বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম


বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম (আরবী: بِسْمِ الّٰلهِ الرَّحْمٰنِ الرَحِيْمِ) একটি আরবী বাক্যবন্ধ যার অর্থ পরম করুণাময় অসীম দয়ালু আল্লাহর নামে।, সংক্ষেপে বলা হয় বিসমিল্লাহ্‌। পবিত্র কুরআন শরীফের ১১৪টি সূরার মধ্যে সূরা তওবা ব্যতিরেকে অন্য বাকি ১১৩টি সূরা শুরু করা হয়েছে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম" দিয়ে। এছাড়া হাদীস থেকে জানা যায়, ইসলামের নবী মুহাম্মাদ প্রতিটি কাজ শুরু করার আগে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম" বলতেন।  অনেক কাজে "বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম" বলা বা লেখার নির্দেশনা রয়েছে। বিধানগত বিচারে এটা মাসনূন বা মুস্তাহাব হলেও এর তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর।বিসমিল্লাহ লেখার ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি

বিসমিল্লাহ লেখার ক্ষেত্রে সতর্কতা জরুরি
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কোরআনে কারিমের একটি গুরুত্বপূর্ণ আয়াত। যার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা অপরিহার্য।
হাদিসে বলা হয়েছে, কোনো গুরুত্বপূর্ণ ও মহৎ কাজ বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম ব্যতীত অপূর্ণ ও বরকতশূণ্য।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম কোরআনে কারিমের একটি স্বতন্ত্র আয়াত। তাই এর মর্যাদা ও সম্মানের প্রতি খেয়াল রাখা জরুরি। এর হুকুম কোরআনের অন্যান্য আয়াতের মতোই। তাই অজু ছাড়া তা স্পর্শ করা যাবে না। বিসমিল্লাহ লিখিত কাগজ কোনো অসম্মানের স্থানে ব্যবহার করাও জায়েজ নেই। 
সুতরাং কোনো ধরনের দাওয়াতনামা, বিভিন্ন পোস্টার ও ব্যানার- যা নির্ধারিত সময়ের পর কোনো প্রয়োজন না থাকার দরুণ পথে-ঘাটে ও নর্দমায় পড়ে থাকার আশঙ্কা থাকে এমনকি অনেক সময় পদপিষ্ট হয়। এসব ক্ষেত্রে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম লেখা থেকে বিরত থাকা উচিত। চাই তা আরবিতে লেখা হোক বা বাংলা উচ্চারণে। 
এক বর্ণনায় এসেছে, হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) দেয়ালে বিসমিল্লাহ লেখার কারণে স্বীয় পুত্রকে প্রহার করেছেন। অনুরূপ আরেকটি বর্ণনা বিশিষ্ট তাবেয়ি হজরত ইবরাহিম নাখয়ি (রহ.) সম্পর্কেও উদ্ধৃত হয়েছে। -মুসান্নাফ ইবনে আবি শাইবা: ৪৬২৩, ৪৬২২
চিঠিপত্র ও গুরুত্বপূর্ণ লিখনির শুরুতে পুরো বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম লেখা সুন্নত। আল্লাহর রাসূলের আমল দ্বারা এটি প্রমাণিত। কোরআনে কারিমে হজরত সোলায়মান (আ.)-এর চিঠির আলোচনা এসেছে, যাতে বিসমিল্লাহি দ্বারা শুরু করার কথা উল্লেখ রয়েছে। -সূরা নামল: ৩০
সহিহ হাদিসে এসেছে, হজরত মিসওয়ার ইবনে মাখরামা (রা.) ও হজরত মারওয়ান ইবনে হাকাম (রা.) থেকে বর্ণিত, হুদায়বিয়ার সন্ধির সময় হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সন্ধিপত্রের শুরুতে মুশরিকদের মুখপাত্র সুহাইল ইবনে আমর আপত্তি করে বলল, বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম কি? আমরা তা জানি না। আরবের প্রথা অনুযায়ী বিসমিকাল্লাহুম্মা লেখ। তদুত্তরে সাহাবায়ে কেরাম বললেন, আল্লাহর শপথ! আমরা বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম ছাড়া সন্ধিপত্র লিখব না। -সহিহ মুসলিম: ১৭৮৩
সুতরাং চিঠিপত্র, গুরুত্বপূর্ণ লিখনির শুরুতে বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম লেখা সুন্নত। এর পরিবর্তে অন্য কোনো শব্দ যেমন ৭৮৬ লিখলে ওই সুন্নত আদায় হবে না এবং বিসমিল্লাহ এর সওয়াবও পাওয়া যাবে না। আর বিসমিহিতায়ালা লিখলে আল্লাহর নামে শুরু করার ফজিলত তো পাওয়া যাবে, কিন্তু বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম লেখার সুন্নত আদায় হবে না। 
প্রকাশ থাকে যে, লিফলেট, পোস্টার, প্রচারপত্র বা এ ধরনের কাগজের টুকরো, যেগুলো সাধারণত সংরক্ষণ করা হয় না- সেসব কাগজে বিসমিল্লাহ লিখবে না; বরং তা আরম্ভ করার সময় শুধু মুখে বিসমিল্লাহ পাঠ করে নিলে চলবে। -শরহু মুসলিম, নববী- ২/৯৮

