আল্লামা ইকবাল

Image result for আল্লামা ইকবাল

আল্লামা ইকবাল

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Jump to navigationJump to search
ড. মুহাম্মদ ইকবাল
Iqbal.jpg
যুগআধুনিক যুগ
অঞ্চলদক্ষিণ এশিয়া
ধারাসুন্নি
আগ্রহকবিতাইতিহাসঅধিবিদ্যাইসলাম
অবদানদ্বি-জাতি তত্ত্বখুদি
আল্লামা মুহাম্মদ ইকবাল (জন্ম নভেম্বর ৯১৮৭৩; শিয়ালকোট, পাঞ্জাব - মৃত্যু: এপ্রিল ২১১৯৩৮) বিভাগপূর্ব ভারতবর্ষের মুসলিম কবি, দার্শনিক এবং রাজনীতিবিদ ছিলেন। তাঁর ফার্সি ও উর্দু কবিতা[১] আধুনিক যুগের ফার্সি ও উর্দু সাহিত্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।[১][২] ইকবাল তাঁর ধর্মীয় ও ইসলামের রাজনৈতিক দর্শনের জন্যও বিশেষভাবে সমাদৃত ছিলেন। তাঁর একটি বিখ্যাত চিন্তা দর্শন হচ্ছে ভারতের মুসলমানদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন। এই চিন্তাই বর্তমান পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে। তাঁর নাম মুহাম্মদ ইকবাল হলেও তিনি আল্লামা ইকবাল হিসেবেই অধিক পরিচিত। আল্লামা শব্দের অর্থ হচ্ছে শিক্ষাবিদ । তাঁর ফার্সি সৃজনশীলতার জন্য ইরানেও তিনি ছিলেন সমধিক প্রসিদ্ধ; তিনি ইরানে ইকবাল-ই-লাহোরী নামে পরিচিত।

পারিবারিক ইতিহাস[সম্পাদনা]

ইকবাল-এর পিতামহ শেখ রফিক কাশ্মির হতে শিয়ালকোটে গিয়ে বসবাস শুরু করেন। শেখ রফিক কাশ্মিরী শাল তৈরি এবং ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন। তাঁর দু’জন পুত্র ছিলেন শেখ গোলাম কাদির এবং শেখ নুর মোহাম্মদ। শেখ নুর মোহাম্মদ ছিলেন ইকবালের পিতা। তিনি ছিলেন শিয়ালকোটের নামকরা দর্জি। শেখ নুর মোহাম্মদ কেবল পেশাগত দিক দিয়ে নয়, চিন্তাধারা এবং জীবন যাপনে ছিলেন ইসলামের প্রতি অত্যন্ত নিবেদিত-প্রাণ। সুফি সঙ্গীদের কাছে তাঁর প্রচণ্ড সম্মান ছিল। তাঁর স্ত্রী, মোহাম্মদ ইকবালের মা ইমাম বিবিও ছিলেন অত্যন্ত ধার্মিক মহিলা। এই দম্পতি তাদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে ইসলাম ধর্মের প্রতি গভীর অনুভূতির জন্ম দিয়েছিলেন।

শিক্ষাজীবন[সম্পাদনা]


১৮৯৯-এ ইকবাল
পাঞ্জাবের বৃটিশ আর্মির কাছে শিখদের পরাজয়ের পর খ্রিষ্টান মিশনারিরা শিয়ালকোটে শিক্ষা প্রচারের উপর গুরুত্ব দিতে শুরু করেন। এই সময়েই শিয়ালকোটে স্কটিশ মিশন কলেজ স্থাপিত হয়। ১৮৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ কলেজ লিবারেল আর্টস্ এর কোর্সসমূহের অনেকগুলোতেই আরবি ও ফার্সি ভাষা মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হতো। যদিও এই সময় বেশির ভাগ স্কুলেই ফার্সি ভাষার পরিবর্তে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার শুরু হয়। এই স্কটিশ মিশন কলেজেই ইকবাল সর্বপ্রথম আধুনিক শিক্ষা প্রাপ্ত হন।
ইকবাল তাঁর কাব্য প্রতিভার স্বীকৃতি পান তাঁর শিক্ষক সাইয়িদ মীর হাসানের কাছ থেকে। ১৮৯২ সালে ইকবাল স্কটিশ মিশন কলেজ হতে তাঁর পড়াশোন শেষ করেন। একই বৎসরে গুজরাটি চিকিৎসকের মেয়ে করিম বিবির সাথে তাঁর বিয়ে হয়। তাঁদের বিচ্ছেদ হয় ১৯১৬ সালে । এই বিয়েতে ইকবালের তিনটি সন্তান ছিল।
১৮৮৫ সালে স্কটিশ মিশন কলেজের পড়াশোনা শেষ করে ইকবাল লাহোরের সরকারি কলেজে ভর্তি হন। দর্শন, ইংরেজি ও আরবি সাহিত্য নিয়ে তিনি পড়াশোনা করেন এখান থেকে তিনি স্বর্ণ পদক নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। ১৮৯৯ সালে যখন তিনি মাষ্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন ততদিনে তিনি সাহিত্য অঙ্গনে পরিচিত ব্যক্তিত্ব।
মাস্টার্স ডিগ্রিতে পড়বার সময় ইকবাল স্যার টমাস আর্নল্ড এর সংস্পর্শে আসেন। এই শিক্ষাবিদ ইসলাম ও আধুনিক দর্শনে বুৎপত্তি অর্জন করেছিলেন। ইকবালের কাছে তিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের সেতুবন্ধ হিসেবে কাজ করেছিলেন। স্যার টমাস আর্নল্ডই ইকবালকে ইউরোপে উচ্চ শিক্ষায় অনুপ্রাণিত করেছিলেন।

