স্যার সৈয়দ আহমদ খান

Sir Syed1.jpg

সৈয়দ আহমদ খান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
Jump to navigationJump to search
স্যার সৈয়দ আহমদ খান
Sir Syed1.jpg
যুগআধুনিক যুগ
অঞ্চলদক্ষিণ এশিয়া
ধারাসুন্নিমুঘল
আগ্রহশিক্ষারাজনীতি
অবদানআলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়
স্যার সৈয়দ আহমদ খান বাহাদুর, (ইংরেজী: Syed Ahmad Khan কেসিএসআই[১] উর্দুسر سید احمد خان‎‎; 17 অক্টোবর ১৮১৭ – ২৭ মার্চ ১৮৯৮), জন্মনাম সৈয়দ আহমেদ তাকভিউর্দুسید احمد تقوی‎‎),[২] সাধারণত স্যার সৈয়দ নামে সমধিক পরিচিত, ভারতের একজন বিখ্যাত শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ যিনি ভারতের মুসলিমদের আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার ক্ষেত্রে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করেন। তিনি এই কাজের জন্যই মোহামেডান অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন যা পরবর্তীতে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় নামে পরিচিতি লাভ করে। তার চিন্তাধারা ও কাজকর্ম সেখানকার মুসলিমদের মধ্যে একটি নতুন চেতনার জন্ম দেয়, তার প্রভাবে প্রভাবান্বিত এই মুসলিম বুদ্ধিজীবীরাই পরবর্তীতে আলিগড় আন্দোলনের সূচনা করেন যার উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় রাজনীতিতে মুসলিমদের অধিকার নিশ্চিত করা।

সৈয়দ আহমদ খান


সৈয়দ আহমদ খান  হাজী আহমদের দ্বিতীয় পুত্র সৈয়দ আহমদ খান নওয়াব  সরফরাজ খানের আমলে ঘোড়াঘাট ও রংপুরের নায়েব ফৌজদার ছিলেন। দিনাজপুর ও কুচবিহারের যে রাজারা এতদিন নওয়াবের আনুগত্য অস্বীকার করে আসছিলেন তিনি তাদের আত্মসমর্পণে বাধ্য করে তাদের বিপুল ধনসম্পদ অধিকার করেন। সৌলত জং খেতাবে ভূষিত সৈয়দ আহমদ  আলীবর্দী খানের দ্বিতীয় কন্যাকে বিয়ে করেছিলেন। আলীবর্দী খানের আমলে রুস্তম জং-এর জামাতা মির্জা বকর একবার উড়িষ্যায় আলীবর্দীর বাহিনীর উপর আক্রমণ চালান। সেখানে এক রক্তক্ষয়ী  যুদ্ধে মির্জা বকর মারাত্মকভাবে আহত হন। রুস্তম জং তাঁর আহত জামাতাকে নিয়ে পালিয়ে যান। আলীবর্দী খান উড়িষ্যায় একমাস অবস্থান করেন। তিনি তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র ও জামাতা সৈয়দ আহমদ খানকে উড়িষ্যায় নায়েব নাজিম নিযুক্ত করে মুর্শিদাবাদ ফিরে যান। নিয়োগটি যথার্থ হয় নি, কারণ সৈয়দ আহমদ এই নতুন অধিকৃত রাজ্য শাসনে সম্পূর্ণ অযোগ্য ছিলেন। অচিরেই প্রবীণ ও পদস্থ রাজকর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়। তাঁদের আমন্ত্রণে একদল মারাঠা পদাতিকসহ মির্জা বকর পুনরায় কটকে এসে পরিবার পরিজনসহ সৈয়দ আহমদকে বন্দি করেন। সৈয়দ আহমদ ও তার পরিবারবর্গকে মুক্ত করার জন্য আলীবর্দী অবিলম্বে মির্জা বকরের বিরুদ্ধে এক অভিযান পরিচালনা করেন। এক সম্মুখ যুদ্ধে আলীবর্দী জয়লাভ করেন। সৈয়দ আহমদকে পুনরায়  উড়িষ্যায় নিয়োজিত করে এবং রাজা জানকীরামের পুত্র দুর্লভরামকে তাঁর সহকারী নিযুক্ত করে নওয়াব রাজধানীতে ফিরে আসেন।
শাসক হিসেবে সৈয়দ আহমদ নিজেকে অযোগ্য প্রমাণ করেন। আলীবর্দী খানের জীবিতকালেই সৈয়দ আহমদ খানের মৃত্যু হয়। তাঁর পুত্র  শওকত জঙ্গ পরবর্তী সময়ে মুর্শিদাবাদের সিংহাসন লাভের জন্য  সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। [কে.এম করিম]