তাৎপর্য

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম একটি নাশপাতি আকৃতির শৈল্পিক গঠন
তাফসির-ই-ইবনে আবি হাতিমে রয়েছে, ‘উসমান বিন আফফান রা: রাসূলুল্লাহ (সা:) কে ‘বিসমিল্লাহ’ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন। তখন তিনি উত্তরে বলেছিলেন, এতে আল্লাহ তায়ালার নাম। আল্লাহর বড় নাম এবং এই বিসমিল্লাহর মধ্যে এতদূর নৈকট্য রয়েছে যেমন রয়েছে চুর কালো অংশ ও সাদা অংশের মধ্যে। ইবনে মরদুওয়াইর তাফসিরে রয়েছে, ‘রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, আমার ওপর এমন একটি আয়াত অবতীর্ণ হয়েছে যার মতো আয়াত হজরত সুলাইমান ছাড়া অন্য কোনো নবীর ওপর অবতীর্ণ হয়নি। আয়াতটি হলো, ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’। হজরত জাবির রা: বর্ণনা করেন, যখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয় তখন পূর্ব দিকে বৃষ্টি বন্ধ হয়ে যায়, বায়ুমণ্ডলী স্তব্ধ হয়ে যায়, তরঙ্গ বিুব্ধ সমুদ্র প্রশান্ত হয়ে ওঠে, জন্তুগুলো কান লাগিয়ে শয়তানকে বিতাড়ন করে এবং বিশ্বপ্রভু স্বীয় সম্মান ও মর্যাদার কসম করে বলেন, ‘যে জিনিসের ওপর আমার এ নাম নেয়া যাবে তাতে অবশ্যই বরকত হবে। (তাফসির ইবনে কাসির)

শয়তানের প্রভাব থেকে বাঁচার দোয়া

বিসমিল্লাহ দিয়েই সব কাজ শুরু করতে হয়। কাজ ও কথার শুরুতেই বিসমিল্লাহ বলা মুস্তাহাব। হাদিসে এসেছে, যে কাজ বিসমিল্লাহ দ্বারা শুরু করা না হয় তা কল্যাণহীন ও বরকতশূন্য থাকে। এর মাধ্যমে কাজের শুরুতে আল্লাহর আনুগত্য করা হয় এবং মানুষের অমতা ও বিনয় ভাব প্রকাশ পায়। এ বাক্যের মাধ্যমে কর্ম শুরু করলে শয়তানের অসওয়াসা থেকে মুক্ত থাকা যায়।
বিসমিল্লাহ দিয়ে শুরু করলে আল্লাহ তাকে করুণা করেন, হেফাজতে রাখেন ও কাজে বরকত দান করেন। আনাস রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি ঘর থেকে বের হওয়ার সময় বলে, ‘বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহ লা হাওলা ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লাহ বিল্লাহ’ অর্থাৎ ‘আল্লাহর নামে বের হলাম, আল্লাহর ওপর ভরসা করলাম, আমার কোনো উপায় নেই, মতা নেই আল্লাহ ছাড়া’ তখন তাকে বলা হয় তুমি পথ পেলে, উপায় পেলে ও রা পেলে। তারপর শয়তান তার থেকে দূর হয়ে যায়। তখন আর এক শয়তান এ শয়তানকে বলে, তুমি লোকটিকে কেমন পেলে? তখন সে বলে, তাকে হেদায়েত দেয়া হয়েছে, পথ দেয়া হয়েছে ও রা করা হয়েছে’ (মিশকাত হা-২৪৪৩)
হুজায়ফা (রা:) বলেন, নবী করীম সা: বলেছেন, ‘শয়তান সেই খাদ্যকে নিজের জন্য হালাল করে নেয়, যে খাদ্যের ওপর বিসমিল্লাহ বলা হয় না।’ (মুসলিম হা-২০১৭, আবু দাউদ হা-৩৭৬৬) জাবির (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘বিসমিল্লাহ বলে তুমি তোমার দরজা বন্ধ করো। কারণ শয়তান বন্ধ দরজা খুলতে পারে না। বিসমিল্লাহ বলে বাতি নিভিয়ে দাও। একটু কাঠখড়ি হলেও আড়াআড়িভাবে বিসমিল্লাহ বলে পাত্রের মুখ ঢেকে রাখো। বিসমিল্লাহ বলে পানির পাত্র ঢেকে রাখো।’ (বুখারি হা-৩২৮০, মুসলিম হা-২০১২, আবু দাউদ হা-৩৭৩১, তিরমিজি হা-২৮৫৭)
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস রা: বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কেউ তার স্ত্রীর সাথে মিলিত হওয়ার ইচ্ছা করে, সে বলবে ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবিনাশ শায়তানা অজান্নিবিশ শায়তানা মা রাজাকতানা’ (অর্থাৎ) আল্লাহর নামে মিলন শুরু করছি। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের শয়তান থেকে দূরে রাখো এবং শয়তানকে দূরে রাখো, আমাদের মাঝে কোনো সন্তান নির্ধারণ করলে শয়তান কখনো তার কোনো তি করতে পারবে না।’ (বুখারি হা-১৪৩৪, আবু দাউদ হা-২১৬১, তিরমিজি হা-১০৯২, ইবনু মাজাহ হা-১৯১৯)।

