হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-বড় পীর এর জীবনী

বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-এর জীবনী

শেখ আব্দুল কাদির আল জিলানী, মুহিইহ'দ-দীন, সুলতান আল সুফিবাদ, গাউস-ই-আযম [উল্লেখ্য গাউস একটি ফারসি শব্দ যার অর্থ ত্রাণকর্তা আর আযম অর্থ সবচেয়ে বড়, তাই কুরআন অনুযায়ী একমাত্র আল্লাহই তথাকথিত গাউসুল আযম।এবং অন্য কেউ তার শরিক না।][১]
পুরো নামআল-সাইয়িদ মহিউদ্দীন আবু মুহাম্মদ আব্দুল কাদির আল-জিলানী আল-হাসানী ওয়াল-হুসানী
জন্ম১ম রমযান ৪৭০ হিজরী[২] বা মার্চ ১৭, ১০৭৮[৩]
ব্যবহারশাস্ত্রহাম্বেলি[৪][৫]
মৃত্যু৮ রবিউল আউয়াল ৫৬১ হিজরী
 ফেব্রুয়ারি ১৪, ১১৬৬ সিই[৬][৭]
জন্মস্থানগিলন প্রদেশতাবারিস্তানপারস্য[৮]
কবর স্থানআব্দুল কাদির এর সমাধিবাগদাদইরাক
পিতাআবু সালিহ মুসা আল-হাসানি
মাতাউম্মুখ খায়ের ফাতিমা
• • মদিনা
• সাদিকা
• মু'মিনাহ
• মাহবুবা
পুত্র (সকল)• সাফিউদ্দীন
• শরীফুদ্দীন
• আবু বকর
• সিরাজুদ্দীন
• ইয়াহয়িয়া
• মুসা
• মুহাম্মদ
• ইব্রাহিম
• আব্দুল্লাহ
• আব্দুর রহমান
• আবু নাসির মুসা
উত্তরপুরূষশেখ
অন্যান্য উপাধী• শাইখ
("নেতা")
• আব্দ আল-কাদির
("সর্বময় ক্ষমতার গোলাম")
• আল-জিলানী
("একজন যিনি গিলান থেকে এসেছেন")
• মুহায়ি’দ-দ্বীন
("ধর্ম পুনরায় জীবত কারক")
• আবু মুহাম্মদ
("মুহাম্মদ এর পিতা")
• আল-গাওয়াথ আল-আ'যম
• ("সর্বোচ্চ সাহায্যকারী")
• সুলতকান আল-আউলিয়া
("পবিত্র ব্যক্তিদের রাজা")
• আল-হাসানি আল-হুসানি
("ইমাম আল হাসান ও ইমাম আল হুসাইন উভয়ের বংশধর)

হযরত আব্দুল কাদির জিলানী(রহঃ) এর জীবনী

সাইয়্যিদুল আউলিয়ামাহবূবে সুবহানীকুতুবে রব্বানীগাউছুল আযমমুজাদ্দিদুয যামানইমামুর রাসিখীনসুলত্বানুল আরিফীনমুহিউদ্দীনআওলাদে রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি  এর সংক্ষিপ্ত জীবনী 
আব্দুল কাদের জিলানী হলেন ইসলাম ধর্মে অন্যতম প্রধান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ত্ব। তিনি ইসলামের অন্যতম প্রচারক হিসাবে সুবিদিত; সেকারণে তাকে 'গাউস-উল-আজম' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। ইসলাম ধর্মমতে তাকে 'বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)' নামে ব্যক্ত করা হয়। আধ্যাত্মিকতায় উচ্চমার্গের জন্য বড়পীর, ইরাকের অন্তর্গত 'জিলান' নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করায় জিলানী, সম্মাণিত হিসাবে আবু মোহাম্মদ মুহিউদ্দীন প্রভৃতি উপাধি ও নামেও তাকে সম্বোধন করা হয়।


পবিত্র বিলাদত শরীফ :
সাইয়্যিদুল আউলিয়াগউছুল যমআওলাদে রসূল হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ৪৭১ হিজরী সনে তৎকালীন ইরানেরপবিত্র জিলান নগরে পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। উনার পিতা উনার নাম মুবারক আওলাদে রসূল হযরত সাইয়্যিদ আবূ ছালেহমূসা জঙ্গীদোস্ত রহমতুল্লাহি আলাইহি (যেহেতু তিনি যুদ্ধপ্রিয় ছিলেন সেহেতু উনাকে জঙ্গীদোস্ত বলা হয়) উনার মাতা উনার নাম মুবারকহযরত সাইয়্যিদাহ উম্মুল খায়ের আমাতুল জাব্বার ফাতিমা রহমতুল্লাহি আলাইহা। তিনি সম্মানিত পিতা উনার দিক থেকে সাইয়্যিদু শাবাবিআহলিল জান্নাহ ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম এবং সম্মানিতা মাতা উনার দিক থেকেসাইয়্যিদু শাবাবি আহলিল জান্নাহ ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম উনাদের বংশধর।সুবহানাল্লহ!
ধর্ম প্রচার

আবদুল কাদের জিলানী
শিক্ষা-দীক্ষায় পূর্ণতা অর্জনের পর তিনি নিজেকে পবিত্র ইসলাম ধর্ম প্রচারের কাজে নিয়োজিত করেন। বিভিন্ন মাহফিলে তিনি ইসলামের সুমহান আদর্শ যুক্তিপূর্ণ ভাষায় বর্ণনা করতেন। তার মহফিলে শুধু মুসলমান নয়, অনেক অমুসলিমও অংশগ্রহণ করতো। তার বক্তব্য শুনে অনেক অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।

তিনি কাব্য, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ের পণ্ডিত ছিলেন। তার রচিত বহু গ্রন্থ রয়েছে। এসব গ্রন্থের মধ্যে ফতহুল গায়ের গুনিয়াতুত তালেবীন, ফতহুর রবযানী, কালীদায়ে গাওসিয়া উল্লেখযোগ্য।


