে লুকাইয়া পড়িতে হয়।
যথা:- لنْ تفعلو خيرً كثير

প্রশ্ন: কোরআন মজীদ তিলাওয়াতের স্তর কয়টি ও কি কি? প্রত্যেকটির সংঙাসহ
উত্তর: কোরআন মজীদ তিলাওয়াতের স্তর তিনটি।
১) তারতীল ২) হদর এবং ৩) তাদবীর।
১) তারতীল
মদ ও গুন্নাহ পরিপূর্ণভাবে আদায় করে, ধীর- স্থীরে কোরআন মজীদ পড়াকে তারতীল বলে।
২)হদর
তাজবীদের নিয়ম কানুন রক্ষা করে, একটু দ্রুত কোরআন মজীদ পড়াকে হদর বলে।
৩) তাদবীর
তারতীল এবং হদরের মাঝামাঝি ধরনের পড়াকে তাদবীর বলে।

লাহনের বর্ণনা

প্রশ্ন: লাহন কাকে বলে? উহা কত প্রকার ও কি কি?
উত্তর: তাজবীদের বিপরীত কোরআন মজীদ পড়াকে লাহন বলে।
উহা দুই প্রকার:
১) লাহনে জালী (বড় ভুল)
২) লাহনে খাফী (ছোট ভুল)
প্রশ্ন: লাহনে জালী কাকে বলে? এবং তার হুকুম কি?
উত্তর: ১) এক হরফের জায়গায় অন্য হরফ পড়া।
২) কোন হরফকে বাড়িয়ে দেয়া।
৩) কোন হরফকে কমিয়ে দেয়া।
৪) যের, যবর, পেশ এবং জযম থেকে একটিকে অপরটির জায়গায় পড়া। এ জাতীয় মারাত্মক ভুলসমূহকে লাহনে জালী বলে। লাহনে জালী পড়া হারাম।
অনেক জায়গায় লাহনে জালীর কারণে অর্থ বিকৃত হয়ে নামাজ নষ্ট হয়ে যায়।
প্রশ্ন: লাহনে খাফী কাকে বলে এবং এর হুকুম কি?
উত্তর: হরফকে সুন্দর করে উচ্চারণ করার নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুনের বিপরীত পড়াকে লাহনে খাফী বলে। এ রকম পড়া মাকরুহ; তাই এ থেকেও বেচে থাকা উচিৎ।

কোরান শরীফ তিলাওয়াত শুরু করার পদ্ধতি

প্রশ্ন: কোরআন মজীদ তিলাওয়াত শুরু করার পদ্ধতি কি?
উত্তর: কোরআন মজীদ তিলাওয়াত যদি কোনো সূরার প্রথম থেকে আরম্ভ করা হয়; তাহলে-
“আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বানির রাজীম” এবং
“বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”
উভয়টা পড়া জরুরী।  আর যদি তিলাওয়াত কোনো সূরার মধ্যখান থেকে আরম্ভ করা হয় তবে ; শুধু-
“আউযুবিল্লাহি মিনাশ শায়ত্বানির রাজীম”
পড়া জরুরী এবং “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” ও পড়ে নেয়া ভালো।
প্রশ্ন: পড়তে পড়তে যদি তিলাওয়াতের মধ্যখানে কোনো সূরা এসে যায় তবে কি করা উচিৎ?
উত্তর: তখন “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” পড়া জরুরী। কিন্তু মধ্যখানে যদি “সূরা বারাত” এসে যায় তবে তার শুরুতে “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম” না পড়াই উচিত।
প্রশ্নঃ ‘ছিফাত’ শব্দের অর্থ কি? এবং তা কাকে বলে?
উত্তরঃ ছিফাত শব্দের অর্থ গুণ বা অবস্থা। তাজবীদের ভাষায় যে অবস্থায় হরফ উচ্চারণ হয়, ঐ অবস্থাকে সিফাত বলে। মোটকথা- হরফের গুণাবলী বা উচ্চারণের অবস্থাকে ছিফাত বলে। যেমন- উচ্চারণের সময় হরফ নরম হওয়া বা শক্ত হওয়া ইত্যাদি। ছিফাত দুই প্রকার। এক. ছিফাতে লাযেমা। দুই. ছিফাতে আরেযাহ। ছিফাতের বিস্তারিত বিবরণ তাজবীদের কিতাবাদীতে পাওয়া যাবে।

প্রশ্নঃ তাজবীদ কাকে বলে এবং তাজবীদসহ কুরআন পড়ার হুকুম কি?

উত্তরঃ প্রত্যেকটা হরফ-কে সঠিক মাখরাজ থেকে পূর্ণ ছিফাত সহকারে আদায় করাকে ‘তাজবীদ’ বলে। তাজবীদ রক্ষা করে কুরআন পাঠ করা ফরয। (দেখুনঃ গুনইয়াতুল ক্বারী)

প্রশ্নঃ মাখরাজ কাকে বলে এবং তা কয়টি?

উত্তরঃ হরফ উচ্চারণের স্থানকে মাখরাজ বলে। আরবী হরফ ২৯টি, আর হরফ উচ্চারণের স্থাণ তথা মাখরাজ ১৭টি। এই মাখরাজগুলো তাজবীদ সংক্রান্ত কিতাবাদীতে স্ববিস্তরে পাওয়া যাবে।

প্রশ্নঃ ওয়াকফ অর্থ কি? ওয়াকফ কাকে বলে?

