অর্থনীতি ছেড়ে জাত–ধর্ম নিয়েই বেশি ব্যস্ত মোদি’ মন্তব্য মার্কিন অর্থনীতিবিদের
সংবাদ সংস্থা, দিল্লি: কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন যতই ১০২ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনার কথা শোনান, নতুন বছরে অর্থনীতির হালহকিকত নিয়ে মোদি সরকারের জন্য আশার কথা শোনাতে পারলেন না মার্কিন অর্থনীতিবিদ স্টিভ হাঙ্কে। উল্টে তাঁর মন্তব্য, ২০২০ আর্থিক বছরে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫%–এ ধরে রাখতে রীতিমতো বেগ পেতে হবে ভারতকে। এখন জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাপ্লায়েড ইকনমিক্স পড়ান হাঙ্কে। একদা ছিলেন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রেগানের কাউন্সিল অফ ইকনমিক অ্যাডভাইজার্সদের অন্যতম সদস্য। হাঙ্কের মতে, ভারতের অর্থনীতিতে একসময় এলোমেলো ঋণের ছড়াছড়ি ছিল। সেগুলো জমে জমেই অনাদায়ী ঋণের পাহাড় এখন সমস্যা তৈরি করেছে। এর জেরে মূলত সমস্যায় পড়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলি। তাঁর মতে, ‘ঋণ সঙ্কোচনের কারণেই ভারতের অর্থনীতি ঝিমিয়ে পড়েছে। কাঠামোগত সমস্যা না হলেও এই সঙ্কট ঘুরে ঘুরে আসে। এই কারণেই ২০২০ সালে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশে ধরে রাখতে ভারতকে রীতিমতো লড়াই করতে হবে।’ অর্থনীতির এখনকার পরিস্থিতির জন্য মোদিকেই পুরোপুরি দায়ী করেছেন এই মার্কিন অর্থনীতিবিদ। তাঁর মতে, কড়া ধরনের প্রয়োজনীয় অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়ার আদৌ কোনও আগ্রহ নেই মোদি সরকারের। বড়সড় আর্থিক সংস্কার করতেও মোদি সরকার ব্যর্থ। তিনি বলেন, ‘উল্টে মোদি সরকার মাত্র দুটো জিনিসে নজর দিয়ে রেখেছে। সে দুটি বিষয় হল জাতি ও ধর্ম। এই ইস্যুগুলিই অস্থিরতা তৈরি করে এবং সম্ভাবনার দিক থেকে বিস্ফোরক চরিত্রের। এটা একটা ভয়ঙ্কর ককটেল। অনেকেই মনে করেন যে মোদির আমলে ভারত ‘বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্র’ থেকে ‘বিশ্বের বৃহত্তম পুলিশ রাষ্ট্র’–এ পরিণত হয়েছে।’ হাঙ্কের মতে, ভারত অত্যন্ত সংরক্ষণবাদী রাষ্ট্র। এতদিন এদেশ ছিল বিশ্বের দ্রুত বিকাশশীল বৃহৎ অর্থনীতি। অথচ এখন দেশের জিডিপি কমতে কমতে এসে দাঁড়িয়েছে ৪.৫ শতাংশে। এটা ২০১৯–২০–র সেপ্টেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকের ফল। এবং গত ৬ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম জিডিপি বৃদ্ধির হার। হাঙ্ক জানিয়েছেন, এর কারণ হল দেশে বিনিয়োগ কমেছে, এর জেরে আয় কমায় কমেছে উপভোগ। আর্থিক সঙ্কটে পড়েছেন গ্রামীণ পরিবারগুলি এবং নতুন কাজ প্রায় তৈরিই হচ্ছে না।