ইউরোপে ইকবাল[সম্পাদনা]

ইকবাল ১৯০৫ সাল হতে লন্ডনে আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করেন । তিন বৎসরের আইনের ডিগ্রি লাভ করেন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের লিঙ্কনস্ ইন হতে। আর ডক্টরেট ডিগ্রি লাভ করেন জার্মানির মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয় হতে।

রাজনীতি[সম্পাদনা]

বৃটেনে থাকতেই ইকবাল সর্বপ্রথম রাজনীতির সংস্পর্শে আসেন। ১৯০৬ সালে অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠিত হবার পরপরই তিনি তাতে যোগ দেন। দলের বৃটিশ চ্যাপ্টারের এক্সিকিউটিভ কমিটিতে নির্বাচিত হন ইকবাল। সৈয়দ হাসান বিলগামী এবং সৈয়দ আমির আলির সাথে তিনি সাব-কমিটির সদস্য হিসেবে মুসলিম লীগের খসড়া সংবিধান প্রস্তুত করেন। এর পর ১৯২৬ সালে তিনি লাহোরের মুসলিম লীগের পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হন।

পেশাগত জীবন[সম্পাদনা]

১৯০৮ সালে ইকবাল ইউরোপ হতে দেশে ফিরে আসেন এবং লাহোরের সরকারি কলেজে যোগদান করেন। এই সময় একই সাথে তিনি আইন ব্যবসা, শিক্ষাদান ও সাহিত্য চর্চা শুরু করেন। কিন্তু মূলত অর্থনৈতিক কারণেই তিনি ১৯০৯ সালে তিনি সার্বক্ষণিক আইন পেশায় নিয়োজিত হন। কিন্তু আয় রোজগারের ক্ষেত্রে এখানেও তিনি তেমন ভালো করতে পারেন নি। এর কারণ তাঁর সাহিত্য প্রীতি এবং সেজন্যে সময় ব্যয় করা। তিনি তাঁর পিতাকে প্রতিজ্ঞা করেছিলেন যে কবিতার বিনিময়ে কোনো অর্থ তিনি গ্রহণ করবেন না। অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে তিনি সে প্রতিজ্ঞা রাখতে পারেন নি। ইতোমধ্যেই বিখ্যাত কবি ইকবালকে বৃটিশ সরকার তাঁকে “আসরার-ই-খোদায়ী” পুস্তকের জন্য নাইট উপাধিতে ভূষিত করেন।

ইকবাল দর্শন ও সাহিত্য[সম্পাদনা]

