শরিয়ত,তরিকত,হাকিকত ও মারফত কাকে বলে? বিস্তারিত?

তাসাউফের বা তরীকতের পরিচয়- শরীয়ত, তরীকত, মারিফত, হাকিকত

তাসাউফের বা তরীকতের পরিচয়
শরীয়ত, তরীকত, মারিফত, হাকিকত

সুফীগণ পূর্নাঙ্গ ইসলামের ৪টি স্তরের কথা উল্লেখ করেছেন । যেমন : ১. শরীয়ত। ২. তরীকত। ৩. হাকিকত। ৪. মা’রিফত।

শরীয়তের পরিচয় : ইসলামী জীবন ব্যবস্থার যাবতীয় বিধানকে শরীয়ত বলা হয়। সর্বপ্রথম শরীয়তের পূর্ণ অনুসারী হতে হয়। শরীয়তের যাবতীয় বিধানের মধ্য দিয়ে সুফী তার প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রিত করে প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে আত্মার অনুগত করেন। শরীয়তের পূর্ণ অনুসরণ ব্যতীত কেউ সুফী হতে পারবে না।
জীবনের সকল দিককে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটি বাহ্যিক এবং অন্যটি অভ্যন্তরীন বা আধ্যাত্মিক। ইহলৌকিক জীবনের অভাব অভিযোগ প্রয়োজন ও গুরুত্ব এবং ঈমান, নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত এর বাহ্যিক ক্রিয়া পদ্ধতির রূপ শরীয়তের অন্তর্গত। শরা ,শব্দ হতে শরীয়ত শব্দটির উৎপত্তি। শরা’ অর্থ বিধি, ব্যবস্থা, পথ বিধান ইত্যাদি। জীবনের ব্যক্তিক ও সামাজিক দিকের বাহ্যিক রূপের যে বিধি বা নিয়ম, তাই শরীয়ত। এক কথায় 'কুরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াসের' উপর ভিত্তি করে যে জীবন ব্যবস্থা গড়ে উঠে তাকেই শরীয়ত বলা যায়।

তরীকতের পরিচয় : মন্দ স্বভাব কয়েকটি বিষয়- ১) জিহ্বার আপদ (মিথ্যা, গীবত, ইত্যাদি), ২) অপব্যায়, ৩) কৃপণতা, ৪) বিদ্বেষ, ৫) অহংকার, ৬) প্রতিপত্তি প্রীতি, ৭) দুনিয়ার মহব্বত, ৮) লোভ, ৯) হিংসা, ১০) রিয়া বা লোক দেখানো কাজ করা, ১১) খাহেশে নফসানী বা প্রবৃত্তির চাহিদ চরিতার্থ করা বা জৈবিক চাহিদার পূরণে লালায়িত হওয়া, ১২) আত্মগর্ব, ১৩) ক্রোধ ইত্যাদি এই মন্দ স্বভাব বা খারাপ চরিত্রগুলো দূর করা তরীকতপন্থী ছালেকের কর্তব্য। 
আর প্রশংসনীয় চরিত্র- ১) ইরাদা ও নিয়ত, ২) ইখলাছ (একনিষ্ঠতা), ৩) উন্স (মহব্বত), ৪) তাবলীগ (ধর্মপ্রচার), ৫) ফিকির (আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে গভীর চিন্তা), ৬) তাফবীয (আল্লাহর উপর নিজের যাবতীয় বিষয়কে সোপর্দ করা), ৭) তাক্বওয়া (পরহেযগারী), ৮) তাওয়াযু (বিনয়), ৯) তাওবা, ১০) তাওহীদ (একত্ববাদ), ১১) তাওয়াক্কুল (আল্লাহর উপর ভরসা), ১২) খুশু (স্থিরতা), ১৩) ভয়, ১৪) দুআ, ১৫) আশা, ১৬) রিযা (সন্তুষ্টি), ১৭) যুহুদ (দনিয়ার প্রতি অনীহা), ১৮) শুকর, ১৯) শওক (আখিরাতের প্রতি আগ্রহ), ২০) ছবর (ধৈর্য), ২১) সততা, ২২) মহব্বত ইত্যাদি। 
দিল বা অন্তর থেকে দূরাশা, লোভ, কৃপনতা, হারাম, পরনিন্দা, মিথ্যা, হিংসা, অহংকার, ভন্ডামী, আক্রোশ, আত্মগরীমাসহ (উপরে উল্লেখিত ১৩টি) যাবতীয় মন্দ স্বভাব বা খারাপ চরিত্র সমূহ দুর করা এবং তওবা, ইনাবাত, যুহদ, শোকর, তাওয়াক্কুল, তসলীম, রেজা, সবর, কানাআতসহ (উল্লেখিত ২২টি) সৎগুনাবলী সমূহ অন্তরে অর্জন করার পদ্ধতিকে তরীকত বলে।
সুফীদের পরিভাষায় তরীকত হচ্ছে- "শরীয়তের যাবতীয় বিধান অনুশীলনের পর তাকে আধ্যাত্মিক গুরু বা সত্যিকার হক্কানী-রাব্বানী পীর ছাহেবের শরনাপন্ন হতে হবে। বিনা প্রশ্নে নিজ পীরের আনুগত্য করতে হবে।
খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীতে আধ্যাত্মিক সাধনার পদ্ধতি নিয়ে সুফীদের মাঝে মতানৈক্য দেখা দেয়। যার কারণে তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তবে প্রত্যেক দলই হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে প্রথম ও শ্রেষ্ঠ বলে অভিহিত করে এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের উৎস বলে স্বীকার করে।
সুফীবাদের তরীকাসমূহ : ১. কাদেরীয়া তরীকা; ২. নকশবন্দীয়া তরীকা; ৩. চিশতিয়া তরীকা; ৪. মুজাদ্দেদীয়া তরীকা; ৫. সোহরাওয়ার্দী তরীকা; ৬. মৌলবীয়া তরীকা; ৭. সান্তারীয়া তরীকা।