গুরুত্ব ও বরকত

আয়েশা (রা:) বলেন, রাসূলুল্লাহ সা: বলেছেন, ‘যখন তোমাদের কোনো ব্যক্তি খাদ্য খাবে সে যেন বিসমিল্লাহ বলে। যদি বিসমিল্লাহ বলতে ভুলে যায় তাহলে সে যেন বলে, বিসমিল্লাহি আওয়ালাহু ওয়া আখিরাহু’ (আবু দাউদ হা-৩৭৬৭, ইবনু মাজাহ হা-৩২৬৪)।
বিসমিল্লাহর গুরুত্ব ও বরকত অপরিসীম। বিসমিল্লাহ না বলার কারণে একটি হালাল খাদ্য আমাদের জন্য হারাম হয়ে যায়, আবার বিসমিল্লাহ না বলার কারণে নেক নিয়ত থাকলেও অনেক কর্মে বরকত না হওয়ায় অসন্মানিত হতে হয়। কাজের শুরুতে বিসমিল্লাহ বলা হলে সে কাজে আল্লাহর রহমত ও বরকত অবতারিত হতে থাকে। শয়তান সেখানে অবস্থান নিতে পারে না। আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ সা:-এর কাছে প্রথম ওহি নাজিলের সময়ও এই উত্তম বাক্য পড়ানো হয়েছিল।

প্রথম সূরা

নাস্তালিক লিপিতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস বলেন, ‘জিবরাইল (আ:) সর্বপ্রথম মুহাম্মদ (সা:)-এর প্রতি যা অবতীর্ণ করেছেন, তা হচ্ছে জিবরাইল (আ:) বললেন, হে মুহাম্মদ! আপনি আশ্রয় চান। মুহাম্মদ (সা:) বললেন, আমি সর্বশ্রোতা সর্বজ্ঞাতা আল্লাহর কাছে অভিশপ্ত শয়তান থেকে আশ্রয় চাই। অতঃপর জিবরাইল (আ:) বললেন, হে নবী! আপনি বলুন, বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম। অতঃপর জিবরাঈল (আ:) বললেন, ইকরা' বিসমি অর্থাৎ আপনি পড়ন, আপনার প্রতিপালকের নামে, যিনি আপনাকে সৃষ্টি করেছেন। আব্দুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রা:) বলেন, এটাই প্রথম সূরা, যা আল্লাহ তায়ালা জিবরাইল (আ:) এর মাধ্যমে মুহাম্মদ (সা:)-এর প্রতি অবতীর্ণ করেন।’ (ত্বাবারি, তাফসির ইবনু কাছির হা-২৬৩)