আলিগড় আন্দোলন

Profile picture for user administrator
Submitted by administrator on Sun, 04/22/2012 - 23:11
Share icon
☼ আলিগড় আন্দোলন [Aligarh Movement]:- আলিগড় আন্দোলনের প্রবর্তক ছিলেন স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁ [Sir Syed Ahmed Khan] । পিছিয়ে পড়া মুসলমান সম্প্রদায়কে যুক্তিবাদী আধুনিক পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলার জন্য স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁ উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ে যে আন্দোলনের সূচনা করেন তা আলিগড় আন্দোলন নামে খ্যাত । ভারতীয় মুসলমান সমাজ এযাবৎ সকল প্রকার সংস্কার আন্দোলন থেকে দুরে সরিয়ে রেখেছিলেন । ইতিপূর্বে ওয়াহাবি ও ফরাজি  আন্দোলন হলেও তা রক্ষণশীল মুসলিম সমাজকে স্পর্শ করেনি । ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে বিদ্রোহের পর অনগ্রসর মুসলিম সমাজে কিছু কিছু সংস্কারের প্রয়োজন অনুভূত হয় । হিন্দুদের তুলনায় অনগ্রসর পাশ্চাত্য শিক্ষায় উদাসীন মুসলিম সমাজের দুরবস্থার কথা স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁ অবগত ছিলেন । স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁ ইংরেজি ভাষার মাধমে পাশ্চাত্য শিক্ষাকে প্রগতির যথার্থ সোপান বলে মনে করতেন, তাই তিনি মুসলমানদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রসারে উদ্যোগী হন ।
শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে আলিগড় আন্দোলনের প্রভাব [Impact of Aligarh Movement on spread of Muslim education]:-
(১) ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে তিনি গাজিপুরে একটি ইংরেজি স্কুলের প্রতিষ্ঠা করেন ।
(২) ইংরেজি ভাষায় লেখা মূল্যবান কিছু কিছু বই উর্দু ভাষায় অনুবাদ করে তা মুসলমানদের মধ্যে বিতরণ করার উদ্দেশ্যে তিনি বিজ্ঞান সমিতি (Scientific society) নামে একটি সংস্থার প্রতিষ্ঠা করেন ।
(৩) তিনি মুসলমানদের মন থেকে পাশ্চাত্যের ভয় ভীতি দূর করার জন্য ও মুসলমানদের মধ্যে উদারনৈতিক ভাবধারা প্রচারের জন্য ‘তাহজিব-উল-আখলার্ক’ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন । সেই সঙ্গে কমিটি ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অফ লার্নিং নামে একটি সংস্থারও তিনি প্রতিষ্ঠা করেন ।
(৪) অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুকরণে ১৮৭৫ খ্রিস্টাব্দে মে মাসে আলিগড়ে তিনি মহামেডান অ্যাংলো ওরিয়েন্টাল কলেজ[Muhammedan Anglo-Oriental College] -এর প্রতিষ্ঠা করেন । এই কলেজটিই পরে আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় [Aligarh Muslim University] নামে পরিচিত হয় ।  ইংরেজ শিক্ষাবিদগণের তত্ত্বাবধানে এই কলেজে কলা ও বিজ্ঞান শিক্ষার ব্যবস্থা করা হয় । মুসলমান ছাত্রদের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ও প্রগতিমূলক মনোভাবের উন্মেষ ঘটানোর ক্ষেত্রে এই কলেজের অবদান অস্বীকার করা যায় না ।
(৫) আলিগড় আন্দোলন মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটিয়ে তাদের আধুনিক যুগোপযোগী ভাবধারায় দীক্ষিত করেছিল ।