সাইয়্যিদুল আউলিয়াগউছুল আযম হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ছিলেন ইলমে লাদুন্নীপ্রাপ্ত ওলীআল্লাহ




 সাইয়্যিদুল আউলিয়াগউছুল আযম হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার পবিত্র সাওয়ানেহে উমরী মুবারক উনার মধ্যে একটি ঘটনা বর্ণিত রয়েছে যেএকবার এক ব্যক্তি একটি আমল করার নিয়ত করেছে এভাবে যেতার সাথে ওই সময় আর কেউই যেন আমলটা করতে না পারে। যদি সে আমলটা করতে না পারে তবে সে বলেছেতার স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে।

তার এ মাসয়ালার সমাধানের জন্য দীর্ঘদিন ব্যাপী অনেক আলিম-উলামার কাছে যাওয়া হলো। উনারা সকলেই একই জবাব দিলেন যেউক্ত ব্যক্তির স্ত্রী তালাক হয়ে গেছে। কারণএমন কোনো আমল নেইযে আমল সে শুধু একাই করবে আর কেউই করবে না। সে নামায পড়রোযা করুকদান-ছদকা করুকপবিত্র কুরআন শরীফ তিলাওয়াত করুক ইত্যাদি যে আমলই করুক না কেন,

পৃথিবীর কেউ না কেউ সেই আমলটি করবে। কাজেইতার স্ত্রী তালাক হয়ে গেছে। অতঃপর যখন এ মাসয়ালাটির সঠিক কোনো সমাধান পাওয়া গেলো নাতখন এক ব্যক্তি সাইয়্যিদুল আউলিয়াগউছুল আযম হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার দরবার শরীফ যাওয়ার পরামর্শ দিলেন যেউনার কাছে গেলে হয়তো মাসয়ালাটির সঠিক সমাধান পাওয়া যাবে। তখন সত্যিই উনার কাছে গিয়ে মাসয়ালাটি জিজ্ঞেস করা হলো। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার খাছ লক্ষ্যস্থল ওলী হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি মাসয়ালাটি শুনে কোনোরূপ চিন্তা-ফিকির ছাড়াই বলে দিলেনএটা কোনো কঠিন মাসয়ালা হলো নাকি! ওই ব্যক্তিকে বলে দাও- সে যেন পবিত্র মক্কা শরীফ চলে যায়। সেখানে সবার তাওয়াফ বন্ধ করে দিয়ে সে যেন একাই তাওয়াফ করে। কারণপবিত্র কাবা শরীফ যমীনে দ্বিতীয়টি নেই। সে যখন তাওয়াফ করবে তখন যমীনে আর কেউই তাওয়াফ করতে পারবে না। ফলে তার স্ত্রী আর তালাক হবে না। সুবহানাল্লাহ!



গাউছুল আযমসাইয়্যিদুল আউলিয়াহযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি আল্লাহ পাক-এর যমীনে এক বেমেছাল দৃষ্টান্ত॥ ওলীআল্লাহগণ ব্যতীত পৃথিবীতে এক ফোঁটা রহমত এবং ইসলাম আবাদ কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।