সূচনাবাক্য

‘বিসমিল্লাহ’ হলো সব কাজের সূচনাবাক্য। পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের শুরুতেও বিসমিল্লাহ বলতে হবে। বিসমিল্লাহ দিয়েই সূরা শুরু করা হয়েছে। আল্লাহর নির্দেশিত ও ইসলামি বিধান মতে সমর্থিত কাজ শুরুর প্রাক্কালেই ‘বিসমিল্লাহ’ বলতে হয়। কিন্তু অন্যায় কাজ ও ইসলামবহির্ভূত কর্মের জন্য ‘বিসমিল্লাহ’ বলা আল্লাহদ্রোহিতার শামিল। অমূল্য ও অতুলনীয় এই বাক্যের মাধ্যমে আলাহর আনুগত্য প্রকাশ পায়। সুন্দর ও মাধুর্যমণ্ডিত এই শব্দমালা কর্মের আগে প্রকাশ করার মাধ্যমে স্বতঃস্ফূর্ত আমল সম্পাদন করা এবং ইসলামী সংস্কৃতির অনুসরণ করা যায়। এটিকে অস্বীকার বা মানা না হলে কর্ম অর্থহীন হয়ে যায়।
মহানবী (সা:) বলেছেন ‘প্রত্যেক ভালো কাজের শুরুতে যদি ‘বিসমিল্লাহ’ বলা না হয় তা হলে তা অসম্পূর্ণ ও নিম্নমানের থেকে যায়।’ (আবু দাউদ, ইবনু মাজাহ)।

ক্যালিগ্রাফিতে বিসমিল্লাহ

ইসলামিক ক্যালিগ্রাফিতে বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম প্রচুর লেখা হয়।
786 অর্থ কি?
“৭৮৬” দ্বারা কি শুধু “বিসমিল্লাহ.” বুঝায়, নাকি অন্য কিছু বুঝায়।
কুরআনের প্রতি হরফের জন্য একটি নির্দিষ্ট মান নির্ধারণ করা হয়েছে যাকে বলা হয় ‘আবজাদ’ মান। মাদরাসা পাঠ্য পুস্তক ‘বাকুরাতুল আদব’ এর পঞ্চম পৃষ্ঠায় এবং
المعجم الوسيط নামক অভিধানে উল্লেখিত নিম্ন নমুনায় আরবি অক্ষরের গাণিতিক বা ‘আবজাদ’ মানের চিত্রটি লক্ষ্য করুন।
ابجد
ابجد هوز حطى كلمن
سعفص قرشث شخذ ضظغ
ا ب ج د ه و ز ح ط ى ك ل م ن
١ ٢ ٣ ٤ ٥ ٦ ٧ ٨ ٩ ١٠ ٢٠ ٣٠ ٤٠ ٥٠
س ع ف ص ق ر ش ت ث خ
٦٠ ٧٠ ٨٠ ٩٠ ١٠٠ ٢٠٠ ٣٠٠ ٤٠٠ ٥٠٠ ٦٠٠
ذ ض ظ غ

