আইএস-এর যুদ্ধ কার স্বার্থ সাধনের লক্ষ্যে?


পশ্চিমা পর্যবেক্ষকরা অবশেষে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দু’টো সাফল্য খুঁজে পেয়েছেন। নিউইয়র্ক টাইমসে নিবন্ধ লেখক মোরীন ডওড গত জুনে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে একজন ব্যর্থ প্রেসিডেন্ট আখ্যা দিয়েছিলেন। মধ্যপ্রাচ্যে ও অন্যত্র মাথা তুলে দাঁড়ানো বিশাল চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলায় ওবামার নিষ্ক্রীয়তায় তিনি তখন সমলোচনা করেছিলেন।
কিন্তু ইদানিং সেই সমালোচক ওবামার সাহসী পদক্ষেপের প্রশংসায় নেমেছেন। ওবামার সাহসী পদক্ষেপ দু’টো হচ্ছে ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি সম্পাদন এবং ছয় দশকের বিরোধ মিটিয়ে কিউবার সঙ্গে স্বাভাবিক সম্পর্ক তৈরি। উল্লেখ্য, ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তির ইসরাইল বিরোধিতা করেছে এবং মার্কিনের মিত্র আরব দেশগুলোও চুক্তিতে তাদের উদ্বেগ ব্যক্ত করেছে।
শাসন মেয়াদের শেষদিকে এসে ইরান ও কিউবার সঙ্গে বিরোধ নিরসনে এবং দেশে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ও প্রমিলাদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রেসিডেন্ট ওবামার সাফল্যের কীর্তন যারা গাইছেন তাদের অন্যেরা মনে করিয়ে দিতে চান যে, ফিলিস্তিনী জনগণের সঙ্গে ওবামা আগাগোড়া প্রতারণা করে এসেছেন এবং সিরিয়া সংকটে তার দোদুল্যমানতার জন্যই সেখানে হাজারো-লাখো মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়েছে, আহত-বিক্ষত হতে হয়েছে এবং অসংখ্য মানুষকে ঘরবাড়ি ছেড়ে উদ্বাস্তু জীবন বরণ করে যত্রতত্র বেদিশা ঘুরে বেড়াতে হয়েছে।
ওখানেই সংকটের শেষ হয়নি। সিরীয় সংকটের ফলশ্রুতিতে মধ্যপ্রাচ্যে জন্ম নিয়েছে আইএস-এর মতো এমন এক অশুভ শক্তি যার উৎস, কর্মসূচি, বর্বর কর্মকা- এবং লক্ষ্য ও যাত্রাপথ নির্ণয় প্রশ্নে আজ সমীক্ষকদেরও পড়তে হয়েছে মহা ফাঁপরে।
সুপ্রাচীন সভ্যতার পীঠস্থল সিরিয়া অভ্যন্তরীণ যুদ্ধে বিধ্বস্ত প্রায়। প্রাণ গেছে দু’লাখের বেশি মানুষের। ২০১১ সাল থেকে সিরিয়ায় অব্যাহত থেকেছে রক্তক্ষয়ী মারণ তা-ব। ২০১৪ সালের আগস্টে সিরিয়ায় হস্তক্ষেপে এগিয়ে আসতে দেখা গেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামাকে আইএস’র বিভিন্ন আস্তানায় মার্কিন বোমা বর্ষণের মধ্য দিয়ে।
প্রেসিডেন্ট বাশার আসাদকে ক্ষমতা ছেড়ে দেয়ার ২০১১ সালে আহ্বান জানিয়েছিলেন বারাক ওবামা। এছাড়া সিরীয় সংকট নিরসনে অন্য কোন পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট ওবামাকে নিতে দেখা যায়নি। বহু পর্যবেক্ষকের অভিমত হচ্ছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা সিরিয়ায় অনড় ও শক্ত অবস্থান গ্রহণে বাশার আসাদকে কার্যত সাহায্য করে এসেছেন। ভাষ্যকার ওমর আজিজের ভাষায়- মার্কিন ও পশ্চিমাদের কার্যকলাপের বদৌলতে বিশ্বের সামনে পাশ্চাত্য ও সন্ত্রাসবাদের মধ্যখানে একজন নির্ভরযোগ্য রাষ্ট্রশাসক হিসেবে নিজেকে তুলে ধরার চমৎকার সুযোগ বাশার আসাদ পেয়ে গেছেন।
পশ্চিমারা ও তাদের সঙ্গে ইসরাইল বাস্তবেই আসাদের পতন চান না। তাদের আশঙ্কা আসাদের পতনে সিরিয়া উগ্র ইসলামপন্থীদের ক্রীড়াক্ষেত্রে পরিণত হবে।
