কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী
কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী
কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকী | |
---|---|
কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকীর মাজার শরীফ, মেহরাউলি, দিল্লি।
| |
ধর্ম | ইসলাম, চিশতিয়া তরিকা |
বংশ | চিশতিয়া তরিকা |
অন্যান্য নাম
| মালিক উল মাশায়খ |
ব্যক্তিগত | |
জন্ম | ১১৭৩ আউশ , বর্তমানে কিরিগিস্তান |
মৃত্যু | ১২৩৫ দিল্লী |
সমাধিস্থল
| মেহরাউলি, দিল্লী ২৮.৫১৯৩০৩° উত্তর ৭৭.১৭৯৮৫৬° পূর্ব |
জ্যেষ্ঠ পোস্টিং | |
ভিত্তিক | দিল্লি |
খেতাব | قطب الاقطاب Qutub ul Aqtab “কুতুবুল আকতাব” |
অফিসে কার্যকাল
| এয়োদশ শতাব্দির শুরুর দিকে |
পূর্বসূরী | মইনুদ্দিন চিশতী |
উত্তরসূরী | ফরিদউদ্দিন গঞ্জেশকার |
প্রাথমিক জীবন
দিল্লী গমন
দিল্লী সালতানাতের প্রতিষ্ঠাতা ইতুতমিশের (১২১১-১২৩৬) এর অবসরের সময় নিজ পীরের, মঈনুদ্দিন চিশতি, একান্ত ইচ্ছায় খাজা বখতিয়ার দিল্লিতে চলে যান এবং সেখানেই বসবাস করতে থাকেন। বখতিয়ারের আধ্যাত্বিক ক্ষমতা ও দক্ষতা এবং মানবতার অপার মহিমা অবলোকন করে প্রচুর মানুষ প্রায় তাঁর সাক্ষাত লাভে প্রতিদিনি আসা যাওয়া করতেন। তিনি এই আধ্যাত্বিক পথে সাধারণ মানুষকে বায়াত দানও শুরু করে দিয়েছিলেন।ফলাফলের বা প্রতিদানের আশা না করে অভাবগ্রস্থদের সাহায্য করার মতাদর্শের বিশ্বাসী ছিলেন তিনি। তাঁর বিশিষ্ট শিষ্য, ফরিদউদ্দিন গঞ্জেশকার , তাঁকে কবচের (তাবিজ) বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন করেন যেগুলো ছিল বির্তকিত কেননা এগুলো ইসলামে মূর্তিপূজার মত ধর্মীয় সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। এর উত্তরে কাকি বলেন, ইচ্ছা বা বাসনার পরিপূর্ণতা হওয়া কোন কিছুর উপর নির্ভর করে না, কবচ বা তাবিজে আল্লাহর নাম এবং তাঁর কথা বা আয়াত রয়েছে এবং এগুলো মানুষকে দেয়া যাবে। সেমায় নিমগ্ন হয়ে তিনি চিশতিয়া তরিকার আধ্যাত্বিক সঙ্গীতের ঐতিহ্যকে বজায় রাখেন এবং আরো সমৃদ্ধ করেন। ধারণা করা হয় যে হিন্দু ধর্মে ভক্তি নিবেদনের সঙ্গীতের সাথে সুরের সমন্বয় করা হয়, যাতে স্থানীয় মানুষদের সাথে সর্ম্পক স্থাপনের সহায়ক হিসেবে কাজ করে এবং দুই সম্প্রদায়ের মাঝে পারষ্পরিক সমন্বয় সহজ হয়।] ১৪ রবিউল আউয়াল ৬৩৩ হিজরীতে (২৭ নভেম্বর ১২৩৫ খ্রিস্টাব্দ) তিনি একটি সেমা মাহফিলে অংশগ্রহণ করেন যেখানে কবি আহমদ-এ-জাম নিম্নোক্ত পংক্তিটি গেয়ে শুনান:
“ | যারা আত্মসর্ম্পণের খঞ্জরে নিহত হয়েছে, অদৃশ্য থেকে তাঁরা প্রতিনিয়ত নব জীবন প্রাপ্ত হয়। |
” |
কাকী উপাধির ঘটনা
কাকি নামটি দিল্লীর দিল্লির একটি ঘটনার পর তাঁর উপাধি হিসেবে যুক্ত হয়।ঘটনাসুরে, তিনি তাদের চরম দরিদ্রতা, দারিদ্র সত্ত্বেও স্থানীয় রুটিওয়ালা থেকে ঋণ না নিতে তিনি তাঁর স্ত্রীকে নিষেদ করেন। পরবর্ তিনি স্ত্রীকে বলেন, যখনই প্রয়োজন হবে তখন ঘরের এক কোণা থেকে যেন কাক (এক ধরনের রুটি) নেন। এরপর, যখনই প্রয়োজন হত আশ্চর্জনকভাবে তারঁ স্ত্রী ঘরের কোণা থেকে কাক পেয়ে যেত। ইতিমধ্যে রুটিওয়ালা এটা ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ল যে, কেন খাজা ঋণ নেয়া বন্ধ করে দিল। তিনি চিন্তা করলেন হয়ত তিনি প্রায়শ খাজার সাথে রাগারাগি করতেন, সেজন্য খাজা ঋণ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে, রুটিওয়ালার স্ত্রী কুতুবউদ্দিনের স্ত্রীর কাছ থেকে এর কারণ জানতে চাইলেন। তিনি তাকে কাক এর আশ্চর্ জনক ঘটনাটি বর্ণা করলেন। এই গোপন রহস্যটি উন্মোচিত হওয়ার পর যদিও কাক আসা বন্ধ হয়ে যায়, ঐ দিন থেকে মানুষ কুতুবউদ্দিকে কাকি নামে সম্বোধিত করতে থাকে।মতাদর্শ
চিশতিয়া তরিকার অন্যান্য সাধকদের মত খাজা বখতেয়ার কাকি কোন আনুণ্ঠানিক মতবাদ প্রণয়ন করেননি। তিনি সবসময় মজলিসের আয়োজন করতেন যেখানে তিনি তরিকতের গোপন রহস্য তত্ত্ব নিজ শিষ্যদের কাছে উন্মোচিত করতেন। জনসাধারণের মধ্যে পরিচালিত এই মজলিসে যেসব বিষয়ের উপর জোর দেয়া হতে সেগেুলো হল- আত্ম-ত্যাগ ও বাসনা শূণ্য প্রেম, আল্লাহর উপর সম্পূর্ বিশ্বাস, সকল মানুষকে একইরূপ আচরণ করা এবং যঘাসাধ্য তাদের সাহায্য করাসহ ইত্যাদি। তাকে যেসব অর্ দান করা হত, তিনি সে দিনই ঐ অর্ দান করে দিতেন। ফলাফলের বা প্রতিদানের আশা না করে অভাবগ্রস্থদের সাহায্য করার মতাদর্কের বিশ্বাসী ছিলেন তিনি।প্রভাব
সূফি সধক হিসেবে খাজা বখতেয়ার কাকি মানুষের উপর প্রচন্ডভাবে প্রভাব বিস্তার করতে থাকেন। তিনি তখনকার সরকারের সাথে জড়িত না থাকার নীতি অব্যাহত রাখেন। এটি দক্ষিণ এশিয়ার চিশতিয়া তরিকার সাধকদের পরম্পরা যে,তার মনে করেন শাসকগোষ্ঠী এবং সরকারের সাখে সম্পর্ তাদেরকে দুনিয়াবি চিস্তা ভাবনার মধ্যে ডুবিয়ে রাখতে পারে।কুতুবউদ্দিন বখতিয়ার কাকীর উপাধি
- কুতুব-উল-আকতাব
- মালিক- উল - মাশায়খ
- রাইস-উস-সালেকীন
- সিরাজ-উল-আউলিয়া