Posts

ইলিয়াস শাহ

ইলিয়াস শাহ (১৩৪২-১৩৫৮)  মধ্যযুগীয় বাংলার সুলতানদের মধ্যে এক বিশিষ্ট স্থানের অধিকারী ইলিয়াস শাহী বংশের প্রতিষ্ঠাতা শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ বাংলার স্বাধীন সালতানাতকে সুদৃঢ় করেন। তিনি পূর্ব পারস্যের সিজিস্তানের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ইলিয়াস শাহ এর পিতার নাম সুলতান। প্রাথমিক জীবনে তিনি দিল্লির মালিক ফিরুজের অধীনে চাকরি করতেন। কিন্তু সেখানে কোনো এক অপরাধ করে তিনি বাংলায় পালিয়ে আসেন এবং সাতগাঁওএর তুগলক শাসনকর্তা ইজ্জউদ্দীন ইয়াহিয়ার অধীনে চাকরি গ্রহণ করেন। নিজ যোগ্যতা বলে তিনি মালিক পদে উন্নীত হন। ইজ্জউদ্দীন ইয়াহিয়ার মৃত্যুর পর তিনি ১৩৩৮ খ্রিস্টাব্দে সাতগাঁওয়ের অধীশ্বর হন। সেখানে তাঁর কর্তৃত্ব সুপ্রতিষ্ঠিত করে তিনি লখনৌতির আলাউদ্দীন আলী শাহ -এর বিরুদ্ধে এক দীর্ঘ যুদ্ধে অবতীর্ণ হন এবং যুদ্ধে জয়লাভ করে তিনি সুলতান শামসুদ্দীন ইলিয়াস শাহ উপাধি নিয়ে ১৩৪২ খ্রিস্টাব্দে লখনৌতির সিংহাসনে আরোহণ করেন। লখনৌতিতে তাঁর ক্ষমতা সুদৃঢ় করে ইলিয়াস শাহ রাজ্যবিস্তারে মনোনিবেশ করেন। তিনি ১৩৪৪ খ্রিস্টাব্দে সহজেই ত্রিহুত দখল করেন এবং ১৩৫০ খ্রিস্টাব্দে নেপালের তরাই অঞ্চলে

হযরত শাহজালাল (র:) এর অলৌকিক কারামত

Image
হযরত শাহজালাল (র:) এর কিছু অলৌকিক কারামত নবী-রাসূল কিংবা অলী-আউলিয়াগণ প্রয়োজনের প্রেক্ষিতে মাঝে মাঝে এমন কিছু ঘটনার অবতারণা করেছেন, স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে যেসব ঘটনা একদমই অলৌকিক। নবী-রাসূলগণ যখন এ ধরনের ঘটনার অবতারণা করেন, তখন তাকে বলে মুজিযা। একইরকম ঘটনার অবতারণা যখন কোনো অলী-আউলিয়া করেন, তখন তাকে বলে কারামত। সিলেটের হযরত শাহজালাল (র:) সম্পর্কেও বেশ কিছু অলৌকিক ঘটনা প্রচলিত আছে। সেসব ঘটনা মানুষের মুখে মুখে ফেরে। এগুলোর মাঝে কিছু কিছু গ্রন্থিত হয়ে বই আকারে প্রকাশও হয়েছে। লোকমুখে প্রচলিত ঘটনাগুলো মানুষভেদে অল্পস্বল্প এদিক সেদিক হয়ে যায়। সেজন্য লোকমুখে প্রচলিত কারামতগুলোকে পাশ কাটিয়ে বইয়ে গ্রন্থিত কিছু ঘটনার আলোকপাত করা হবে এ লেখায়। অনেকগুলো ঘটনার মাঝে কয়েকটি উল্লেখ করা হলো, ধীরে ধীরে বাকিগুলোও উল্লেখ করা হবে। বিষ যখন শরবত হযরত শাহজালাল (র:)-এর জন্মস্থান ইয়েমেন। জন্মস্থান ছেড়ে ভারতবর্ষ অঞ্চলে ইসলাম প্রচার করছেন এমন সময়ে জন্মভূমির কাছে যাবার খুব ইচ্ছে হলো। সেখানে গেলে বাবা-মায়ের কবরও জিয়ারত করতে পারবেন। উল্লেখ্য, হযরত শাহজালালের (র:) জন্মের আগেই তার পিতা মারা যান এ

হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর জীবনী

Image
হযরত শাহজালাল (রহ.)-এর পূর্ণাঙ্গ জীবনী জুবায়ের আল মাহমুদ রাসেল: ভারতীয় উপমহাদেশের বিখ্যাত সুফি সাধক হযরত শাহজালাল (রহ.) ৬৭১ হিজরী এবং ১২৭১ খিৃস্টাব্দে তুরস্কে জন্মগ্রহন করেন। তাঁর পুরো নাম শায়খ শাহজালাল কুনিয়াত মুজাররদ। ৭০৩ হিজরী মোতাবেক ১৩০৩ ইংরেজী সালে ৩২ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে অধুনা বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলে এসেছিলেন বলে ধারনা করা হয়। সিলেট আগমনের সময় কাল নিয়ে যদিও বিভিন্ন অভিমত রয়েছে; তদুপরি শাহজালালের সমাধির খাদিমগণের প্রাপ্ত পারসী ভাষার একটি ফলক লিপি হতে উল্লেখিত সন-তারিখই সঠিক বলে ধরা হয়। পারসী ভাষায় লিখিত ফলক লিপি বর্তমানে ঢাকা যাদুঘরে সংরক্ষিত আছে। সিলেটে তাঁর মাধ্যমেই ইসলামের বহুল প্রচার ঘটে। সিলেট বিজয়ের পরে শাহ জালালের সঙ্গী অনুসারীদের মধ্য হতে অনেক পীর দরবেশ এবং তাদের পরে তাদের বংশধরগণ সিলেট সহ বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বসবাস করেন। শাহজালাল ও তাঁর সফরসঙ্গী ৩৬০ জন আউলিয়ার সিলেট আগমন ইতিহাসের একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে সিলেটেই কবর দেয়া হয়। হযরত শাহজালাল (রহ.) ৭৪০ হিজরী এবং ১৩৪১ খিৃস্টাব্দে শাহাদাত বরণ করেন।

হযরত শাহজালালের দরগাহ

Image
হযরত শাহজালালের দরগাহ হয়রত শাহজালালের সমাধি সৌধ। শাহ জালালের দরগাহ , সিলেট শহরের একটি আধ্যাত্মিক স্থাপনা, যা মূলত ১৩০৩ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে আগত পাশ্চাত্যের ইসলাম ধর্মপ্রচারক শাহ জালালের বাসস্থান ও শেষ সমাধি। এই দরগাহ সিলেট শহরের উত্তর প্রান্তে একটি টিলার উপর অবস্থিত। কারো কারো মতে সিলেট ভূমির মুসলিম সভ্যতা ও ধর্মমত এই দরগাহকে কেন্দ্র করে প্রসার লাভ করেছে। শাহ জালালের লৌকিক ও অলৌকিক স্মৃতি বিজড়িত এই স্থান সিলেটের অন্যতম পূণ্য তীর্থ হিসেবে পরিচিত। ] ঐতিহাসিক অচ্যুৎচরণ চৌধুরী তত্ত্বনিধির মতে এই দরগাহ থেকে প্রেরিত শাহ জালালের সঙ্গী অনুসারীদের দ্বারা ঢাকা , ময়মনসিংহ , ত্রিপুরা , কুমিল্লা ও আসাম প্রভৃতি স্থানে মুসলিম সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের প্রচার ও প্রসার হয়েছে।বাংলাদেশ ও ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে বাৎসরিক উরস (স্থানীয় উচ্চারণ: উরুস) উপলক্ষে প্রতিবছর হাজার হাজার লোক এখানে এসে শাহ জালালের উপলক্ষ ধরে (অসিলা) স্রষ্টার কাছে ভক্তি নিবেদন ও কৃতজ্ঞতা জানান। দরগাহের ইতিহাস দরগাহ প্রধান ফটক সিলেট বিজয়ের পর দিল্লীর সুলতান শামসুদ্দীন ফিরোজ শাহ, শা