٧٠٠ ٨٠٠ ٩٠٠ ١٠٠٠
আরবি বাক্য লেখার পদ্ধতিতে একটি অক্ষরের সাথে অন্য একটি অক্ষর মিলিয়ে লেখা হলে ঐ শব্দটি পাঠ করার সময় শব্দটির বাম পাশে হরকতবিহীন একটি আলিফ যোগ করে এক আলিফ টেনে পাঠ করতে হয়। আর অক্ষরটি বামের অক্ষরের সাথে মিলিয়ে লিখলে হরকতবিহীন আলিফকে ছোট আকারে ‘যবর’ যোগ করে অক্ষরের উপর দিলেও এক আলিফ টেনে পাঠ করতে হয়। উক্ত ছোট আলিফকে খাড়া যবর বলে। আলিফের গাণিতিক মান হচ্ছে ১। অক্ষরের উপর দেয়া ছোট আলিফের অর্থাৎ খাড়া যবরের মানও হচ্ছে ১।
আরবী অক্ষরের (হরফের) গণিতের মান দিয়ে কোড নম্বর লিখার পদ্ধতিটির আবিষ্কারক হচ্ছেন গ্রিসের প্রখ্যাত গণিত-বিশারদ (জ্যামিতিক) পিথাগোরাস। তিনি ছিলেন ইয়াহুদী। মুসলিমের প্রকাশ্য শত্রু। আরবি অক্ষরের মানের হিসাব কষে বিধর্মী কর্তৃক “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর যে সংখ্যা বা মান নির্ধারণ করা হয়েছে তা হলো ৭৮৬।
অতএব, জানা গেল রসূল (সঃ) তার জীবদ্দশায় “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর সংখ্যা নির্ণয়ক কোন মান লিখে যাননি। এ ছাড়া তিনি তার সাহাবীগণ (রাঃ) এদের কাউকে লিখতে অনুমোদনও দেননি। সুতরাং “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর পরিবর্তে ৭৮৬ সংখ্যাটির ব্যবহার করা নি:সন্দেহে একটি বিদ‘আত।
এবার আসুন, লক্ষ্য করি যে, কেন ৭৮৬ লেখা হচ্ছে। পিথাগোরাসের প্রবর্তিত অক্ষরের মান তথা ‘আবজাদ’ মান বসিয়ে দেখা যাক
بِّسْمِ اللَّهِ الرَّحْمَٰنِ الرَّحِيمِ “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর মান কত হয়?
ب س م ا ل ل ه ا ل ر ح
২০০ ৩০ ৩০ ৩০ ৪০ ৬০
م ن ا ل ر ح ى م
৪০ ১০ ২০০ ৩০ ৫০ ৪০
অর্থাৎ
+৬০+৪০++৩০+৩০+++৩০+২০০++৪০+৫০++৩০+২০০++১০+৪০=৭৮৬
পাঠকবৃন্দ! পিথাগোরাসের আবিষ্কৃত আরবি অক্ষরের গাণিতিক মান বসিয়ে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম” এর কোড নম্বর পাওয়া গেল ৭৮৬ । আবার আপনারা আরবিতে “হরে কৃষ্ণা” هرىكرشنا লিখে উহার আবজাদ মান প্রয়োগ করুন। দেখতে পাবেন যে, এর কোড নম্বর বা আবজাদ মান দাড়াচ্ছে ৭৮৬।
ه ر ى ك ر ش ن ا
১ ৫০ ৩০০ ২০০ ২০ ১০ ২০০ ৫ =৭৮৬
অর্থাৎ ৫+২০০+১০+২০+২০০+৩০০+৫০+১=৭৮৬
এক্ষণে মনে প্রশ্ন জাগবে যে, তাহলে আমাদের দেশের অনেক মাদরাসা, স্কুল, কলেজ, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের ক্যাশমেমো, ভাউচার, চাঁদার রসিদ, পোস্টার, সাইনবোর্ড, অফিসিয়াল প্যাড ইত্যাদি নানাবিধ দলীল বা কাগজ-পত্র তথা তাবিজের শিরোনামে যে ৭৮৬ কোড নম্বর লিখা হয়ে আসছে এর অর্থ কি? মুসলিম ভাই বোনেরা আৎকে উঠবেন না!
এবার চিন্তা করে দেখুন, আল্লাহকে স্মরণ করতে গিয়ে না বুঝে বিধর্মীদের সবক নেয়া “আবজাদ” মান ব্যবহার করে আমরা নিজেদের অজান্তে কত বড় পাপের কাজ করে যাচ্ছি। অতএব সাবধান থাকুন এবং যাছাই-বাছাই না করে সংখ্যা তত্ত্বের হিসাব না জেনে দ্বীনি ব্যাপারে সংখ্যার ব্যবহার করবেন না, বরং আরবি শব্দ ব্যবহার করুন নতুবা নিজ ভাষায় লিখুন। মনে রাখবেন, রসূল (সঃ) বলেছেন-
সাওয়াবের উদ্দেশে দ্বীনের মধ্যে সংযোজিত প্রতিটি নতুন বিষয়ই বিদ‘আত, প্রতিটি বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা এবং প্রতিটি ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম। (মুসলিম, মিশকাত-১৪১, নাসাঈ-১৫৭৭)