হাকিকতের পরিচয় : তরিকতের আমল সমূহ যথাযথভাবে পালন করার দ্বারা অন্তরে যে নূর সৃষ্টি হয় তাকে হকিকত বলে। আন্তরিকভাবে খোদার প্রেমের স্বাদ ও পরমাত্মার সাথে তার যোগাযোগ হয়। এটা হচ্ছে সুফী সাধনার চুড়ান্ত স্তর। এ স্তরে উন্নীত হলে সুফী ধ্যানের মাধ্যমে নিজস্ব অস্তিত্ব খোদার নিকট বিলীন করে দেন।

মারিফতের পরিচয় : অন্তরের নূরের দ্বারা আল্লাহ পাকের সঙ্গে গড়ে উঠা সম্পর্ককে মা‘রিফত বলে। এ পর্যায়ে উত্তীর্ণ ব্যক্তিকে আ‘রিফ বা সুফী বলে। যাঁরা মাটির তৈরী মানুষ হয়েও মর্যাদায় আগুণের তৈরী জ্বীন এবং নুরের তৈরী ফেরশতেদার উর্দ্ধে উঠতে সক্ষম হন।
সুফীদের পরিভাষায় মা’রিফত হচ্ছে- 'এমন এক স্তর যার মধ্যে বান্দাহ উপনীত হলে সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে অবগতি অর্জন করতে পারে। এ স্তরে পৌঁছতে পারলে তার অন্তর আলোক উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। তখন তিনি বস্তুর নিকট তত্ত্ব উপলব্ধি করতে শুরু করেন। মানব জীবন ও সৃষ্টি জীবনের গুপ্ত রহস্য তার নিকট স্পষ্ট হয়ে ভেসে ওঠে।'