আল্লামা ইকবাল অমর হয়ে আছেন তার কয়েকটি কবিতা ও রচনার জন্য। এরমধ্যে আসরার ই খুদি, শিকওয়া ও জবাবে শিকওয়া, দ্যা রিকনস্ট্রাকশন ওফ রিলিজিয়াস থট ইন ইসলাম, বাআল ই জিবরাইল, জাভেদ নামা, ইত্যাদি অত্যন্ত গভীর দার্শনিক ভাব সমৃদ্ধ রচনা। আল্লামা ইকবালের লেখনিতে যে ইসলামী পুনর্জাগরণের আওয়াজ উঠেছিল তা সমসাময়িক অনেক ব্যক্তি ও আন্দোলনকে সাংঘাতিকভাবে প্রভাবিত করেছে। তার দর্শনে প্রভাবিত হয়েছিলেন মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ যিনি পাকিস্তানের কায়েদে আজম। তার ইসলামী পুনর্জাগরণের চেতনাকে সারা জীবনের তরে জীবনোদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করে একটি পুনর্জাগরণী দলের জন্ম দেন তার স্নেহধন্য সৈয়দ আবুল আ'লা মওদুদি। যার প্রতিষ্ঠিত জামায়াতে ইসলামী পাক-ভারত উপমহাদেশে ইসলামী পুনর্জাগরণের স্বপ্ন দেখেছিল[৩] আল্লামা ইকবাল শিয়া চিন্তানায়কদেরকেও প্রভাবিত করেছিলেন। ইরানের ইসলামী বিপ্লবের চিন্তানায়ক ড. আলি শরিয়তিও আল্লামা ইকবাল দ্বারা সাংঘাতিক প্রভাবিত ছিলেন[৪]
আল্লামা ইকবালের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাজ :
  1. ইলম আল ইক্তিউদ (The Science of Economics)- উর্দু ছন্দে (ca ১৯০১)
  2. Islam as an Ethical and Political Ideal- ইংরেজি (১৯০৮)
  3. The Development of Metaphysics in Persia- ইংরেজি (১৯০৮) ( বাংলা অনুবাদ : প্রজ্ঞান চর্চায় ইরান)
  4. আসরার ই খুদি (The Secrets of the Self)- ফার্সি (১৯১৫)
  5. রুমিজ ই বেখুদি (The Mysteries of Selflessness)- ফার্সি (১৯১৭)
  6. পয়গাম ই মাশরিক (The Message of the East)- ফার্সি (১৯২৩)
  7. বাং ই দারা (The Call of the Marching Bell)- উর্দু ও ফার্সি (১৯২৪)
  8. জুবুর ই আজাম (The Psalms of Persia)- ফার্সি (১৯২৭)
  9. The Reconstruction of Religious Thought in Islam- (ইসলামে ধর্মীয় চিন্তার পুনর্গঠন) (১৯৩০)
  10. জাভেদ নামা (The Book of Eternity)- ফার্সি (১৯৩২)
  11. বাল ই জিবরাইল (The Gabriel’s Wings)- উর্দু ও ফার্সি (১৯৩৩)
  12. পাস ছে বায়াদ কারদ আই আক্বওয়াম ই শারক (So What Should be Done O Oriental Nations)- ফার্সি (১৯৩৬)-
  13. মুসাফির (The Wayfarer)- ফার্সি (১৯৩৬)
  14. জারব ই কালিম (The Blow of Moses) উর্দু ও ফার্সি (১৯৩৬)
  15. আরমাঘান ই হিজাজ (The Gift for Hijaz)- ফার্সি ও উর্দু (১৯৩৮)[৫
আল্লামা ইকবাল একাধারে একজন কবি, সাহিত্যিক, দার্শনিক, শিক্ষাবিদ ও মনীষী। আধুনিক বিশ্বে ইসলামের মর্মবাণীর সার্থক ব্যাখ্যাদাতা হিসেবে তাকে বিবেচনা করা হয়। সমাজ, রাষ্ট্র, বিজ্ঞান, ধর্ম, শিল্পবিজ্ঞানসহ নানা ক্ষেত্রে তার রয়েছে অবদান। এসব ক্ষেত্রে নিজস্ব চিন্তা উপদেশ ও দর্শন ছিল এই মহাকবির, যেগুলো তাকে নিয়ে গেছে খ্যাতির আসনে। দিয়েছে অনন্য সম্মান।
১৮৭৭ সারের ৯ নভেম্বর অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের শিয়ালকোট শহরে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে তার জন্ম হয় আল্লামা মোহাম্মদ ইকবালের। তার বাবার নাম শায়খ নুর মুহাম্মদ এবং মায়ের নাম ইমাম বিবি। বাবা-মা আদর করে তার নাম রাখেন ইকবাল-যার অর্থ সৌভাগ্য।
