মসজিদ থেকে বের হওয়ার বিধান


 ইতিকাফকারী যদি বিনা প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হয় তাহলে তার ইতিকাফ ভঙ্গ হয়ে যাবে।
 আর ইতিকাফের স্থান থেকে যদি মানবীয় প্রয়োজন মিটানোর জন্য বের হয় তাহলে ইতিকাফ ভঙ্গ হবে না।
 মসজিদে থেকে পবিত্রতা অর্জন সম্ভব না হলে মসজিদ থেকে বের হওয়ার অনুমতি আছে।
 বাহক না থাকার কারণে ইতিকাফকারীকে যদি পানাহারের প্রয়োজনে বাইরে যেতে হয় অথবা মসজিদে খাবার গ্রহণ করতে লজ্জাবোধ হয়, তবে এরূপ প্রয়োজনে বাইরে যাওয়ার অনুমতি আছে।
 যে মসজিদে ইতিকাফে বসেছে সেখানে জুমার নামাযের ব্যবস্থা না থাকলে জুমার নামায আদায়ের প্রয়োজনে মসজিদ থেকে বের হওয়া ওয়াযিব, এবং আগে ভাগেই রওয়ানা হওয়া তার জন্য মুস্তাহাব।
 ওজরের কারণে ইতিকাফকারী মসজিদ থেকে বের হতে পারে। ছাফিয়্যা রা. থেকে বর্ণিত হাদিস এর প্রমাণ : অর্থাৎ ছাফিয়্যা রাদিআল্লাহু আনহা রমজানের শেষ দশকে ইতিকাফস্থলে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে সাক্ষাৎ করতে এলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সাথে কতক্ষণ কথা বললেন, অতঃপর যাওয়ার জন্য উঠে দাঁড়ালেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও তাকে বিদায় দিতে উঠে দাঁড়ালেন। [সহীহ বখুারী]
 কোন নেকির কাজ করার জন্য ইতিকাফকারীর মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়। যেমন রোগী দেখতে যাওয়া, জানাজায় উপস্থিত হওয়া ইত্যাদি।
 ইতিকাফ-বিরুদ্ধ কোন কাজের জন্য ইতিকাফকারীর মসজিদ থেকে বের হওয়া বৈধ নয়, যেমন  ক্রয়-বিক্রয়, স্বামী-স্ত্রীর মিলন ইত্যাদি।
ইতিকাফকারীর জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ :  ইবাদত আদায়, যেমন নামায, কুরআন তিলাওয়াত, জিকির ও দু'আ ইত্যাদি। কেননা ইতিকাফের উদ্দেশ্য হল আল্লাহ তা'আলার সমীপে অন্তরের একাগ্রতা নিবেদন করা এবং তাঁর প্রতি আকৃষ্ট হওয়া যা উপরোক্ত ইবাদত আদায় ছাড়া সম্ভব নয়।
 অনুরূপভাবে যেসব ইবাদতের প্রভাব অন্যদের পর্যন্ত পৌঁছায় যেমন সালামের উত্তর দেয়া, সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে বারণ, প্রশ্নের উত্তর দেয়া, পথ দেখানো, ইলম শিক্ষা দেয়া কুরআন পড়ানো ইত্যাদিও করতে পারবে। কিন্তু শর্ত হল এগুলো যেন এত বেশি না হয় যে ইতিকাফের মূল উদ্দেশ্যই ছুটে যায়।
 ইতিকাফকারীর জন্য মুস্তাহাব হল তার ইতিকাফের স্থানে কোন কিছু দ্বারা পর্দা করে নেয়া। কেননা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তুর্কি গম্বুজের ভিতরে ইতিকাফ করেছেন যার দরজায় ছিল চাটাই।
 ইতিকাফকারী তার প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র সঙ্গে নেবেন যাতে নিজের প্রয়োজনে তাকে বার বার মসজিদের বাইরে যেতে না হয়। যেমন ঃ এলার্ম ক্লক, বালিশ, চাদর, বিছানোর কম্বল, তেল, সাবান, শ্যম্প,ু লোশন, টুথ ব্রাশ-পেস্ট, মিসওয়াক, ওষুধ-পত্র, টাউয়াল, দশদিন ব্যবহারের কাপড়-চোপড়, পড়াশোনার জন্য কুরআনের অর্থসহ তাফসীর এবং অন্যান্য ইসলামী বই-পত্র। এছাড়া কোন জিনিস প্রয়োজন হলে পবিরারের লোকজন তা দিয়ে যেতে পারবে। খাবারের ব্যবস্থা সাধারণত মসজিদ ম্যানেজমেন্টই করে থাকে।