শরিয়ত, তরিকত, হাকিকত, মারেফত বা তাসাউফ একটি অন্যটির পরিপূরক এবং সম্পর্ক যুক্ত। রূহানীয়তের ধর্ম যখন প্রাণহীন ও সাধারণ প্রতষ্ঠিানে পরণিত হয়, সমাজ ধর্মের বন্ধন যখন শিথিল হয়ে পড়ে এবং জড়বাদী ধর্মের প্রভাব যখন বিস্তার লাভ করতে থাকে তখন ধর্মকে পূণ্যময় করার জন্য তাসাউফ বা আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তাসাউফ মানবকে অর্থ, যশ প্রভৃতির প্রভাব বা মোহ থেকে মুক্ত করে মানুষের মনে খোদা ও রাসূলের প্রেম জাগিয়ে তোলে এবং মানুষকে খোদার পথে আকৃষ্ট করে। প্রকৃত পক্ষে যাদের হৃদয়ে তাসাউফ তথা আল্লাহ ও রাসূলের প্রেম স্থান পায় তারাই কোরান হাদীসের নির্দেশিত ধর্মীয় অনুশাসনসমূহ যথাযথভাবে পালন করতে সক্ষম হয়। শরীয়তের আদেশ নিষেধ সমূহ পালন করতে হলে  মানুষের হৃদয় নফছ ও শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত হতে হবে এবং খোদার সাথে হৃদয়ের সংযোগ স্থাপন করতে হবে। ইমাম গাজ্জালী (রঃ) বলেন : “যার আধ্যাত্মিক জ্ঞান নেই সে মানুষ বলে গণ্য হয় না” আল্লাহু আকবর। কোরআন হাদিস অনুযায়ী ইসলামের বিধি বিধান কে শরিয়ত বলা হয়। আর এই বিধি বিধানের যে  নিয়ম পদ্ধতি আছে তাকে তরিকত বলে। আর শরিয়ত অনুযায়ী আমরা যা করি এগুলো সবই বাস্তবসম্মত এবং খোদাপ্রদত্ত আর এই বাস্তবতাকে বিশ্বাস করাই হাকিকত। উপরোল্লিখিত সবগুলো মেনে চলার মাধ্যমে আল্লাহর পরিচয় লাভ করাকে মারেফাত বলে। প্রকৃতপক্ষে সবগুলোই কাছাকাছি অর্থবোধক শব্দ। একটি ছাড়া আরেকটি দুর্বল।

তাসাউফের বা তরীকতের পরিচয়- শরীয়ত, তরীকত, মারিফত, হাকিকত

তাসাউফের বা তরীকতের পরিচয়
শরীয়ত, তরীকত, মারিফত, হাকিকত

সুফীগণ পূর্নাঙ্গ ইসলামের ৪টি স্তরের কথা উল্লেখ করেছেন । যেমন : ১. শরীয়ত। ২. তরীকত। ৩. হাকিকত। ৪. মা’রিফত।

শরীয়তের পরিচয় : ইসলামী জীবন ব্যবস্থার যাবতীয় বিধানকে শরীয়ত বলা হয়। সর্বপ্রথম শরীয়তের পূর্ণ অনুসারী হতে হয়। শরীয়তের যাবতীয় বিধানের মধ্য দিয়ে সুফী তার প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রিত করে প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গকে আত্মার অনুগত করেন। শরীয়তের পূর্ণ অনুসরণ ব্যতীত কেউ সুফী হতে পারবে না।
জীবনের সকল দিককে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা যায়। একটি বাহ্যিক এবং অন্যটি অভ্যন্তরীন বা আধ্যাত্মিক। ইহলৌকিক জীবনের অভাব অভিযোগ প্রয়োজন ও গুরুত্ব এবং ঈমান, নামাজ, রোজা, হজ্জ ও যাকাত এর বাহ্যিক ক্রিয়া পদ্ধতির রূপ শরীয়তের অন্তর্গত। শরা ,শব্দ হতে শরীয়ত শব্দটির উৎপত্তি। শরা’ অর্থ বিধি, ব্যবস্থা, পথ বিধান ইত্যাদি। জীবনের ব্যক্তিক ও সামাজিক দিকের বাহ্যিক রূপের যে বিধি বা নিয়ম, তাই শরীয়ত। এক কথায় 'কুরআন, হাদীস, ইজমা ও কিয়াসের' উপর ভিত্তি করে যে জীবন ব্যবস্থা গড়ে উঠে তাকেই শরীয়ত বলা যায়।