উত্তরঃ ওয়াকফ অর্থ বিলম্ব বা বিরতি করা। তাজবীদের পরিভাষায়- কুরআন শরীফের কোন আয়াত সমাপ্ত করার উদ্দেশ্যে নিঃশ্বাস ছেড়ে দিয়ে পুনরায় নিঃশ্বাস নেওয়ার জন্য সামান্য সময় বিলম্ব করাকে ওয়াকফ বলে। কুরআন শরীফ তেলাওয়াতের মাঝে এরূপ ওয়াকফ করা একান্ত জরুরী। কেননা কোন

 

প্রশ্ন:কুরআন মাজিদ পাঠের উদ্দেশ্য কয়টি ?

উত্তর: কুরআন মাজিদ পাঠের উদ্দেশ্য চারটি।
প্রশ্ন:মাখরাজ কয়টি ?
উত্তর: মাখরাজ সতেরটি
প্রশ্ন:কণ্ঠনালির হরফ কয়টি ?
উত্তর: কণ্ঠনালির হরফ ছয়টি।
প্রশ্ন:জ,যাল,ছা কোথা থেকে উচ্চারিত হয়?
উত্তর:জিহবার অগ্রভাগ সামনের ওপরের দুই দাঁতের সাথে লাগিয়ে উচ্চারিত হয়।
প্রশ্ন:ওয়াও,বা,মিম কোথা থেকে উচ্চারিত হয়?
উত্তর:দুই ঠোঁট থেকে উচ্চারিত হয়।

প্রশ্ন:কুরআন মাজিদ কার কালাম ?
উত্তর: কুরআন মাজিদ আল্লাহ তায়ালার কালাম।

প্রশ্ন:কালাম অর্থ কী ?
উত্তর: কালাম অর্থ বাণী।

প্রশ্ন: সর্বশেষ আসমানি কিতাব কোনটি ?
উত্তর: কুরআন মাজিদ ।

প্রশ্ন:কে সর্বশেষ নবি ও রসুল ?
উত্তর: মহানবি (স) ।

প্রশ্ন:কুরআন মাজিদের হেফাজতকারী কে ?
উত্তর: কুরআন মাজিদের হেফাজতকারী আল্লাহ।

প্রশ্ন:করআন মাজিদ তেলাওয়াতের উদ্দেশ্য কয়টি ?
উত্তর: করআন মাজিদ তেলাওয়াতের উদ্দেশ্য চারটি।

প্রশ্ন:কুরআন মাজিদের ভাষা কী ?
উত্তর: কুরআন মাজিদের ভাষা আরবি।

প্রশ্ন:মাখরাজ,ইদগাম,গুন্নাহ ইত্যাদি আলোচনা করা হয় কোথায়?
উত্তর: মাখরাজ,ইদগাম,গুন্নাহ ইত্যাদি আলোচনা করা হয় তাজবিদে।

প্রশ্ন:আরবি হরফ উচ্চারণের স্থানকে কী বলে ?
উত্তর: আরবি হরফ উচ্চারণের স্থানকে মাখরাজ বলে।

প্রশ্ন: আরবি বর্ণ কয়টি ?
উত্তর: আরবি বর্ণ ২৯টি।

প্রশ্ন:আরবিতে মাখরাজ কয়টি ?
উত্তর: আরবিতে মাখরাজ ১৭টি।

প্রশ্ন:বিরাম চিহ্নকে আরবিতে কী বলে ?
উত্তর: বিরাম চিহ্নকে আরবিতে ওয়াক্ফ বলে।

প্রশ্ন:কুরআন মাজিদে সর্বপ্রথম ওয়াক্ফ কে ব্যবহার করেন ?
উত্তর: আবু আব্দুল্লাহ মুহম্মদ ইবনে তাইফুর।

প্রশ্ন: কী ব্যবহার করে গুন্নাহ উচ্চারণ করা হয়?
উত্তর: নাক।

প্রশ্ন:গুন্নাহর হরফ কয়টি?
উত্তর: গুন্নাহর হরফ ২টি।

প্রশ্ন: সুরা কুরাইশ কোথায় অবতীর্ণ হয় ?
উত্তর: সুরা কুরাইশ মক্কায় অবতীর্ণ হয়।

প্রশ্ন:সুরা কুরাইশের আয়াত সংখ্যা  কতটি ?
উত্তর: সুরা কুরাইশের আয়াত সংখ্যা ৪ টি।

প্রশ্ন: আল্লাহ পাক কুরআন মাজিদে কী ঘোষণা করেছেন ?
উত্তর: মানুষের ভালো হওয়ার ও কল্যাণ লাভের সব কথা,সব নিয়ম-নীতি।

প্রশ্ন:মহানবি (স) এর সাথীরা পৃথিবীর নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হয়েছিলেন কেন?
উত্তর:কুরআনে যে নির্দেশ রয়েছে তা  পুরোপুরি মেনে চলতেন আর যা করতে নিষেধ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণভাবে পরিহার করতেন।

সাততেতৈয়া

শরিয়ত,তরিকত,হাকিকত ও মারফত কাকে বলে? বিস্তারিত?

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-বড় পীর এর জীবনী

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

জামে মসজিদ নীতিমালা