(৬) এই আন্দোলন ভারতীয় মুসলমানদের মধ্যে যুক্তিবাদের প্রসার ঘটিয়ে তাদের ধর্মীয় ও সামাজিক গোঁড়ামি পরিত্যাগেও সাহায্য করেছিল ।
(৭) এই আন্দোলন মুসলিম সমাজে নারীদের মর্যাদা বৃদ্ধি, পর্দা প্রথার অপসারণ ও নারী শিক্ষা প্রসারের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে ।
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আলিগড় আন্দোলনের ফলাফল [Impact of Aligarh Movement on Political Platform]:-
(১) আলিগড় আন্দোলন মুসলমানদের মধ্যে রাজনৈতিক চেতনার উন্মেষ ঘটাতে সাহায্য করে ।
(২) আলিগড় অ্যাংলো-ওরিয়েন্টাল কলেজের অধ্যক্ষ ও ঘোর সাম্রাজ্যবাদী থিওডোর বেক -এর প্রভাবে আলিগড় আন্দোলনের নেতা সৈয়দ আহমেদ খাঁ ইংরেজ শাসনের প্রতি আনুগত্য এবং জাতীয় কংগ্রেসের বিরোধিতার নীতি গ্রহণ করেন । ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের জনপ্রিয়তা রুখতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তিনি ‘এডুকেশানাল কংগ্রেস’, ‘ইউনাইটেড পেট্রিয়াটিক অ্যাসোসিয়েশন’ ও 'মহামেডান অ্যাসোসিয়েশন’ নামে তিনি কংগ্রেসের তিনটি প্রতিদ্বন্দ্বী সংস্থা গঠন করেন ।
(৩) আলিগড় আন্দোলনের মধ্য দিয়েই ইংরেজ শাসকগোষ্ঠী কংগ্রেসের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে দুর্বল করার অপূর্ব সুযোগ পায় এবং সাম্প্রদায়িক বিভেদ নীতিকে তোষণ করতে শুরু করে । বঙ্গভঙ্গ ছিল ইংরেজ সরকারের সাম্প্রদায়িক বিভেদ নীতির প্রথম দৃষ্টান্ত ।
(৪) সর্বোপরি আলিগড় আন্দোলনের কার্যকলাপ পরাধীন ভারতের রাজনীতিতে দ্বিজাতি তত্ত্ব ও বিচ্ছিন্নতাবাদের জন্ম দেয় ।
♦ মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলা ও পাঞ্জাবের মুসলমানগণ আলিগড়ের শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল । শুধুমাত্র উত্তর প্রদেশের উচ্চবিত্ত সমাজের মুসলমানরাই আলিগড় কলেজে শিক্ষার সুযোগ পায় । এইসব দোষত্রুটি সত্ত্বেও ভারতীয় মুসলমান সমাজের নবজাগরণে স্যার সৈয়দ আহমেদ তথা আলিগড় আন্দোলনের অবদান অস্বীকার করা যায় না । সাম্প্রদায়িক দিকটা ছাড়া মুসলমান সমাজের সংস্কার সাধনে স্যার সৈয়দ আহমদের অবদান স্মরনীয় । এক্ষেত্রে তিনি রাজা রামমোহন রায়ের সমগোত্রীয় ছিলেন । রাজা রামমোহন রায়ের মতো স্যার সৈয়দ আহমেদ খাঁও মুসলিম সমাজে বহু বিবাহ, বাল্যবিবাহ ইত্যাদি তুলে দেওয়ার পক্ষে মত প্রকাশ করেছিলেন । মুসলিমদের 'তালাক প্রথা, ও বোরখা তুলে দেওয়ারও তিনি পক্ষপাতী ছিলেন । তবে সাধারণভাবে রক্ষণশীল মুসলমান সমাজ তাঁর এসব সংস্কার প্রয়াস ভালোভাবে মেনে নেয় নি । ফলে তাঁর প্রয়াস অসম্পূর্ণ থেকে যায় । আলিগড় আন্দোলনের অবদান প্রসঙ্গে ঐতিহাসিক রমেশচন্দ্র মজুমদার মন্তব্য করে বলেছেন যে, ‘উনবিংশ শতাব্দীর নবজাগরণ ও জাতীয়তাবাদী আন্দোলন হিন্দুদের কাছে যা ছিল, আলিগড় আন্দোলনও ছিল মুসলিমদের কাছে ঠিক তাই’ ।
*** 

সাততেতৈয়া

শরিয়ত,তরিকত,হাকিকত ও মারফত কাকে বলে? বিস্তারিত?

পবিত্র কুরআন সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান।

হযরত আব্দুল কাদের জিলানী (রহ.)-বড় পীর এর জীবনী

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম

তাজবীদ

জামে মসজিদ নীতিমালা