আসাদের পতনে সিরিয়া আসলেই ইসলামপন্থীদের কুক্ষিগত হতো কিনা বলা বড় মুশকিল। কিন্তু ক্ষমতায় অক্ষত আসাদের অধীন বামপন্থীরা শহর ও গ্রামের নিরস্ত্র জনগণকে হত্যা ও উচ্ছিন্ন করার মধ্য দিয়ে দেশটিকে যে জ্বলন্ত জাহান্নামে পরিণত করেছেন- এটি হচ্ছে বাস্তবতা। সিরিয়াকে দোজখে পরিণত করার সরকারি বাহিনীর অভিযানের সমান্তরালে সেখানে অবাধ মারণ লীলায় নেমেছে আইএস ইসলামের উচ্চকণ্ঠ স্লোগানে।
পালমিরার প্রাচীন রোমান প্রত
œসৌধ সংরক্ষণের কাজে পেছনের ৫০ বছর ধরে নিয়োজিত ড. খালিদ আল আসাদকে আইএস যে বর্বর, নির্মমভাবে সম্প্রতি হত্যা করে তার তুলনা প্রায় অসম্ভব।
পালমিরার দু’হাজার বছরেরও বেশি পুরনো রোমান সৌধ ছেড়ে চলে যেতে ড. খালিদকে নির্দেশ দিয়েছিল আইএস। নির্দেশ মানেননি তিনি। মাসব্যাপী তার ওপর চালানো হয় শারীরিক নির্যাতন এবং পরে তাকে হত্যা করা হয় শিরশ্ছেদ করে। ল্যাম্পপোস্টে ঝুলিয়ে রাখা হয় তার লাশ।
ক্রুসেডাররা ও মঙ্গোলিয়ানরা পালমিরা ধ্বংসের প্রয়োজন বোধ না করলেও মধ্যপ্রাচ্য ও মুসলিম বিশ্বকে মুক্ত ও স্বাধীন করার স্লোগানে মানুষের প্রাচীন সভ্যতার সাক্ষ্য পালমিরাসহ একের পর এক নিদর্শন বিনাশ করে চলেছে আইএস। সর্বত্র প্রশ্ন জেগেছে আইএস’র লম্ফ-ঝম্পের পেছনে কাজ করছে কাদের উৎসাহ ও সাহায্য। এদের লাগাম রয়েছে কার হাতে?
একটি জবাব প্রশ্নের অবশ্যই দেয়া যায়- বলেন পর্যবেক্ষকরা। তারা বলেন, ইরাকে মার্কিন সামরিক আগ্রাসন ও দেশটির ধ্বংস সাধন, ইরাকী সেনাবাহিনীকে নিষিদ্ধ করা, শিয়া মিলিশিয়াদের সুন্নীদের ওপর হামলা ও নির্যাতন এবং এ সবের পাশাপাশি সিরীয় একনায়ক বাশার আসাদকে শায়েস্তা করতে পশ্চিমাদের ইচ্ছাকৃত ব্যর্থতা- এগুলোই হচ্ছে আইসিএস আইএস “দায়েস” (আরবী শব্দ)-এর উত্থানের কারণ ও পটভূমি।
মুসলিম বিশ্বকে ধ্বংস করার দীর্ঘকাল যারা ষড়যন্ত্র করে এসেছে তাদেরই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আইএস তৎপর রয়েছে, আইএস’র বর্বর কর্মকা-ের প্রকৃতি তা স্পষ্ট বলে দিচ্ছে। ভাষ্যকাররা আবু বকর আল বাগদাদীকে মুসলমানদের শত্রু পক্ষের নিযুক্ত এজেন্ট প্রভোকটিয়ার সরাসরি না বললেও উল্লেখে বিরত থাকেননি যে, তার ভূমিকায় মোসাদের কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রচ্ছন্ন ইঙ্গিত তাদের দৃষ্টি এড়িয়ে যায়নি। রবার্ট ফিস্কের মতো প্রবীণ সমীক্ষককেও এই ধারণা পোষণ করতে লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
রবার্ট ফিস্কের প্রশ্ন- ইসলামের এতো বড় সংরক্ষক আইএস এ পর্যন্ত ইসরাইলের ওপর আঘাত হানতে উদ্যত হচ্ছে না কেন? ক্রুসেডারদের, শিয়াদের খৃস্টানদের এবং কখনো কখনো ইহুদীদেরও বিরুদ্ধে বিষোদগারে মুখর আইএস’র হামলার লক্ষ্যে ইসরাইল আসছে না কেন? আইএস যোদ্ধাদের হাতে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি চকচকে নতুন অত্যাধুনিক অস্ত্রগুলো আসছে কোন উৎস থেকে? আরব নিউজ

সাততেতৈয়া

শরিয়ত,তরিকত,হাকিকত ও মারফত কাকে বলে? বিস্তারিত?

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-বড় পীর এর জীবনী

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

তাজবীদ

জামে মসজিদ নীতিমালা