অপরাধ শুধু ঘোড়ারই
ঘটনা এক:-
করোনায় ভয়াবহকালে অনেক গার্মেন্টস বন্ধ হয়ে যায়। তবে কিছু গার্মেন্টস চালু থাকে এবং প্রচুর উৎপাদন করে। কারণ সেসব গার্মেন্টস পণ্যের বৈদেশিক চাহিদা ছিল প্রচুর। সেসব গার্মেন্টস ঈদের ছুটিও দেয়নি শ্রমিকদের। ফলাফল শ্রমিকদের কিছু রুটি রুজির ব্যবস্থা হলেও গার্মেন্টস মালিক/ব্যবসায়ী প্রচুর লাভবান হয়েছে।
ঘটনা দুই:-
করোনায় ঔষধ কারখানা চালু ছিল লক্ষণীয়ভাবে। কিছু সিজনাল ঔষধের প্রচুর চাহিদা হয়েছিল করোনাকালে। অনেক ঔষধ চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে হিমশিম খেতে হয়েছে ঔষধ কোম্পানীগুলোকে। ঔষধ শিল্পে জড়িত শ্রমিক বা কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের কাজের চাপ বেড়ে গিয়েছিল আশাতীতভাবে। ফলাফল সাধারণ মানুষ ঔষধ পেয়েছে, ঔষধ শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মকর্তা কর্মহীনতা থেকে রক্ষা পেয়েছে। তবে প্রচুর লাভ করেছে ঔষধ কোম্পানীর মালিকরা।
ঘটনা তিন:-
করোনায় বাংলাদেশ পুলিশ যে কাজ করেছে তা পৃথিবীর অন্য কোন দেশের পুলিশ এমন সার্ভিস দিয়েছে কিনা জানা নেই। মাসের ত্রিশ দিনই দিনরাত কাজ করেছে সকল পুলিশ সদস্যরা। এমন কোন সেবা নেই যা করেনি পুলিশ। অন্য প্রায় সকল পেশার লোকজন ছুটি উপভোগ করেছেন এ সময়টা। ডাক্তারসহ স্বাস্থ্য বিভাগের লোকজন সাতদিন ডিউটি করে একুশ দিন বিশ্রাম নিয়েও প্রণোদনা পাচ্ছেন। ব্যাংকাররা মাসে দশদিন অফিস করে ডবল বেতন নিচ্ছেন। আর পুলিশ মাসের ত্রিশদিন কোন বিরতি ছাড়া নিজ কর্তব্যের বাইরে কাজ করে শুধু করোনায় মৃত্যু হলেই পরিবারকে কিছু সরকারি সহায়তা দিয়ে গেছেন। আর যারা করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে আছেন তারা হাহুতাশ করছেন। ফলাফল বাংলাদেশ করোনা মোকাবেলায় অন্য দেশের নিকট থেকে প্রশংসা পেয়েছে। আর পুলিশ সাময়িক বাহবা পেয়েছিল, এখন সবাই ভুলে গেছে। সেসময় যারা পুলিশের সেবা পেয়ে ধন্য হয়েছিল আজ তারা গালি দিতেও পিছনে তাকায় না। এমন ক্ষণে মনে পড়ে যায় কবিতার চার লাইন-
প্রাণপণ দৌড়ায় ঘোড়া
পুরস্কৃত হয় সওয়ারি,
বাজীর দানে হেরে গেলে
অপরাধ শুধু ঘোড়ারই।