নভেল করোনা ভাইরাস
২০১৯-এনকোভি - যা নভেল করোনা ভাইরাস নামে পরিচিত - সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমের শিরোনামে প্রাধান্য বিস্তার করেছে। এশিয়ার বিভিন্ন অংশ এবং এর বাইরেও দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এই ভাইরাস। সাধারণ সতর্কতা অবলম্বন করে আপনি এই ভাইরাসটির সংক্রমণ ও বিস্তারের ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন।
কতটা ভয়ংকর এই ভাইরাস?
শ্বাসতন্ত্রের অন্যান্য অসুস্থতার মতো নাক দিয়ে পানি পরা, গলা ব্যথা, কাশি এবং জ্বরসহ হালকা লক্ষণ সৃষ্টি করতে পারে এই ভাইরাস। কিছু মানুষের জন্য এই ভাইরাসের সংক্রমণ মারাত্মক হতে পারে। এর ফলে নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট এবং অর্গান বিপর্যয়ের মতো ঘটনাও ঘটতে পারে। খুব কম ক্ষেত্রেই এই রোগ মারাত্মক হয়। তবে, এই ভাইরাস সংক্রমণের ফলে বয়স্ক ও আগে থেকে অসুস্থ ব্যক্তিদের মারাত্মকভাবে অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
আমার কি মেডিক্যাল মাস্ক পরা উচিত?
করোনা ভাইরাসসহ অন্যান্য রোগের বিস্তার সীমিত পর্যায়ে রাখতে মেডিক্যল মাস্ক সাহায্য করে। তবে এটার ব্যবহারই এককভাবে সংক্রমণ বন্ধ করতে যথেষ্ঠ নয়। নিয়মিত হাত ধোয়া এবং সম্ভাব্য সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে মেলামেশা না করা এই ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি হ্রাস করার সর্বোত্তম উপায়।
শিশুরা কি ঝুঁকিতে?
যে কোন বয়সের মানুষই এই ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে। তবে একটি বিষয় লক্ষ্যণীয় যে, করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত শিশুদের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। প্রধানত: আগে থেকে অসুস্থ বয়স্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাস মারাত্মক হতে পারে।
তবে শহরাঞ্চলের দরিদ্র শিশুদের ক্ষেত্রে এই ভাইরাসের পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে। এসব প্রভাবের মধ্যে রয়েছে বিদ্যালয় বন্ধ থাকা, যা সম্প্রতি মঙ্গোলিয়ায় দেখা গেছে।
“এই করোনাভাইরাসটি ভয়াবহ গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে। এটি বন্ধ করার জন্য প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি। শিশুদের উপর এই ভাইরাসের প্রভাব বা এতে কতজন আক্রান্ত হতে পারে- সে সম্পর্কে আমরা বেশি কিছু জানি না। কিন্তু নিবিড় পর্যবেক্ষণ ও প্রতিরোধ এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে হয়। সময় আমাদের সাথে নেই।”
ইউনিসেফ নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর
ইউনিসেফ এক্ষেত্রে কি করছে?
নভেল করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকানোর ক্ষেত্রে চীনকে সহযোগিতা করতে প্রতিরোধক মাস্ক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য প্রতিরক্ষামূলক স্যুট নিয়ে ইউনিসেফের একটি চালান জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে চীনের সাংহাইয়ে পৌঁছেছে।
ছয় মেট্রিকটনের এই চালানটি কোপেনহেগেনে ইউনিসেফের বৈশ্বিক সরবরাহ হাব থেকে পাঠানো হয়েছে এবং এটি চীনের ইউহানে প্রেরণ করা হবে। আগামী দিনগুলিতে ইউনিসেফ আরও জরুরী সরবরাহ পাঠাবে।
করোনা ভাইরাস: স্বেচ্ছায় হাসপাতালে গেলে দেওয়া হবে অর্থ
চীনজুড়ে দ্রুত বাড়ছে নতুন করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা। ভাইরাসের সংক্রমণ রোধ করতে অভিনব উদ্যোগ নিয়েছে চীনের হুবেই প্রদেশের এক কাউন্টি। আক্রান্তরা স্বেচ্ছায় হাসপাতালে গেলে তাদের অর্থ পুরস্কার দেওয়ার ঘোষণা করা হয়েছে।
রোববার (৯ ফেব্রুয়ারি) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানায়।
চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়ে নতুন করোনা ভাইরাস। হুবেই প্রদেশেরই ফাংশিয়ান কাউন্টিতে এ ভাইরাস আক্রান্তদের খুঁজে বের করার জন্য অভিনব এক পদ্ধতি বের করেছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অসুস্থ অবস্থায় স্বেচ্ছায় হাসপাতালে রিপোর্ট করলে দেওয়া হবে পুরস্কার।
রোববার ওই কাউন্টির একটি নোটিস অনুযায়ী, জ্বর নিয়ে কেউ নিজে থেকে হাসপাতালে গেলে তাকে এক হাজার ইউয়ান (প্রায় ১২ হাজার টাকা) দেওয়া হবে। এছাড়া, কোনো কর্মকর্তা বা আগ্রহী ব্যক্তি যদি জ্বরসহ কাউকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন, তিনিও পাবেন পাঁচশ’ ইউয়ান (প্রায় ছয় হাজার টাকা)।
আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ অফার চলবে বলে জানানো হয়েছে ওই নোটিসে।
নতুন করোনা ভাইরাসে চীনের ৮১১ জনসহ বিশ্বজুড়ে ৮১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৭ হাজারেরও বেশি মানুষ।