ইতিকাফকারীর জন্য যা অনুমোদিত :
 ইতিকাফকারীর জন্য মসজিদে পানাহার ও ঘুমানোর অনুমতি আছে। এ ব্যাপারে সকল ইমামদের ঐকমত্য রয়েছে। তবে এ ব্যাপারে সতর্ক হওয়া উচিত; কেননা আল্লাহর প্রতি একাগ্রচিত্ত এবং একনিষ্ঠভাবে মনোনিবেশের জন্য কম খাওয়া কম ঘুমানো সহায়ক বলে বিবেচিত।
  গোসল করা, চুল আঁচড়ানো, তেল ও সুগন্ধি ব্যবহার, ভাল পোশাক পরা, এসবের অনুমতি আছে।
 ইতিকাফকারীর পরিবার তার সাথে সাক্ষাৎ করতে পারবে, কথা বলতে পারবে, কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের স্ত্রীগণ ইতিকাফকালীন তার সাথে সাক্ষাৎ করতেন। কিন্তু সাক্ষাৎ দীর্ঘ না হওয়া বাঞ্ছনীয়।
ইতিকাফকারী যা থেকে বিরত থাকবেন :  ওজর ছাড়া ইতিকাফকারী এমন কোন কাজ করবে না যা ইতিকাফকে ভঙ্গ করে দেয়।
 ঐ সকল কাজ যা ইতিকাফের উদ্দেশ্যকে ব্যাহত করে, যেমন বেশি কথা বলা, বেশি মেলামেশা করা, অধিক ঘুমানো, ইবাদতের সময়কে কাজে না লাগানো, টেলিফোনে গল্পগুজব করা, বিনা কারণে ইন্টারনেট ব্রাউজ করা, চ্যাটিং করা, মসজিদে অবস্থানরত অন্যান্যদের সাথে হাসি-ঠাট্টা করা, ঝগড়া- ঝাটি করা, অন্যের গীবত করা ইত্যাদি।
 ইতিকাফকারী মসজিদে অবস্থানকালে ক্রয়-বিক্রয় করবে না, কেননা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদে ক্রয়-বিক্রয় করতে নিষেধ করেছেন। [মুসনাদে আহমদ] এমনিভাবে যা ক্রয় বিক্রয়ের কাজ বলে বিবেচিত যেমন বিভিন্ন ধরনের চুক্তিপত্র, ভাড়া, মুদারাবা, মুশারাকা, বন্ধক রাখা ইত্যাদি। কিন্তু যদি মসজিদের বাহিরে এমন ক্রয়-বিক্রয় হয় যা ছাড়া ইতিকাফকারীর সংসার চলে না তবে তা বৈধ বলে বিবেচিত হবে।
 মসজিদে বায়ু ত্যাগ করা থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে গ্যাসের সমস্যা থাকলে বাথরুমে গিয়ে তা ত্যাগ করা

সাততেতৈয়া

শরিয়ত,তরিকত,হাকিকত ও মারফত কাকে বলে? বিস্তারিত?

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-বড় পীর এর জীবনী

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

তাজবীদ

জামে মসজিদ নীতিমালা