তরীকতের পরিচয় : মন্দ স্বভাব কয়েকটি বিষয়- ১) জিহ্বার আপদ (মিথ্যা, গীবত, ইত্যাদি), ২) অপব্যায়, ৩) কৃপণতা, ৪) বিদ্বেষ, ৫) অহংকার, ৬) প্রতিপত্তি প্রীতি, ৭) দুনিয়ার মহব্বত, ৮) লোভ, ৯) হিংসা, ১০) রিয়া বা লোক দেখানো কাজ করা, ১১) খাহেশে নফসানী বা প্রবৃত্তির চাহিদ চরিতার্থ করা বা জৈবিক চাহিদার পূরণে লালায়িত হওয়া, ১২) আত্মগর্ব, ১৩) ক্রোধ ইত্যাদি এই মন্দ স্বভাব বা খারাপ চরিত্রগুলো দূর করা তরীকতপন্থী ছালেকের কর্তব্য। 
আর প্রশংসনীয় চরিত্র- ১) ইরাদা ও নিয়ত, ২) ইখলাছ (একনিষ্ঠতা), ৩) উন্স (মহব্বত), ৪) তাবলীগ (ধর্মপ্রচার), ৫) ফিকির (আল্লাহর সৃষ্টি সম্পর্কে গভীর চিন্তা), ৬) তাফবীয (আল্লাহর উপর নিজের যাবতীয় বিষয়কে সোপর্দ করা), ৭) তাক্বওয়া (পরহেযগারী), ৮) তাওয়াযু (বিনয়), ৯) তাওবা, ১০) তাওহীদ (একত্ববাদ), ১১) তাওয়াক্কুল (আল্লাহর উপর ভরসা), ১২) খুশু (স্থিরতা), ১৩) ভয়, ১৪) দুআ, ১৫) আশা, ১৬) রিযা (সন্তুষ্টি), ১৭) যুহুদ (দনিয়ার প্রতি অনীহা), ১৮) শুকর, ১৯) শওক (আখিরাতের প্রতি আগ্রহ), ২০) ছবর (ধৈর্য), ২১) সততা, ২২) মহব্বত ইত্যাদি। 
দিল বা অন্তর থেকে দূরাশা, লোভ, কৃপনতা, হারাম, পরনিন্দা, মিথ্যা, হিংসা, অহংকার, ভন্ডামী, আক্রোশ, আত্মগরীমাসহ (উপরে উল্লেখিত ১৩টি) যাবতীয় মন্দ স্বভাব বা খারাপ চরিত্র সমূহ দুর করা এবং তওবা, ইনাবাত, যুহদ, শোকর, তাওয়াক্কুল, তসলীম, রেজা, সবর, কানাআতসহ (উল্লেখিত ২২টি) সৎগুনাবলী সমূহ অন্তরে অর্জন করার পদ্ধতিকে তরীকত বলে।
সুফীদের পরিভাষায় তরীকত হচ্ছে- "শরীয়তের যাবতীয় বিধান অনুশীলনের পর তাকে আধ্যাত্মিক গুরু বা সত্যিকার হক্কানী-রাব্বানী পীর ছাহেবের শরনাপন্ন হতে হবে। বিনা প্রশ্নে নিজ পীরের আনুগত্য করতে হবে।
খৃষ্টীয় দশম শতাব্দীতে আধ্যাত্মিক সাধনার পদ্ধতি নিয়ে সুফীদের মাঝে মতানৈক্য দেখা দেয়। যার কারণে তারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে। তবে প্রত্যেক দলই হযরত মুহাম্মদ (সা.) কে প্রথম ও শ্রেষ্ঠ বলে অভিহিত করে এবং আধ্যাত্মিক জ্ঞানের উৎস বলে স্বীকার করে।
সুফীবাদের তরীকাসমূহ : ১. কাদেরীয়া তরীকা; ২. নকশবন্দীয়া তরীকা; ৩. চিশতিয়া তরীকা; ৪. মুজাদ্দেদীয়া তরীকা; ৫. সোহরাওয়ার্দী তরীকা; ৬. মৌলবীয়া তরীকা; ৭. সান্তারীয়া তরীকা।

হাকিকতের পরিচয় : তরিকতের আমল সমূহ যথাযথভাবে পালন করার দ্বারা অন্তরে যে নূর সৃষ্টি হয় তাকে হকিকত বলে। আন্তরিকভাবে খোদার প্রেমের স্বাদ ও পরমাত্মার সাথে তার যোগাযোগ হয়। এটা হচ্ছে সুফী সাধনার চুড়ান্ত স্তর। এ স্তরে উন্নীত হলে সুফী ধ্যানের মাধ্যমে নিজস্ব অস্তিত্ব খোদার নিকট বিলীন করে দেন।

মারিফতের পরিচয় : অন্তরের নূরের দ্বারা আল্লাহ পাকের সঙ্গে গড়ে উঠা সম্পর্ককে মা‘রিফত বলে। এ পর্যায়ে উত্তীর্ণ ব্যক্তিকে আ‘রিফ বা সুফী বলে। যাঁরা মাটির তৈরী মানুষ হয়েও মর্যাদায় আগুণের তৈরী জ্বীন এবং নুরের তৈরী ফেরশতেদার উর্দ্ধে উঠতে সক্ষম হন।
সুফীদের পরিভাষায় মা’রিফত হচ্ছে- 'এমন এক স্তর যার মধ্যে বান্দাহ উপনীত হলে সৃষ্টি রহস্য সম্পর্কে অবগতি অর্জন করতে পারে। এ স্তরে পৌঁছতে পারলে তার অন্তর আলোক উদ্ভাসিত হয়ে ওঠে। তখন তিনি বস্তুর নিকট তত্ত্ব উপলব্ধি করতে শুরু করেন। মানব জীবন ও সৃষ্টি জীবনের গুপ্ত রহস্য তার নিকট স্পষ্ট হয়ে ভেসে ওঠে।'