মহান রব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন-
لقد من الله على المومنين اذ بعث  فيهم رسولا من انفسهم يتلوا عليهم ايته ويزكيهم ويعلمهم الكتب والحكمة وان كانوا من قبل لفى ضلل مبين.
মুমিনগণের প্রতি আল্লাহ পাক উনার ইহসান যেতাদের মধ্য হতে তাদের জন্য একজন রসূল প্রেরণ করেছেন। যিনি আল্লাহ পাক-এর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করে শুনাবেনতাদেরকে তাযকিয়া (পরিশুদ্ধ) করবেন এবং কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দিবেন। যদিও তারা পূর্বে হেদায়েত প্রাপ্ত ছিল না।” (সূরা ইমরান/১৬৪ অনুরূপ সূরা বাকারা ২৯১৫১সূরা জুমুয়া ২নং)
অর্থাৎ যুগে যুগে মানুষের কল্যাণের জন্য এবং ঈমানআমল আক্বীদা হিফাযতের জন্য আল্লাহ পাক ১,২৪,০০০ মতান্তরে ২,২৪,০০০ নবী-রসূল আলাইহিমুস সালামগণ এসেছিলেন। উনাদের পরে উনাদের স্থলাভিষিক্ত তথা নায়েবে নবী-রসূল হিসেবে আল্লাহ পাক উনার মনোনীত ওলীআল্লাহগণকে যুগে যুগে সেই মহান নেয়ামত হাছিলের জন্য প্রেরণ করেছেন। (সুবহানাল্লাহ)
উল্লেখ্য যেবর্তমান যুগে কিছু নামধারী তথা ধর্মব্যবসায়ী মোল্লারা বলে থাকে ওলীআল্লাহ বা পীর কোরআন হাদীছের কোথাও নেই। সুতরাং এটা বেদয়াতীপন্থা। নাউযুবিল্লাহ। আমি তাদেরকে বলতে চাই। কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ কতটুকুই বা পড়েছেনআর আপনি যে ইসলামের বুলি মুখে আওরাতে চাচ্ছেন এই ইসলামী ধ্যান-ধারণা আপনি পেয়েছেন কোথায়নিশ্চয়ই আপনাকে মুখে স্বীকার না করলেও অন্তরে অবশ্যই শিকার করতে হবে কোন না কোন ওলীআল্লাহ থেকে। যদি না স্বীকার করেন তাহলে কি আপনি নবী? (নাউযুবিল্লাহ)। আপনার ক্ষুদ্র ইসলামী বোধটুকু যদি ওলীআল্লাহগণ থেকে নাই পেলেন তাহলে সরাসরি আল্লাহ পাক ওহী করে কি জানিয়েছেনযদি আপনি এমনটি বিশ্বাস করেন তাহলে মনে রাখবেন আপনি নব্য নবী তথা কাফির। যেটা আপনারই কথামত।
আর যদি বলতে চান হাদীছ শরীফ থেকে তাহলেও একই কথা। রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কি আপনি দেখেছেনউনার হাদীছ শরীফ সরাসরি (কোন আওলীয়ায়ে কিরাম উনাদের মুবারক জবানিতে অথবা উনাদের লিখিত কিতাবাদী ছাড়া) পেয়েছেনহ্যাঁ দাবী করলেও আপনি হবেন কাট্টা মিথ্যাবাদী। কারণ আপনি ছাহাবী নন। একমাত্র হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমগণই সরাসরি হাদীছ শরীফ শুনেছেন।
তারপরেও যদি আপনি বলতে চান যেআমি বুখারী শরীফ অথবা অন্যান্য ছহীহ হাদীছ শরীফ পড়ের জেনেছি অথবা জানব। তাহলেও প্রমাণিত হবে আপনি একটা গণ্ড মূর্খ এবং প্রতারক। কারণ বুখারী শরীফ অথবা অন্যান্য হাদীছ শরীফের কিতাব সম্পর্কে আপনার কোন সাধারণ জ্ঞানটুকও নেই। মূলতঃ বুখারী শরীফ মানলে আমার এত দীর্ঘ আলোচনার প্রয়োজন ছিল না। কারণ বুখারী শরীফ যিনি লিখেছেন উনী একজন হক্কানী রব্বানী ওলীআল্লাহ। তাহলে আপনাকে অবশ্যই স্বীকার করতে হবে ইসলামের বুলি যতটুকুই শিখেন তা শিখেছেন আল্লাহপাক উনার মহান ওলীবিশিষ্ট ইমাম হযরত ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে অথবা অন্য কোন ইমাম তথা ওলীআল্লাহগণ থেকে।
তাহলে ষ্পষ্ট প্রমাণিত হল হক্কানী ওলীআল্লাহগণ এবং ইমাম মুজতাহিদগণ ব্যতীত ইসলামের কোন বিষয় জানা কারোপক্ষে কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।
এখন আসি কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ এ ওলীআল্লাহগণের কথা আছে কি না।
মূলতঃ কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফের অসংখ্য স্থানে ওলীআল্লাহগণের প্রয়োজনীয়তাতাদের অনুসরণের অবশ্যকতার কথা এসেছে। যা বর্ণনা করতে গেলে অনেক সময় লেগে যাবেআমি ২/৪টি তুলে ধরছি যা প্রমাণিত হবে যে ওলীআল্লাহগণের অনুসরণ করাফরজের অন্তর্ভুক্ত।

১. কুরআন শরীফের সূরা নিসা ৫৯নং আয়াত শরীফ-
اطيعوا الله واطيعوا الرسول واولى الامر منكم
অর্থঃ (আল্লাহ পাক আদেশ করেন) তোমরা আল্লাহ পাক এর অনুসরণ কর (যদি সম্ভব না হয় তাহলে) ওনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ কর (যদি সেটাও সম্ভব না হয় তাহলে) ইমাম-মুজতাহীদ তথা ওলীআল্লাহগণের অনুসরণ করুন (এর পরে আর কোন রাস্তা নেই)।
অনুসরণ বলতে দেখে দেখে আমল করাকিভাবে নামায পড়তে হবেখেতে হবেহাঁটতে হবেচলতে হবেসর্বাবস্থায় দেখে দেখে আমল করাই হচ্ছে অনুসরণ-অনুকরণএতায়াত। আলোচ্য আয়াতে বর্তমানে কোন ব্যক্তির পক্ষে আল্লাহ পাক এবং উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অনুসরণ করা সম্ভব নয়। যেটা সম্ভব সেটা হচ্ছে তৃতীয় স্তর তথা ওলীআল্লাহগণের অনুসরণ। এটা আল্লাহ পাক উনারই আদেশ। কে এই আদেশ অমান্য করতে পারবে???
২. কুরআন শরীফের সূরা কাহাফ ১৭ আয়াত শরীফে এসেছে-
من يهد الله فهو المهتد ومن يضلل فلن تجد له وليا مرشدا
আল্লাহ পাক যাঁকে হিদায়েত দান করেনসেই হেদায়েত পায়। আর যে ব্যক্তি গোমরাহীর মধ্যে দৃঢ় থাকেতার জন্য কোন ওলীয়ে মুর্শিদ (وليا مرشدا) তথা কামিল পীর পাবেন না।
অর্থাৎ স্পষ্ট বুঝা গেল আল্লাহ পাকই তাদের পরিচয় দিলেন যারা গোমরাহ তারা কামিল পীর তথা ওলীআল্লাহগণকে চিনবে না মানবে না।
৩. কুরআন শরীফের সূরা ইউনুস এর ৬২নং আয়াত শরীফে এসেছে-
الا ان اولياء الله لا خوف عليهم ولاهم يحزنون
অর্থঃ নিশ্চয়ই ওলীআল্লাহগণের (اولياء الله) কোন ভয় নেই পেরেশানী নেই। সুবহানাল্লাহ

তাহলে কার সাধ্য আছে উক্ত  আয়াত শরীফকে অস্বীকার করবে। হ্যাঁ সম্ভব যারা কাফির তারা আল্লাহ পাক-এর আয়াত শরীফ অস্বীকার করতে দিধাবোধ করবে না।