পারিবারিক পরিবেশে পড়া-লেখা শেষ করার পর স্থানীয় মক্তবে তার প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন হয়। জন্মের পর পরই তার বাবা তাকে কোলে নিয়ে দোয়া করেছিলেন যে, ‘বড় হয়ে দ্বীনের খেদমত করলে বেঁচে থাক, না হয় এখনি মরে যাও’। সে দোয়ার আলোকেই ইকবালের ধনাঢ্য পিতা তার পড়াশোনার আয়োজন করেন। ১৮৯৭ সালে আরবী ও ইংরেজিতে সারা পাঞ্জাবে প্রথম স্থান ও দু’টি স্বর্ণ পদক লাভ করে বি.এ. এবং ১৮৯৯ সালে দর্শন শাস্ত্রে স্বর্ণ পদক লাভ করে এম.এ. ডিগ্রী কৃতিত্বের সঙ্গে অর্জন করেন। লাহোর ওরিয়েন্টাল করেজে ইতিহাস ও দর্শন শাস্ত্রের অধ্যাপনায় যোগ দেওয়ার মাধ্যমে তার কর্ম জীবন শুরু হয়।  
পরে তিনি লাহোর ইসলামিয়া কলেজ ও লাহোর সরকারী কলেজে ইংরেজি ও দর্শনের খন্ডকালীন অধ্যাপক নিযুক্ত হন। ১৯০৫ সালে তিনি উচ্চ শিক্ষার জন্য বিলাত যান । বিলাতে তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রিনিটি কলেজ থেকে দর্শন শাস্ত্রে এম.এ. ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর পশ্চিম ইউরোপ ভ্রমণ শেষে জার্মানীর মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে থেকে ১৯০৭ সালে “The Development of Metaphysics in Persia” বিষয়ের উপর গবেষণা করে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯২৬ সালে তিনি পাঞ্জাবি আইন পরিষেদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং ধর্ম প্রবর্তকদের বিরুদ্ধে কৃৎসাপূর্ণ প্রচারণা বন্ধে প্রস্তাব পাস করেন।
তারপর তিনি লন্ডন থেকে ডিষ্টিংসান সহকারে ব্যারিষ্টারী পাস করেন। সেখান থাকতেই তিনি লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে কিছুদিন অধ্যাপনা করেন। এভাবেই ইকবালের মনে প্রাচ্যের সঙ্গে পাশ্চাত্যের সাক্ষাৎ ঘটল এবং তার কাব্যে প্রাচ্যে ও প্রতীচ্যেরে এক অপূর্ব সম্মিলন ঘটল। এতে করে ইকবাল কাব্যে-প্রতিভা ও অনুপম সম্মিলন ঘটল। ইকবালের কাব্য-প্রতিভা ও অনুপম রসাবেশ সহজেই রস পিপাসুদের আকৃষ্ট করে। জড়তা, ক্লীবতা ও দূর্গতির গহ্বরে নিপাতিত মাঠ-ঘাটের পথ প্রান্তরের মানুষ খুঁজে পেল অভূতপূর্ব শিহরণ ও কর্মচাঞ্চল্য। সূফী কবি মাওলানা জালাল উদ্দীন রুমী ছিলেন ইকবালের কাব্যপথের সর্বশ্রেষ্ঠ আলোক বর্তিকা।
সাধনা মুখর এক জীবন দার্শনিক ইকবাল কাব্য কথায় বিভিন্ন গ্রন্থে কবিতায় আল্লাহর প্রকৃতি, ভাগ্য-জীবন, আত্মতত্ত্ব, রাজনীতি, শিক্ষা, ধর্মতত্ত্ব, নীতিবিদ্যা, সুফীতত্ত্ব প্রভৃতি বিষয়াবলী নিয়ে তিনি লিখেছেন। সেগুলোতে তার দর্শন ফুটে উঠে। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো-
*মার্কসীয় সমাজতন্ত্র বাদের বৈষয়িক সাম্য ও পাশ্চাত্য সম্রাজ্যবাদের কাগজী গণতন্ত্র উভয়ই তার সমালোচনার কষাঘাতে জর্জরিত হয়েছে। তিনি বলেছেন, ‘সাম্রাজ্যবাদের দানব গণতন্ত্রের মুখোশ পরে নৃত্য করে। আর তুমি ভাব যে স্বাধীনতার পরীরা সব নাচছে।’
* রাজনীতি নিয়ে ইকবালের দর্শন হচ্ছে- ‘রাজনীতির মূল রয়েছে মানুষের আত্মিক জীবনের গভীরে’।