এই একই বিষয় সম্পর্কে ডা. জাকির নায়েকের উত্তরটিও নিচে দেখতে পারেন-
•► প্রশ্ন: অনেকেই “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম” না লিখে “৭৮৬” লিখে থাকে। এটা কি ঠিক?
•► উত্তর:
প্রশ্নটি হচ্ছে অনেক মুসলিম “বিসমিল্লাহ” পুরোপুরি না লিখে ৭৮৬ লিখে থাকে। এটা ঠিক কিনা। কিছু লোক আছে যারা আরবী বর্ণমালাগুলোকে নির্দিষ্ট মান দিয়ে যোগফল বের করে ঐ সংখ্যা দিয়ে আয়াত বা দোয়া বা কোনো নাম নির্দেশ করার চেষ্টা করে।
উদাহরণ দিয়ে বলা যায় “বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম”-এর ‘বা’, ‘আলিফ’, ‘সিন’ এ বর্ণমালাগুলোর মান বসিয়ে তার বের করেছেন ৭৮৬ আবার ৯২ দিয়ে বুঝান মুহাম্মাদ (সঃ) এভাবে আরো অনেক কিছু। কিন্তু এমন ব্যবহার কোরআন বা সহীহ হাদীসের কোথাও পাওয়া যায় না।
কিছু লোক তর্ক করে যে, আমরা যখন আরবি বর্ণমালা না পাই, তখন দাওয়াতপত্র ভিজিটিং কার্ড ইত্যাদি ছাপাতে সংখ্যাগুলো লিখি। কিন্তু আমার কথা হলো, আপনি আরবী শব্দটি ইংরেজিতে বানান করে লিখেন। আর যদি মনে করেন সবাই বুঝবেনা তাহলে অনুবাদ লিখতে পারেন। যেমন “পরম করুনাময় দাতা ও দয়ালু আল্লাহ্‌র নামে”. এত সহজ উপায় থাকতে এমন কঠিন ও বিদঘুটে পদ্ধতির প্রয়োজন কি?
আসলে বিভিন্ন সংখ্যা নিয়ে বিভিন্ন ধারনা আমাদের সমাজে দেখা যায়। যেমন পশ্চিমা সমাজে ১৩ সংখ্যাটিকে অপয়া ভাবা হয়। তারা বলে ‘আনলাকি থার্টিন’. আবার তারা ৬৬৬ দ্বারা বুঝায় শয়তান।
আমাদের ভারতীয় উপমহাদেশে চোর, বাটপার, ফটকাবাজদের ৪২০বলা হয়। এর অবশ্য কারণ আছে, ভারতীয় উপমহাদেশের সবদেশেই যদি কোন চোর বাটপার ধরা হয় তাহলে তাকে যে ধারায় শাস্তি দেয়া হয় সেটি পেনাল কোডের ৪২০ নং ধারায় বর্ণীত। তাই যদিও কারণ আছে তবুও অনেকে না বুঝেই বলে।
যারা বলেন যে বিভিন্ন বর্ণের অবস্থানগত মান যোগ করে ঐ শব্দের প্রতিনিধিত্বকারী সংখ্যা বের করেছেন, তাদের আমি সমর্থন করি না।
কারন, একই মান দিতে পারে এমন সংখ্যা দুটি শব্দের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে। যার একটি ভালো অন্যটি খারাপ। সে ক্ষেত্রে আপনি কোনটি গ্রহন করেবেন?
উদাহরণ দেই, যদি বলি ইংরেজি বর্ণ B এর মান ১ এবং A এর মান৭ আর ধরুন D এর মান ৪/ এখন যোগ করলে আমরা পাই ১২/ অর্থাৎ
BAD (খারাপ)এর সংখ্যাগত মান পেলাম ১২/ এখন G এর মান , O এর মান , D এর মান ধরলে GOOD এর মান কত?দেখুন +++=১২. অর্থাৎ (GOOD)ভালো এর সংখ্যাগত মান পেলাম ১২
এখন আমি ১২ কে ভালো বা মন্দ কোনটা নির্দেশক বলব? যদি প্রথমটি মেনে বলি ১২ একটি মন্দ নির্দেশক তখন পরে আবার দেখলাম সংখ্যাটি যে মান ধরে নেয়া হয়েছে তা ভালকেও নির্দেশ করে।
তাই যারা ‘বিসমিল্লাহ্‌’ কে ৭৮৬ দ্বারা প্রকাশ করেন তাদেরকে বলি, এমন অনেক শব্দ পাবেন যেগুলোর বর্ণের মান যোগ করলে ৭৮৬ পাওয়া যাবে। সেশব্দ বা বাক্যগুলোর কিছু হতে পারে ভালো আবার কিছু হতে পারে খারাপ নির্দেশক।
তাই কোনো মুসলমানকেই সমর্থন করিনা যখন সে ৭৮৬ দ্বারা বিসমিল্লাহ প্রকাশ করে। আশাকরি সবাই বিষয়টি বুঝতে পেরেছেন।