মিশকাত শরীফের হাদীস শরীফে এসেছে, “প্রত্যেক মুসলমানদের জন্য ইলম অর্জন করা হচ্ছে ফরজ।” “ইলম দু;প্রকারএকটা হচ্ছে ইলমে ফেকাহ আরেকটা হচ্ছে ইলমে তাছাউফ আর সেই ইলমে তাছাউফকে উপকারী ইলম বলা হয়েছে।” দুটাই অর্জন করা ফরজ।
আর ইলমে তাছাউফের জন্য দরকার পীর ছাহেব বা শায়খের গ্রহণ করা। বড় বড় ইমাম মুজতাহিদ যেনারা ছিলেন উনারা প্রত্যেকই পীর ছাহেব গ্রহণ করেছেন এবং মাযহাবের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। যেমন হযরত ইমাম আযম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি। উনি নিজেই বলেছেন যা ফতওয়ায়ে ছিদ্দিকীয়াতে এসেছেসাইফুল মুকাল্লিদীন কিতাবে এসেছে,
لولا سنتان لهلك ابونعمان
যদি আমি দুটি বছর না পেতাম অর্থাৎ দু’ বছরে দুজন পীরের কাছে বাইয়াত হয়েছিলেনপ্রথমে ইমাম বাকের রহমতুল্লাহি আলাইহি অতপর উনার ইন্তেকালের পর উনার ছেলে ইমাম জাফর সাদিক রহমতুল্লাহি আইলিম।
দুররুল মুখতার কিতাবে এসেছে একটা উসুল বর্ণনা করা হয়েছে- সেটা হচ্ছে,
ما لا يتم به الفرض فهو فرض
যে আমল ব্যতীত কোন ফরজ পূর্ণ হয় না সে ফরজ পূর্ণ করার জন্য ঐ আমল করাও ফরজ।
من ليس له شيخ فشيخه شيطان
যাদের পীর ছাহেব নেই তার পীর ছাহেব বা পথ প্রদর্শক হবে শয়তান। শয়তান তাকে গোমরাহ করবেই।

তাহলে আরেকটি বিষয় স্পষ্ট হল যার পীর ছাহেব নেই বা যারা পীরের বিরুদ্ধে বলবে তাদের পীর হচ্ছে শয়তান। যার কারণেই তারা কুরআন শরীফ দ্বারা প্রমাণিত আওলীয়ায়ে কিরামগণের বিরুদ্ধে বলে থাকে।

আসলে যারা ওলীআল্লাহগণের বিরুধিতা করবে তাদের সম্পর্কে হাদীসে কুদসীতে এসেছে,
من عاد لوليا فقد اذنته بالحرب
যে ব্যক্তি আমার ওলীগণের বিরুধিতা করবে আমি আল্লাহ পাক তার বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণ করি।

সাইয়্যিদুল আউলিয়াগাউছুল আযমহযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লহি আলাইহিম উনি আল্লাহ পাক উনার মাহবুব ওলী।




বিছাল শরীফ :
বাহজাতুল আসরার’ নামক কিতাবে হযরত শায়েখ শিহাবুদ্দীন সোহরাওয়ার্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেনআওলাদে রসূল হযরত গউছুলযম বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি ৫৬১ হিজরী সনের রবীউল আউওয়াল শরীফ মাস হতে কঠিন রোগে আক্রান্ত হন।তাওয়ারিখে আউলিয়া’ নামক কিতাবে হযরত শায়েখ আব্দুল ফতেহ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেনইয়াওমুল আহাদ রোববারদিবাগত রাত্রে অর্থাৎ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম সোমবার শরীফ রাত্রে আওলাদে রসূল হযরত গউছুল যম বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহিআলাইহি তিনি গোসল করেন। গোসলান্তে পবিত্র ইশা উনার নামায পড়ে তিনি নূরে মুজাসসামহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উনার উম্মতগণের গুনাহখতা মাফের জন্য  তাদের উপর খাছ রহমত নাযিলের জন্য দোয়া করলেন। এরপর গায়েব হতে আওয়াজআসল, “হে প্রশান্ত নফ্সআপনি প্রসন্ন  সন্তুষ্ট চিত্তে এবং সন্তুষ্টি প্রাপ্ত হয়ে নিজ প্রতিপালকের দিকে প্রত্যাবর্তন করুন। আপনি আমারনেককার বান্দা উনাদের মধ্যে শামিল হয়ে যান এবং সম্মানিত বেহেশতে প্রবেশ করুন।” এরপর তিনি পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করেতাআজ্জাজা (অর্থ বিজয়ী হওয়াউচ্চারণ করতে লাগলেন এবং তিনি আল্লাহ আল্লাহ আল্লাহ বললেন। এরপর জিহ্বা মুবারক তালুর সাথে লেগেগেল। এইভাবে ৫৬১ হিজরী সনের (১১১৬ ঈসায়ীপবিত্র রবীউছ ছানী মাসের ১১ তারিখে মাহবুবে সুবহানীকুতুবে রব্বানীআওলাদে রসূলহযরত গউছুল যম বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি সুমহান আল্লাহ পাক উনার মহান দরবার শরীফ- প্রত্যাবর্তন করলেন।(ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন)

১। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুল মুরসালীনইমামুল মুরসালীনখাতামুন নাবিইয়ীননূরে মুজাসসামহাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহুআলাইহি ওয়া সাল্লাম
২। ইলাহী বহুরমতে আমীরুল মুমিনীনখলীফাতুল মুসলিমীন হযরত আলী কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম
৩। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম
৪। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম
৫। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম যাইনুল আবিদীন আলাইহিস সালাম
৬। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম বাকির আলাইহিস সালাম
৭। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম জাফর ছাদিক্ব আলাইহিস সালাম
৮। ইলাহী বহুরমতে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মূসা কাযিম আলাইহিস সালাম
৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত ইমাম আলী রিযা আলাইহিস সালাম
১০। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ মারূফ কারখী রহমতুল্লাহি আলাইহি
১১। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আবুল হাসান সাররী সাকতী রহমতুল্লাহি আলাইহি
১২। ইলাহী বহুরমতে হযরত খাজা সাইয়্যিদুত ত্বায়িফা জুনায়িদ বাগদাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি
১৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আবূ বকর শিবলী রহমতুল্লাহি আলাইহি
১৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আব্দুল আযীয বিন হারিছ তামিমী রহমতুল্লাহি আলাইহি
১৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আব্দুল ওয়াহিদ বিন আব্দুল আযীয রহমতুল্লাহি আলাইহি
১৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আবুল ফাররাহ মুহম্মদ তারতুসী রহমতুল্লাহি আলাইহি
১৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আবুল হাসান হাককারী রহমতুল্লাহি আলাইহি
১৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আবূ সাঈদ মুবারক মখদুমী রহমতুল্লাহি আলাইহি
১৯। ইলাহী বহুরমতে ইমামে রব্বানীমাহবূবে সুবহানীগাউছুল আযমসাইয়্যিদুল আওলিয়া হযরত শায়খ সাইয়্যিদ মুহিউদ্দীন আব্দুলক্বাদির জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি ক্বাদিরিয়া তরীক্বার ইমাম। সকলের নিকট তিনি বড়পীর ছাহেব গাউছুল আযম নামে মশহুর
২০। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ সাইয়্যিদ আব্দুর রাযযাক্ব রহমতুল্লাহি আলাইহি
২১। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ শরফুদ্দীন কাত্তাল রহমতুল্লাহি আলাইহি
২২। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আব্দুল ওয়াহহাব রহমতুল্লাহি আলাইহি
২৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ বাহাউদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি
২৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আক্বীল রহমতুল্লাহি আলাইহি
২৫। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ শামসুদ্দীন সাহবাই রহমতুল্লাহি আলাইহি
২৬। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ গাদায়ে রহমান আউয়াল রহমতুল্লাহি আলাইহি
২৭। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ শামসুদ্দীন আরিফ রহমতুল্লাহি আলাইহি
২৮। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ গাদায়ে রহমান ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি
২৯। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ ফাযিল রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩০। ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ কামাল কায়থালী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩১ ইলাহী বহুরমতে হযরত শাহ সিকান্দার কায়থালী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩২। ইলাহী বহুরমতে আফদ্বালুল আওলিয়াইমামে রব্বানীক্বাইয়ূমে আউয়ালমুজাদ্দিদে আলফে ছানী হযরত শায়খ আহমদ ফারূক্বীসিরহিন্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বার ইমাম। তিনিই হযরত বড়পীর ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার খেরকা মুবারক হযরত শাহ সিকান্দারকায়থালী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার মারফত প্রাপ্ত হয়েছেন
৩২। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আদম বিন নূরী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩৩। ইলাহী বহুরমতে হযরত সাইয়্যিদ আব্দুল্লাহ আকবরাবাদী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩৪। ইলাহী বহুরমতে হযরত শায়খ আব্দুর রহীম মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩৫। ইলাহী বহুরমতে রঈসুল মুহাদ্দিছীনমুজাদ্দিদে মিল্লাতহযরত শাহ ওয়ালীউল্লাহ মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩৬। ইলাহী বহুরমতে শায়খুল মাশায়িখ হযরত শাহ আব্দুল আযীয মুহাদ্দিছ দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩৭। ইলাহী বহুরমতে আমীরুল মুমিনীনমুজাদ্দিদে যামান হযরত শাহ সাইয়্যিদ আহমদ শহীদ বেরেলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩৮। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আকতাব হযরত মাওলানা শাহ ছূফী নূর মুহম্মদ নিজামপুরী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৩৯। ইলাহী বহুরমতে ওয়াসিল বিল্লাহআশিক্বে রসূলিল্লাহকুতুবুল ইরশাদ হযরত মাওলানা শাহ ছূফী ফতেহ আলী বর্ধমানী রহমতুল্লাহিআলাইহি
উনাকে রসূলে নোমা বলা হয়। কারণ তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার যিয়ারতকরিয়ে দিতে পারতেন
৪০ ইলাহী বহুরমতে আমীরুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বতমুজাদ্দিদে যামানকুতুবুল আলমশাহ ছূফী আলহাজ্জ হযরত মাওলানাআব্দুল্লাহিল মারূফ মুহম্মদ আবূ বকর ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৪১। (ইলাহী বহুরমতে ওলীয়ে মাদারজাদকুতুবুল আলমসুলত্বানুল আরিফীনহযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নজম মুহম্মদনাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি
(ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আলমক্বাইয়ূমে যামানশায়খুল মাশায়িখহযরত মাওলানা শাহ ছূফী আবূ নছর মুহম্মদ আব্দুল হাইছিদ্দীক্বী ফুরফুরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি
৪২। ইলাহী বহুরমতে কুতুবুল আলমআমীরুশ শরীয়তমাহতাবে তরীক্বতসুলত্বানুল আরিফীনমাহিয়ে বিদয়াতমুহইয়ে সুন্নাতমুজাদ্দিদে যামানহুজ্জাতুল ইসলামতাজুল মুফাসসিরীনরঈসুল মুহাদ্দিছীনফখরুল ফুক্বাহা আলহাজ্জ হযরত মাওলানা শাহ ছূফীআবুল খায়ের মুহম্মদ ওয়াজীহুল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহি
তিনি উপরোক্ত উনাদের দুজন থেকেই খিলাফত প্রাপ্ত হন। তবে উনার প্রধান শায়খ হচ্ছেন হযরত নাজমুস সায়াদাত ছিদ্দীক্বীরহমতুল্লাহি আলাইহি
৪৩। ইলাহী বহুরমতে খলীফাতুল্লাহখলীফাতু রসূলিল্লাহইমামুশ শরীয়ত ওয়াত তরীক্বতইমামুল আইম্মাহমুহইস সুন্নাহকুতুবুল আলমমুজাদ্দিদে আযমগওছুল আযমইমামে আযমহুজ্জাতুল ইসলামসুলত্বানুলআরিফীনসাইয়্যিদুল আওলিয়াছাহিবু সুলত্বানিন নাছীরক্বইয়ূমুয যামানজাব্বারিউল আউয়ালক্বওিইয়ুলআউয়ালহাবীবুল্লাহআওলাদে রসূলসাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম সাইয়্যিদ মুহম্মদ দিল্লুর রহমান আলাইহিস সালাম
তিনিই সারা বিশ্বে সমাদৃতপ্রশংসিতগ্রহণযোগ্য  হক্ব সিলসিলা রাজারবাগ শরীফ-এর সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম।তিনিই হিজরী পঞ্চদশ শতাব্দীর মুজাদ্দিদ
আয় বারে ইলাহীউনাদের ওসীলায় আমাদের উপর আপনার খাছ রহমতমুহব্বত  মারিফত এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূরপাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খাছ তাওয়াজ্জুহফায়িযযিয়ারতমুহব্বত  মারিফাত দান করুন। সুন্নতের পূর্ণ পায়রবীকরার তাওফীক দিন। যাহিরী  বাতিনী দৃঢ়তা আর ইহকাল  পরকালের সুস্থতা দান করুন। এই সকল বুযুর্গানে দ্বীন উনাদের ফুয়ূজাতবারাকাত  কামালাতের পূর্ণ হিসসা নছীব করুন