*ধর্ম নিয়ে ইকবালের দর্শন হচ্ছে- ‘ধর্ম কোনো মতবাদ নয়, কোনো পৌরহিত্য নয়, কোনো অনুষ্ঠান নয়, বরং ধর্ম এমন একটি জীবনবিধান যা মানুষকে বিজ্ঞানের যুগেও তার দায়িত্ব পালনে প্রস্তুত করে এবং তার প্রতীতিকে দৃঢ় সক্ষম করে দেয়, যার ফলে সে সত্যোপলব্ধিতে সক্ষম হয়ে উঠে।’ তিনি আরও বলেন, ধর্ম পদার্থ বিদ্যাও নয়, রসায়ন শাস্ত্রেও নয় যে, ল্যবরেটরীতে তাকে Experiment ও পরীক্ষা করে বুঝতে হবে। ইকবালের ভাষায়, “Religion aims at realing the realsignigicance of a special variety of woman experience”.
*দেশপ্রেম নিয়ে ইকবালের উল্লেখযোগ্য উক্তি হচ্ছে- ‘আমার দৃষ্টিতে দেশ প্রেম এবং দেশ পূজা এক কথা নয়।’
* জাতপাত, বৈষম্য নিয়েও ইকবালের ছিল নিজস্ব ভাবনা। জাতিতে জাতিতে, বর্ণে বর্ণে, গোত্রে গোত্রে সংঘাতের ফলে মানব জাতি আজ যেভাবে দ্বিধা বিভক্ত হয়ে পড়েছে-সেজন্য ইকবাল সব ক্ষুদ্রতার উর্ধ্বে এক বিশ্বজনীন জীবনাদর্শের প্রয়োজন অনুভব করেছেন।তিনি বলেন- ‘আরব আমার ভারত আমার চীন গো আমার নহে গো পর বিশ্ব জোড়া মুসলিম আমি সারাটি জাহান বেঁধেছি ঘর।’
*শিল্প বিজ্ঞান সম্পর্কে ইকবালের ধ্যান ধারণা স্বয়ংসম্পূর্ণ। তিনি বলেন, ‘নীতিবোধ ও সুষ্ঠু জীবনবোধ ছাড়া শিল্প বিজ্ঞান সব ব্যর্থ। সত্যের মূর্ত প্রতীক প্রতিচ্ছবি হল শিল্প বিজ্ঞান।’
*সমাজ সম্পর্কে ইকবাল বলেন, ‘আল্লাহর একাত্ব, সার্বভৌমত্ব ও মানব ভ্রাতৃত্বই হল ইসলামী সমাজের মূল বিষয়। সমাজ ছাড়া ব্যক্তির চিহ্ণ নেই। সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থা ব্যক্তিকে সুসংহত করে তোলে। সমাজ জীবন মানুষের পক্ষে অপরিহার্য। বুদ্ধি, আবেগ ও উজ্জ্বল্য প্রশংসার। কিন্তু কেবল মাত্র বুদ্ধিমত্তা যথাযথ নয়। প্রেম ও নীতির যাদস্পর্শ ছাড়া বুদ্ধি নিরর্থক ।ঈমান, চিন্তা ও আবিষ্কার সুন্দর জীবনের তিনটি নক্ষত্র।
*রাষ্ট্র সম্পর্কে ইকবালের বক্তব্য ছিল সুস্পষ্ট। তিনি বলেন, “The state According to Islam, in only an ebbort to realize the Spiritual in a human organization, But in this sense all state not based on mere domination and aiming at the realization of ideal principles, is theoretic”.
আল্লামা ইকবালের দর্শনের মূল কথা হচ্ছে খুদী বা আত্মা, এই খুদী বা আত্মার ধারণার উপর ভিত্তি করেই তার দর্শনের ভিত্তি স্থাপিত্ হয়েছে। তার মতে খুদী বাস্তব সত্তা এবং নিজের শক্তিতেই এই সত্তা অস্তিত্বশীল। অতিন্দ্রিয় অনুভূতির মাধ্যমে আমরা এই সত্তাকে জানতে পারি।
তিনি বলেন-‘খুদীকে এইরূপ উন্নত কর যে, তোমার প্রতিটি ভাগ্যলিপি লিখার পূর্বে খোদা যেন শুধান, কি তোমরা অভিপ্রায়’।
 তথ্যসূত্র :
*আল্লামা ইকবাল সংসদ পত্রিকা, জুলাই-ডিসেম্বর, ৯৪ ইং ঢাকা।
*ইকবাল প্রতিভা-গোলাম রসুল, ই:ফা: বাংলাদেশ।
*ইকবালের রাজনৈতিক চিন্তা ধারা-মুহাম্মদ আব্দুর রহীম ই:ফা:বাংলাদশে।
*মুসলিম ধর্মতত্ত্ব ও দর্শন-ড: আমিনুল ইসলাম, বাংলা একাডেমী, ঢাকা।
*মুসলিম দর্শনের ভূমিকা-ড. রশীদুল আলম ।
*মহাকবি ইকবাল-ফাহমিদুর রহমান।

সাততেতৈয়া

শরিয়ত,তরিকত,হাকিকত ও মারফত কাকে বলে? বিস্তারিত?

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-বড় পীর এর জীবনী

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

তাজবীদ

জামে মসজিদ নীতিমালা