বিসমিল্লাহর পরিবর্তে ৭৮৬ লেখা সুন্নাহ বিরোধী কাজ
বর্তমানে মুসলিমদের মধ্যে একটি মারাত্মক বিদ’আত ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। সাধারণ জনগণ তো বটেই এমনকি এক শ্রেণীর স্বার্থবাদী আলেমরাও “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম” এর পরিবর্তে ৭৮৬ লিখতে আরম্ভ করেছেন। বাস, ট্রাক, রিক্সা, দোকান যত্রতত্র ৭৮৬ লিখা স্টিকার শোভা পাচ্ছে। এমনকি মসজিদ, মাদ্রাসার দেওয়ালেও নক্সা করে ৭৮৬ লেখা হচ্ছে। আর পত্রের শুরুতে ৭৮৬ লেখা তো একটি অতি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের সমাজে কিছু বিদ’আতি আলেমদের বক্তব্য হচ্ছে যে, আমরা ৭৮৬ এই কারণে লেখি যাতে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর বে-ইজ্জতি না হয়। এই সমস্ত লোকদের নিকট আমাদের প্রশ্ন হল, আপনারা কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈ, তাবে-তাবেঈ, সালফে সালেহীনদের চেয়েও ইসলামকে বেশি বুঝে ফেলেছেন? তাদের হৃদয়ে কি আল্লাহর আল্লাহর নামের জন্য সম্মান, ভালবাসা, শ্রদ্ধা ছিল না? যদি আল্লাহর নামের বে-ইজ্জতির প্রশ্নই হত তাহলে কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম অমুসলিম বাদশাহদের নিকট লিখিত পত্র “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম” দ্বারা শুরু করতেন কেন? আহলে কিতাবদের লিখিত এসব চিঠিতে কুরআনের আয়াত লিখতেন কেন? পারস্যের সম্রাট কিসরা তো রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রেরিত চিঠিকে টুকরো টুকরো করে ছিঁড়ে ফেলেছিল। তাহলে কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফেরদরকে লিখিত চিঠিতে “বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম” লিখে আল্লাহর নামের সম্মানহানি করেছেন? নাউযুবিল্লাহ।
যদি তাই হত তাহলে আল্লাহ তা’আলা জিবরীল আলাইহিস সালাম এর দ্বারা নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কেন সাবধান করলেন না যে, অমুসলিমদের লিখিত চিঠিতে এই শব্দ যেন আর না লেখা হয়। তাছাড়া বর্তমানে তো শুধু অমুসলিম নয়, মুসলমানদেরকে লিখিত চিঠিতেও ৭৮৬ লেখা হচ্ছে। যদি এই ধরনের “কোড” ব্যবহার উত্তমই হত তাহলে স্বর্ণ যুগের সোনার মানুষগুলোর মধ্যে কেউই এমন কোড ব্যবহার করলেন না কেন? নিঃসন্দেহে এটা সুস্পষ্ট বিদ’আত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “কেউ যদি দ্বীনের মধ্যে কোন নতুন প্রথার প্রচলন ঘটায় আর সেটা তার মধ্যে না থাকে তাহলে তা পরিত্যাজ্য হবে”। [মুত্তাফাক্ব আলাইহি, মিশকাত, হাদিস নং ১৪০]
আমাদের সমাজের একটা বৃহত্তর অংশ ইমামগণের মাযহাবের তাক্বলীদে বিশ্বাসী। তাদের নিকটেও সবিনয় জানতে চাই যে, ৭৮৬ লেখার ব্যাপারে আপনারা চার ইমামের মধ্যে কোন ইমামের অনুসরণ করেন? ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক, ইমাম শাফেঈ ও ইমাম আহমাদ রহঃ কি বিসমিল্লাহর স্থলে ৭৮৬, আল্লাহর জন্য ৬৬ এবং মুহাম্মাদ সালাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর জন্য ৯৬ লেখার কোন নির্দেশ দিয়েছেন? যদি আপনারা বলেন যে, আমরা বাপ-দাদাদের এই ভাবেই লিখতে দেখেছি তাহলে এটা নিঃসন্দেহে মক্কার কাফেরদের সাদৃশ্য। যাদেরকে মূর্তিপূজা ত্যাগ করে তাওহীদের দিকে আহ্বান জানানো হলে বলতঃ “বরং আমরা তারই অনুসরণ করব যা আমাদের বাপ-দাদাদের করতে দেখেছি”। [সূরা লুকমান, আয়াত ২১]
আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে, ইসলাম কোন গাণিতিক ধর্ম নয় এবং কুরআনও কোন গাণিতিক গ্রন্থ নয়। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “যে ব্যক্তি ইসলামকে ত্যাগ করে অন্য কোন পথ গ্রহণ করবে সেটা কখনই গৃহীত হবে না এবং কিয়ামতে সে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে”। [সূরা আলে ইমরান, আয়াত নং ৮৫]