আব্দুল কাদের জিলানী হলেন ইসলাম ধর্মে অন্যতম প্রধান আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ত্ব। তিনি ইসলামের অন্যতম প্রচারক হিসাবে সুবিদিত; সেকারণে তাকে 'গাউস-উল-আজম' হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।[৯] ইসলাম ধর্মমতে তাকে 'বড়পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ)' নামে ব্যক্ত করা হয়। আধ্যাত্মিকতায় উচ্চমার্গের জন্য বড়পীর, ইরাকের অন্তর্গত 'জিলান' নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করায় জিলানী, সম্মাণিত হিসাবে আবু মোহাম্মদ মুহিউদ্দীন প্রভৃতি উপাধি ও নামেও তাকে সম্বোধন করা হয়।

জন্ম[সম্পাদনা]

আব্দুল কাদের জিলানী (রহঃ) হিজরি ৪৭১ সনের রমজান মাসের ১ তারিখে বাগদাদ নগরের জিলান শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তার পিতার নাম আবু সালেহ মুছা জঙ্গী এবং মাতার নাম সাইয়েদা উম্মুল খায়ের ফাতেমা। তার মাতা ছিলেন হাসান ইবনে আলীর বংশধর সৈয়দ আব্দুল্লাহ সাওমেয়ীর কন্যা।[৯]

ধর্ম প্রচার[সম্পাদনা]

চিত্র:আবদুল কাদের জিলানী.jpg
আবদুল কাদের জিলানী
শিক্ষা-দীক্ষায় পূর্ণতা অর্জনের পর তিনি নিজেকে পবিত্র ইসলাম ধর্ম প্রচারের কাজে নিয়োজিত করেন। বিভিন্ন মাহফিলে তিনি ইসলামের সুমহান আদর্শ যুক্তিপূর্ণ ভাষায় বর্ণনা করতেন। তার মহফিলে শুধু মুসলমান নয়, অনেক অমুসলিমও অংশগ্রহণ করতো। তার বক্তব্য শুনে অনেক অমুসলিম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন।[১০]

বই[সম্পাদনা]

তিনি কাব্য, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ের পণ্ডিত ছিলেন। তার রচিত বহু গ্রন্থ রয়েছে। এসব গ্রন্থের মধ্যে ফতহুল গায়ের গুনিয়াতুত তালেবীন, ফতহুর রবযানী, কালীদায়ে গাওসিয়া উল্লেখযোগ্য।[১০]

ইন্তেকাল[সম্পাদনা]

হিজরী ৫৬১ সালের ১১ রবিউসসানী আব্দুল কাদের জিলানী (র.) পরলোক গমন করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। বড়পীর সাহেবের এই ওফাতের দিন সারা বিশ্বের মুসলমানরা প্রতি বছর অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করে থাকেন এবং তার মৃত্যুবার্ষিকী ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম হিসেবে পরিচিত।[১০]