শরিয়ত, তরিকত, হাকিকত, মারেফত বা তাসাউফ একটি অন্যটির পরিপূরক এবং সম্পর্ক যুক্ত। রূহানীয়তের ধর্ম যখন প্রাণহীন ও সাধারণ প্রতষ্ঠিানে পরণিত হয়, সমাজ ধর্মের বন্ধন যখন শিথিল হয়ে পড়ে এবং জড়বাদী ধর্মের প্রভাব যখন বিস্তার লাভ করতে থাকে তখন ধর্মকে পূণ্যময় করার জন্য তাসাউফ বা আধ্যাত্মিক জ্ঞানের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। তাসাউফ মানবকে অর্থ, যশ প্রভৃতির প্রভাব বা মোহ থেকে মুক্ত করে মানুষের মনে খোদা ও রাসূলের প্রেম জাগিয়ে তোলে এবং মানুষকে খোদার পথে আকৃষ্ট করে। প্রকৃত পক্ষে যাদের হৃদয়ে তাসাউফ তথা আল্লাহ ও রাসূলের প্রেম স্থান পায় তারাই কোরান হাদীসের নির্দেশিত ধর্মীয় অনুশাসনসমূহ যথাযথভাবে পালন করতে সক্ষম হয়। শরীয়তের আদেশ নিষেধ সমূহ পালন করতে হলে  মানুষের হৃদয় নফছ ও শয়তানের প্রভাব থেকে মুক্ত হতে হবে এবং খোদার সাথে হৃদয়ের সংযোগ স্থাপন করতে হবে। ইমাম গাজ্জালী (রঃ) বলেন : “যার আধ্যাত্মিক জ্ঞান নেই সে মানুষ বলে গণ্য হয় না” আল্লাহু আকবর।  

আমি ইসলামে শরিয়ত মারফত হাকিকত তরিকত নিয়ে জানতে চাই যে এগুলো সম্পর্কে ইসলাম এর কি হুকুম?