সেকালের নবাব একালের বংশধর

Image
সেকালের নবাব একালের বংশধর   সিরাজের মদিনা৻ পেছনে হাজার দুয়ারী প্রাসাদ অষ্টাদশ এবং উনবিংশ শতাব্দীর দীর্ঘ সময় জুড়ে ভারতের তিন নবাব ও সুলতানের নাম তৎকালীন কলকাতা ও বাংলার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত ছিল৷ ইতিহাসের কিছু সন্ধিক্ষণের কথিত সেই খলনায়ক বা নায়ক হিসাবে পরিচিত মীরজাফর, বা টিপু সুলতান ও ওয়াজেদ আলি শাহর বংশধররা আজও কলকাতা ও মুর্শিদাবাদ শহরে ছড়িয়ে আছেন৷ কিন্তু এই একবিংশ শতাব্দীতে পৌঁছে কেমন আছেন তাঁরা- তারই সন্ধানে সেকালের নবাব একালের বংশধর’- ছয় পর্বের ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে রয়েছে মীরজাফরের বংশধরদের কথা৻ ১৯৪৭ সালে ভারতে ইংরেজ শাসনের অবসান হলে একটি স্বাধীন প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক হিসাবে বহু নবাব পরিবারেই বংশধরদের নামের আগে নবাব উপাধি ঝরে পড়তে থাকে৷ আর সেই পরিবর্ত‡নর হাওয়ায় তাঁদের জীবনের চালচিত্রও বদলাতে থাকে৻ মীরজাফরের এক বংশধর, ড: সৈয়দ মহম্মদ রেজা আলি খান, এ প্রসঙ্গে বলছিলেন, ‘‘আমি শিক্ষক ছিলাম৷ আমার পরিবারে প্রথম আমি চাকরিতে এসেছি৷ আমার বাবাও নবাব হিসাবে পেনশন পেতেন মাসে আটশ টাকা৷ জমি, বাগান সবই ছিল৷ কিন্তু যুগ বদলে গেছে৷ জমিদারি শেষ হওয়ার পর এখন আয়

ঢাকা নওয়াব পরিবার

Image
ঢাকা নওয়াব পরিবার ঢাকা নওয়াব পরিবার ব্রিটিশ সরকারের নিকট থেকে নওয়াব উপাধি পেয়ে ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাজা পরিবার ‘ঢাকার নওয়াব পরিবার’ হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে। উনিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে পরবর্তী প্রায় এক শত বছর ধরে তাঁরা ছিলেন পূর্ব বাংলার সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবার। ঢাকার নওয়াব পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে কাশ্মীর থেকে বাংলায় আসেন।  উল্লেখ্য, তখন স্থল পথে বাংলাদেশের সঙ্গে কাশ্মীরের সম্পর্ক ছিল নিবিড়। কাশ্মীরে থাকাকালে খাজা পরিবারের প্রধান ছিলেন খাজা আবদুল হাকিম। মুগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহের (১৭১৯-১৭৩৯ খ্রি.) আমলে তিনি দেশ ত্যাগ করে দিল্লী চলে যান। ১৭৪০ খ্রি. নাদির শাহের দিল্লী লুণ্ঠনে বীতশ্রদ্ধ হয়ে খাজা আবদুল হাকিম সিলেটে অভিবাসন করেন এবং সেখানে ব্যবসা বাণিজ্য করে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। সিলেটে কালেক