জুবায়ের আল মাহমুদ রাসেল: ইসলামের মহান বানী মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য দুনিয়াতে যুগে যুগে যেসকল ওলি আল্লাহর আবির্ভাব ঘটেছে তন্মধ্যে বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) অন্যতম। সেকারণে তাঁকে গাউসুল আজম হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়।
জন্ম ও পরিচয়:
বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) ২য় রমযান ৪৭০ হিজরী বা ১৯ মার্চ, ১০৭৮ বাগদাদের জিলান শহরে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর পুরো নাম আল-সাইয়িদ মহিউদ্দীন আবু মুহাম্মদ আব্দুল কাদির আল-জিলানী আল-হাসানী ওয়াল-হুসানী। তাঁর পিতার নাম আবু সালেহ মুছা জঙ্গী। মাতার নাম সাইয়েদা উম্মুল খায়ের ফাতেমা। তিনি ছিলেন হজরত ইমাম হাসান (রা.) এর বংশধর। বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) এর জন্ম ইরাকের অন্তর্গত জিলান নামক স্থানে হয় বলে তাকে জিলানী বলা হয়। তার উপাধি ছিল আবু মোহাম্মদ মুহিউদ্দীন।
ছোটবেলা:
হযরত আব্দুল কাদির জিলানী(র:) এর বয়স যখন মাত্র ৫ বৎসর তখনই তিনি পিতৃহীন হন। তার লালন-পালন ও পড়াশোনার দায়িত্ব এসে পড়ে মায়ের উপর।মা চরকায় সুতা কেটে জিবীকা নির্বাহ করতে শুরু করেন।মাতা পুত্রকে কখনও কখনও অনাহারে অর্ধাহারে দিন কাটাতে হয়।যেদিন ঘরে কিছু খাবার না থাকতো তখন মা বলতেন,”আজ আমরা আল্লাহপাকের মেহমান।”খুব অল্প বয়সেই হযরত আব্দুল কাদির জিলানী(র:) মকতবে যাওয়া শুরু করেন।বাল্যবয়সেই বিভিন্ন আলৌকিক ঘটনাও ঘটতে শুরু করে।একবার সমবয়সী বালকদের সাথে খেলায় যোগ দেয়ার ইচ্ছা করলে গায়েবী আওয়াজ এলো,”হে বরকতময় সত্তা ,আমারকাছে এসো!”কথা শোনা গেলেও কন্ঠটি কার বা কোথ্থেকে এলো কিছুই তিনি বুঝতে পারলেন না।তাছারা কোন লোকও তিনি সেখানে দেখতে পেলেন না।তাই ভয়ে দৌড়ে তিনি ময়ের কাছে চলে এলেন। এরকম আরো বহুবার হয়েছে।একবার নিদ্রাকাতর অবস্হায় সুখময় নিদ্রা যাচ্ছিলেন।
এমন সময় ঘুমের ঘরে তিনি স্বপ্নে দেখিলেন-একজন উজ্জল জ্যোতিবিশিষ্ট স্বর্গীয় ফিরেশতা তাহার শিয়রের নিকট এসে অত্যন্ত কোমল স্বরে বলিতেছেন- ”হে আল্লাহর মনোনিত আব্দুল কাদির!উঠ,আর নিদ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে থেক না।সুখ শয্যার কোলে ঢলে পড়বার জন্য এই পৃথিবিতে তোমার আগমন ঘটেনি।তোমার কর্তব্য ও দায়িত্ব সুদুরপ্রসারী! মোহগ্রস্হ,নিদ্রাচ্ছন্ন জনগনকে নিদ্রার মোহ থেকে মুক্ত করিবার জন্যই তোমার আগমন ঘটেছে।
শিক্ষা জীবন ও ধর্ম প্রচার:
হযরত আব্দুল কাদির জিলানী(র:) এর বাল্য শিক্ষার হাতে খড়ি হয়েছিল জ্ঞানবান পিতা ও গুনবতী মাতার মাধ্যমে।তিনি স্বীয় পিতা -মাতার মাধ্যমেই প্রথমিক স্তরের শিক্ষনীয় বিষয়গুলি গৃহে বসেই সমাপ্ত করেছিলেন।সর্বপ্রথমেই তিনি পবিত্রকোরান পাঠ করা শিক্ষা করেন ও সম্পুর্ন কোরান হেফজ করেন।গৃহশিক্ষার বাইরেও তিনি জিলান নগরের স্হানীয় মক্তবেও বিদ্যা শিক্ষা করেছিলেন।একবার তিনি মক্তবে উপস্হিত হলে সেখানে বসার জন্য কোন স্হান পাচ্ছিলেন না।এমন সময় অদৃশ্য হতে আওয়াজ হলো,”হে শিক্ষার্থীগন!এই বালকের জন্য তোমরা একটু স্হান করে দাও,যাহাতে তিনি বসতে পারেন।” কেহই আওয়াজের দিকে তেমন লক্ষ্য দিল না।পরিশেষে আবার গম্ভীর কন্ঠে দৈববানী ঘোষিত হলো, ”হে শিক্ষার্থীগন!তোমরা কি দেখিতএ পাইতেছ না যে,আল্লাহর প্রিয় অলী দ্বারে দাড়িয়ে আছে ? উঠ,তাহাকে সসিবার স্হান করে দাও। অযথা বিলম্ব করে সময় অপচয় কর না।”এই অদৃশ্য বানী ছাত্র শিক্ষক সকলের কর্নেই ভীষনভাবে আঘাত করল।সকলেই হতচকিত ও বিস্ময়াপন্ন হয়ে গেল এবং বড় পীর আব্দুল কাদির র: কে বসবার স্হান করে দিল। তার প্রখর ধীশক্তি,প্রত্যুতপন্নমতিত্ব ও আল্লাহ প্রদত্ত প্রজ্ঞার ফলে বাল্যকালেই তিনি অসাধারন পান্ডিত্য অর্জন করতে সক্ষম হন। কোন এক জিলহজ্ব মাসের ৯ম দিবসে শহর ছেরে গ্রামের দিকে গেলেন।সেখানে এক গাভীর গায়ে হাত দিতেই গাভীটি তার দিকে তাকালো এবং বলতে লাগলো,”হে হযরত আব্দুল কাদির !আল্লাহ পাক তোমাকে কৃষিকাজের জন্য সৃষ্টি করেন নি বা জীবিকা অর্জনের হুকুমও তোমাকে দেননি”গাভীর মুখে কথা শুনতে পেয়ে ভীত সন্ত্রস্হ অবস্হায় বাড়ী ফিরে এলেন এবং মনের উদ্বেগে ঘরের ছাদে উঠে নানা কথা ভাবছিলেন।