ইসলাম এ আল্লাহ বলেছেন আমাকে পাওয়ার জন্য উছিলা অনুসন্ধান করো!
তো কেউ কেউ বলে নামাজ ২ রাকাত,আবার কেউ শুধু জিকির,আবার কেউ পীর এর ভক্ত!কেউ গানের মাধ্যমে আল্লাহকে পাবার চেস্টা করে!যেমন খাজা মইনুদ্দীন চীশতি!তার গান এতটাই গ্রহন যোগ্য ছিলো যে বড়পীর আব্দুল কাদির জিলানী তার অনুসারীদের গান বৈধ করেছেন!
এবং এটা নিয়ে "আকাশটা কাপছিলো ক্যান" নামক মারফতি গান আছে!
আমার প্রশ্ন হলো কেউ নামাজ,রোযা না করে যদি চিশতীয়া,বা বড়পীরের তরিকা অনুসরন করে তবে কি আখিরাতে জান্নাত পাবার আশা আছে?নামাজ রোজা ছাড়া জান্নাত পাওয়ার আশা করা বোকামি।কোন বড় পীর যদি আপনাকে সহিহ ও হক কাজ করার কথা বলেন তাহলে আপনি তাকে অনুসরণ করতে পারবেন।এমন না যে কোন বড় পীর ধরতেই হবে বা না ধরলে অনেক সমস্যা হবে।কুরআন বুঝে পড়ার চেষ্টা করবেন।কুরআন অর্থসহ পড়ার জন্য 'তাফহিমুল কুরআন' পড়লে কোনটা হক বা সঠিক নিজেই বুঝতে পারবেন।আমাদের বর্তমান পীরেরা অনেকেই নিজেরাই ফেতনা সৃষ্টি করেছেন কাউকে ওহাবি,কাউকে সুন্নী বা অন্য মতবাদ দিয়ে থাকেন।তাই আমি পীর ধরার পক্ষে নয়।কারণ রাসূল (সা:) বলেছেন:'আল ফেতনাতু আশাদ্দু মিনাজ জ্বীনা'।অর্থাৎ, ফেতনা সৃষ্টি করা জ্বীনা করার চেয়েও বেশি গুণাহ।
তাই প্রথমিকভাবে কুরআন বুঝে পড়বন।শরীয়তের প্রাথমিক বিষয় বুঝতে 'বেহেশতী জেওর' বইটি পড়বেন।তারপর হাকিকত,মারফত ও তরিকত বুঝবেন ধাপে ধাপে।মা'রিফাত আরবী শব্দ। এর অর্থ পরিচয়, চেনা, জানা। ইলমুল মারেফাত মানে আল্লাহকে চেন ও জানার জ্ঞান। যে জ্ঞানের মাধ্যমে আল্লাহকে ভালো করে চেনা যায় সেটাই ইলমুল মারেফাত। তবে বর্তমানে প্রচলিত শরীয়ত মারেফত নামের আপত্তিকর ও অবিধানিক বিভাজন বিধিত নয়। এক শ্রেণীর মানুষ শরীয়তী নামাজ মারেফতী নামাজ বলে শিরকী বিভাজন সৃষ্টি করে। মারেফাত বলে তারা আধ্যাত্মবাদ ও শরীয়ত বলে বাহ্যবাদ বুঝাতে চায়। এ দুটিকে আলাদা করে দেখতে চায়। বাস্তবতা হলো এ দুটি শুধু নামগত পার্থক্য। মৌলিকভাবে এ দুটির মাঝে বিভাজন সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। নামাজের বাহ্যিক দিক না হলে ভিতরগত দিক অস্তিত্ব লাভ করার কোনো সুযোগ নেই। এক শ্রেণীর মানুষ মারেফতী নামাজ পড়ে। অর্থাত তারা মনে মনে নামাজ পড়ে। রুকু সেজদার শরীয়তী নামায তারা পড়ে না। এ ধরনের বিশ্বাস ঈমান বিধ্বংসী বিশ্বাস। শরীয়ত মারেফতের এ ধরনের বিভাজন থেকে বেঁচে থাকা আবশ্যক।শরিয়ত, মরিফত, তরিকত, হকিকত। এগুলো হলো মহান আল্লাহ তা'লা কে পাওয়ার রাস্তা বা আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীন। যুগে যুগে অনেক নবী রাসুল এসেছেন এই পৃথিবীতে। তারা যখন এসেছিলেন তখন নামাজ রোজা হজ্জ্ব ইত্যাদি শরিয়তের কোন নিয়মই ছিল না। তাই তখনকার নবীদের মহান আল্লাহ তা'লা নানা রকম সহীফা দান করেছিলেন। এই সকল সহীফাগুলোতে আল্লাহকে পাওয়ার জন্য তার ইবাদত হিসেবে এই বিধান, দ্বীন বা ইবাদতের অনুমোদন আল্লাহ তা'লা দিয়েছিলেন কিন্তু এখন তা আর তা চলবে না আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) আসার পর তিনি আল্লাহ সোবাহানাল্লাহ তা'লার কাছে থেকে নতুন বিধান নিয়ে আসেন যার না শরিয়ত। আর এটাই আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনিত দ্বীন বা বিধান।শরিয়ত, মরিফত, তরিকত, হকিকত। এগুলো হলো মহান আল্লাহ তা'লা কে পাওয়ার রাস্তা বা আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীন। যুগে যুগে অনেক নবী রাসুল এসেছেন এই পৃথিবীতে। তারা যখন এসেছিলেন তখন নামাজ রোজা হজ্জ্ব ইত্যাদি শরিয়তের কোন নিয়মই ছিল না। তাই তখনকার নবীদের মহান আল্লাহ তা'লা নানা রকম সহীফা দান করেছিলেন। এই সকল সহীফাগুলোতে আল্লাহকে পাওয়ার জন্য তার ইবাদত হিসেবে এই বিধান, দ্বীন বা ইবাদতের অনুমোদন আল্লাহ তা'লা দিয়েছিলেন কিন্তু এখন তা আর তা চলবে না আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (স:) আসার পর তিনি আল্লাহ সোবাহানাল্লাহ তা'লার কাছে থেকে নতুন বিধান নিয়ে আসেন যার না শরিয়ত। আর এটাই আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনিত দ্বীন বা বিধান।

সাততেতৈয়া

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-বড় পীর এর জীবনী

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

তাজবীদ

জামে মসজিদ নীতিমালা