“আবজাদ” পদ্ধতির সূত্র মতে বিসমিল্লাহর পরিবর্তে ৭৮৬ লেখার যে প্রচলন হয় তা কোন শারঈ পদ্ধতি তো নয়ই এমনকি মুসলিমরা এই পদ্ধতির প্রবর্তকও নয়। পদ্ধতিটির আবিষ্কারক হল গ্রীসের প্রখ্যাত দার্শনিক পীথাগোরাস (Pythagoras)। সে ইহুদী ছিল এবং মুসলিমদের প্রকাশ্য শত্রু। সূত্রটির ব্যবহার প্রধানত সম্রাটের এবং সরকারী কর্মচারীদের তোষামোদীর জন্য ব্যবহৃত হত। যেমনঃ তাদের সিংহাসন আরোহণের তারিখ অমুক পূণ্য বাক্যের কোডের সঙ্গে, জন্মগ্রহণের তারিখ অমুক পূণ্য বাক্যের কোডের সঙ্গে, মৃত্যু তারিখ অমুক কোডের সঙ্গে ইত্যাদি। পীথাগোরাস প্রবর্তিত এই “আবজাদ” পদ্ধতিকে নাম সর্বস্ব মুসলিম বিদ’আতি আলেমরা গ্রহণ করে নিয়েছেন। এই সূত্র মতেই তাবিজ, তখতি ও দোকান ঘরের জন্য বিভিন্ন সংখ্যাতাত্ত্বিক বোর্ডেরও উদ্ভাবন করে তারা।
ইহুদী পীথাগোরাসের আবিষ্কৃত এই পদ্ধতিকে গ্রহণকারীরা সুস্পষ্টরূপে ইসলামের বিরুদ্ধাচরণ করে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ “তোমরা মুশরিকদের বিরুদ্ধাচরণ কর”। [মুত্তাফাক্ব আলাইহি, মিশকাত, হাদিন নং ৪৪২১] রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আরো বলেনঃ “কেউ যদি কোন জাতির সাদৃশ্য গ্রহণ করে তাহলে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে”। [আবু দাউদ, সনদ হাসান, মিশকাত, হাদিস নং ৪৩৪৭]
যে সমস্ত লোকেরা ৭৮৬ লেখার স্বপক্ষে দলীল পেশ করে নিঃসন্দেহে তারা নিজেদের মূর্খতা ও অজ্ঞতাকেই প্রকাশ করে। কারণ “আবজাদ” সূত্র মতে রহমানের আলিফকে ধরলে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এর কোড ৭৮৬ এর পরিবর্তে ৭৮৭ হবে। অনুরূপ “আল্লাহ” শব্দের লাম এর উপরে যে আলিফ রয়েছে তার কোড যোগ করলে হবে ৭৮৮। মূলত ৭৮৮-ই সঠিক কোড, ৭৮৬ নয়। সাথে সাথে বিসমিল্লাহর প্রথমে যে একটি গোপন আলিফ রয়েছে সেটিও বাদ দেয়া হয়েছে। সুতরাং ৭৮৬ এর হিসাব মিলানোর কোন সুযোগ নেই। পক্ষান্তরে হিন্দুদের ভগবান “হরে কৃষ্ণ” এর সরাসরি ও সন্দেহাতীত ভাবেই কোড হয় ৭৮৬। সুতরাং যারা পত্র পত্রিকায়, মসজিদ মাদ্রাসায় ৭৮৬ লেখে তারা নিজেদের অজ্ঞতার জন্যই আল্লাহকে ছেড়ে হিন্দুদের ভগবানের নাম লিখে শিরকে লিপ্ত হয়। অতএব এই ধরনের শিরকি কাজ নিঃসন্দেহে শয়তানী ধোঁকা ও আত্মপ্রবঞ্চার শামিল। আল্লাহ তা’আলা বলেনঃ “যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করবে তার উপর আল্লাহ জান্নাত হারাম করে দিয়েছেন এবং তার ঠিকানা হল জাহান্নাম”। [সূরা মায়িদা, আয়াত ৭২]
রাসূল্ললাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদেরকে প্রতিটি কাজ বিসমিল্লাহ বলে শুরু করতে বলেছেন। খাওয়া-দাওয়া থেকে শুরু করে চিঠি-পত্র লেখা সমস্তই এর অন্তর্গত। এখন আমরা যদি দয়াময় আল্লাহর নামের পরিবর্তে এমন সংখ্যা ব্যবহার করি যা “হরে কৃষ্ণ” অর্থ বহন করে তাহলে আমরা সওয়াবের অধিকারী হবো নাকি ধ্বংসাত্মক শিরকি পাপের ভাগী হবো?
তাছাড়া দ্বীনের ব্যাপারে সকল প্রকার বিদ’আতই হারাম ও গোমরাহী। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেনঃ “তোমরা (দ্বীনের) নব প্রচলিত বিষয়সমূহ থেকে সতর্ক থাক। কেননা প্রত্যেক নতুন বিষয় বিদ’আত এবং প্রত্যেক বিদ’আত ভ্রষ্টতা”। [সুনান আবু দাউদ, হাদীস নং ৩৯৯১ ।। সুনান আত তিরমিযী, হাদীস নং ২৬৭৬]

সাততেতৈয়া

শরিয়ত,তরিকত,হাকিকত ও মারফত কাকে বলে? বিস্তারিত?

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-বড় পীর এর জীবনী

তাজবীদ

জামে মসজিদ নীতিমালা