এমনসময় তিনি দেখতে পেলেন মক্কা শরীফ পর্যন্ত সমস্ত এলাকা তার সামনে উন্মুক্ত । চোখের সামনে তিনি আল্লাহর ঘর দেখতে পেলেন।তিনি আরো দেখতে পেলেন আরাফাতে হাজ্বী সাহেবরা অবস্হান করছেন।অতএব গায়বী ইঙ্গিতের মর্ম বোঝতে চেষ্টা করে তিনি মাকে দ্বীনী উচ্চশিক্ষার জন্য বাগদাদ গমনের ইচ্ছার কথা জানালেন।মা হৃষ্টচিত্তে অনুমতি দিয়ে তার পাথেয় প্রস্তুতিতে লেগে গেলেন।রওনার দিন জামার ভেতরে ৪০টি স্বর্নমুদ্রা সেলাই করে দিয়ে তার মা বললেন,”আল্লাহর নাম নিয়ে রওয়ানা হও।সততা ও বিশ্বস্ততাকে নিজের আদর্শরুপে শক্ত হাতে ধারন করবে।”
ঘটনাক্রমে রাস্তায় ডাকাত পড়লো।এক ডাকাত শিশু আব্দুল কাদিরকে তার কাছে কিছু আছে কিনা জিজ্ঞেস করলো।তিনি অকপটে স্বীকার করলো জামার ভিতর সেলাইকরা ৪০টি স্বর্নমুদ্রার কথা।বালকের সততায় ও সরলতায় ডাকাত মুগ্ধ হয়ে জিজ্ঞেস করলো,এবিপদের মুহুর্তে লোকেরা প্রকাশ্য সম্পদও গোপন ফেলে আর তুমি এ গোপন সম্পদের কথা কেন আমাকে দিলে ? বালক আ্ব্দুল কাদির জবাব দিল,”আমার আম্মা আমাকে সর্বদা সত্য কথা বলার উপদেশ দিয়েছেন।”
আল্লাহওয়ালাদের কথায় এমন প্রভাব থাকে যা পাষান হৃদয়ও একমুহুর্তে গলিত হতে পারে।ডাকাত সর্দার কাদতে শুরু করলো এবং বলল,”এবালকটি তার মায়ের নির্দেশ এত বিপদের মধ্যেও যেভাবে মানল ,আমি কি আমার সৃষ্টিকর্তা প্রভর হুকুম কি এভাবে মানছি ?আমিতো অর্থ-সম্পদের লোভে মহান মহান মালিকের অবাধ্য হয়ে শত শত মানুষের সর্বনাশ করছি”।কাফেলার লুন্ঠিত সম্পদ ফিরিয়ে দিয়ে ডাকাত তার গোটা দলশ তওবা করে ডাকাতি ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এলো ।বলা হয় এই ব্যক্তিটিই নাকি পরবর্তীতে আল্লাহর এক ওলীতে পরিনত হয়েছিলেন।আল্লাহুআলম।
উচ্চশিক্সার জন্য তিনি ৪৮৮ হিজরীতে যখন প্রথম তিনি বাগদাদ গমন করেন তখন তার বয়স হয়েছিল আঠার বৎসর।বাগদাত এসে তিনি শায়েখ আবু সাইদ ইবনে মোবারক মাখযুমী হাম্বলী,আবুল ওয়াফা আলী ইবনে আকীল এবং আবু মোহাম্ম ইবনে হোসাইন ইবনে মুহাম্মদ র: এর নিকট ইলমে ফিখ,শায়েখ আবু গালিবমুহাম্মদ ইবনে হাসান বাকিল্লানী,শায়েখ আবু সাইদ ইবনে আব্দুল করীম ও শায়েখ আবুল গানায়েম মুহম্মদ ইবনে আলী ইবনে মুহম্মদ র: প্রমুখের নিকট এলমে হাদীস এবং শায়েখ আবু যাকারিয়া তাবরেয়ী র: নিকট সাহিত্যের উচ্চতর পাঠ লাভ করেন।শায়খ জীলানীর বাহ্যিক ও আধ্যাত্নিক জ্ঞান চর্চার গূরু শায়খ আবু সাঈদ মাখযুমীর মনে তরুন এ শিষ্যের যোগ্যতা ও প্রতিভা সম্পর্কে এতই সুধারনা ও আস্হাশীলতার সৃষ্টি করল যে, নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত মাদরাসা তত্তাবধান ও পরিচালনার দায়িত্ব বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)এর নিকট অর্পন করে তিনি নিজে অবসর গ্রহন করেন।
তখন তিনি এ মাদ্রাসার উন্নতি ও উৎকর্ষের কাজে আত্ননিয়োগ করেন।হাদীস ,তাফসির,ফিকহ ও অন্যান্য জ্ঞান বিজ্ঞানের শিক্ষাদান নিজেই শুরু করেন। পাশাপাশি ওয়াজ নসিহত ও তাবলিগের কর্মসুচীও চালু করেন ।অল্পদিনের মধ্যেই এ প্রতিষ্ঠানের সুনাম চারিদিকে ছরিয়ে পড়লো এবং দেশ বিদেশের বিদ্যার্থীরা এতএ ছুটে আসতে লাগলো।এ পর্যায়ে মাদরাসার নামকরনও শায়খের সাথেই সম্পৃক্ত হয়ে ‘মাদরাসায়ে কাদেরিয়া” হয়ে গেল।
বই
তিনি কাব্য, সাহিত্য, ইতিহাস, দর্শন, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়ের পণ্ডিত ছিলেন। তার রচিত বহু গ্রন্থ রয়েছে। এসব গ্রন্থের মধ্যে ফতহুল গায়ের গুনিয়াতুত তালেবীন, ফতহুর রবযানী, কালীদায়ে গাওসিয়া উল্লেখযোগ্য।
মৃত্যু
হিজরী ৬৬২ সালের ১১ রবিউসসানী বড় পীর হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.) পরলোক গমন করেন। তার বয়স হয়েছিল ৯১ বছর। বড়পীর সাহেবের এই ওফাতের দিন সারা বিশ্বের মুসলমানরা প্রতি বছর অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে পালন করে থাকেন এবং তার মৃত্যুবার্ষিকী ফাতেহা-ই-ইয়াজদাহাম হিসেবে পরিচিত।

সাততেতৈয়া

শরিয়ত,তরিকত,হাকিকত ও মারফত কাকে বলে? বিস্তারিত?

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

তাজবীদ

জামে মসজিদ নীতিমালা